‘ওঁরা বিজেপির ক্যাডার’, বদলির প্রতিবাদে বিষ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষিকাদের তোপ শিক্ষামন্ত্রীর

Kolkata: শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, সহায়ক সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩৩৯০ টাকা করা হয়েছে।

'ওঁরা বিজেপির ক্যাডার', বদলির প্রতিবাদে বিষ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষিকাদের তোপ শিক্ষামন্ত্রীর
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 25, 2021 | 1:54 PM

কলকাতা: তাঁরা প্রত্যেকেই এখন হাসপাতালের বেডে। আরজিকরে চিকিৎসাধীন তিন জনের মধ্যে একজনের বিষ পাকস্থলিতে চলে গিয়েছিল। তাঁকে আইসিইউয়ে রেখে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাকি দু’জন মেডিসিন ওয়ার্ডে রয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সেই পাঁচ শিক্ষিকাকে বিজেপি ক্যাডার বলে তোপ দাগলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই ঘটনা অনভিপ্রেত বলে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করেছেন তিনি।

অন্যায়ভাবে বদলির প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষিকারা। বদলির অস্বচ্ছতার দাবি তুলে রাস্তায় নামে শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। বিকাশ ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েই সেই বিক্ষোভ। তারপর তাঁরা মুখে কিছু ঢেলে দেন। এরপর মুখ দিয়ে গ্যাজলা বেরোতে থাকেন। যে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে তাঁদের বিক্ষোভ, সেই ব্রাত্য বসুই তাঁদের বিজেপির ক্যাডার বলে তোপ দাগলেন।

শিক্ষামন্ত্রী ফেসবুকে দাবি করেন, ” বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে এসএসকে এবং এমএসকে-র সহায়ক-সহায়িকা, সম্প্রসারক-সম্প্রসারিকরা নামমাত্র সাম্মানিকের বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা বলে কিছু ছিল না। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনে তাঁদের একটি সুসংবদ্ধ রূপ দেয়।”

শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, সহায়ক সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩৩৯০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও বাৎসরিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে।

তাঁদের প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, যাঁরা ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তাঁদের অবসরের সময়ে প্রত্যেকের জন্য ৩ লক্ষ টাকা এককালীন অবসর-ভাতা চালু করা হয়েছে।

শিক্ষিকাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেককের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত-সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ বা ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকে এই সব তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। তারপরই বলেন, “এত কিছুর পরও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।”

শিক্ষিকাদের বিষ পানের ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধীরা এক সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী টুইটে লিখেছেন, “আজ বিকাশভবনের সামনে ৫ জন এসএসকে-এমএসকে শিক্ষিকা নিজেদের বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বদলির প্রতিবাদে বিষ পান করেছেন। তাঁরা যে সামান্য টাকা মাসোহারা পান, তাতে তাঁদের আলাদা থাকার জায়গা জোগাড় করা সম্ভব নয়। প্রতিহিংসাপরায়ণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার শাস্তিমূলক বদলিকে নতুন অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছে।” অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে বলবো, বিকাশ ভবনের সামনে শিক্ষিকাদের আত্মহত্যার চেষ্টা সারা বাংলাকে লজ্জিত ও কলঙ্কিত করছে। আপনার সরাসরি হস্তক্ষেপ দাবি করছি বিষয়টি দেখার জন্য ও সমাধানের জন্য।” আরও পড়ুন: পাঁচ শিক্ষিকার ‘বিষপান’, একাধিক ধারায় মামলা রুজু করল বিধাননগর উত্তর পুলিশ