কলকাতা: লোকসভা ভোট মিটেছে। একাধিক ইন্দ্রপতন। বাঘা বাঘা নেতারা পরাস্ত হয়েছেন। বহরমপুরে নিজের গড়ে হেরেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে পরাস্ত হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। মুর্শিদাবাদ থেকে হারতে হয়েছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকেও। অধীরবাবু হেরে যাওয়ায় মন খারাপ আইএসএফ চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকীর। রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর দিলীপ ঘোষের জেতা প্রয়োজন ছিল বলেই মনে করছেন তিনি। কিন্তু মহম্মদ সেলিম? সেলিমের জন্যও কি খারাপ লাগছে নওশাদের? সেই প্রশ্নে সরাসরি কোনও উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গেলেন আইএসএফ বিধায়ক।
নওশাদ সিদ্দিকীর কথায়, “অধীর চৌধুরীর হেরে যাওয়াটা খারাপ লাগছে। রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাঁরা প্রতিবাদ করেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কণ্ঠ অধীর চৌধুরী। হার-জিত রাজনীতির ময়দানে আছে। কিন্তু তিনি যেন রাজনীতি না ছাড়েন। তিনি যেন আরও বলিষ্ঠ কণ্ঠ হয়ে ওঠেন, সেটাই আশা করব।” কিন্তু সেলিমের হারেও কি একইরকম মন খারাপ? আইএসএফ চেয়ারম্যানের বক্তব্য, “সেলিম সাহেবদের গোটা টিম লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের সেই অর্থে মুখ কোথায়!”
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংযুক্ত মোর্চা গঠন করে ভোটের ময়দানে নেমেছিল বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ। ভোটের পর কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফের সম্পর্ক ক্রমেই তলানির দিকে যেতে শুরু করেছিল। এমনকী অধীর চৌধুরী নিজেও একাধিকবার খোঁচা দিয়েছিলেন আইএসএফ শিবিরকে। এরপরও চব্বিশের নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার প্রতিফলন দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে চর্চা হয়েছে বিস্তর। কিন্তু লোকসভার মহারণের আগে দফায় দফায় বৈঠকের পরও আইএসএফের সঙ্গে বামেদের বোঝাপড়া হয়নি। একলা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নওশাদরা।
এবার লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যে অধীর আইএসএফ-কে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করেছিলেন, সেই অধীরের হারেই নিজের খারাপ লাগার কথা জানালেন নওশাদ। এমনকী দিলীপের হার নিয়েও কথা বললেন নওশাদ। তাঁর কথায়, “দিলীপ ঘোষ আমার থেকে সম্পূর্ণ উল্টো দিকের রাজনীতিবিদ। তিনি অনেক কথা বলেন, যেগুলি গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এমনও কিছু কথা আছে, যেগুলির বাস্তবের সঙ্গে মিল রয়েছে। শুধু দিলীপ ঘোষ নয়, যাঁরাই হেভিওয়েট নেতা, তাঁদের জেতা অবশ্যই দরকার ছিল।” অধীর-দিলীপের হার নিয়ে কথা বললেও সেলিমের হার নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য এড়িয়ে যেতে দেখা গেল আইএসএফ বিধায়ককে।