বাঙালিরা কথায় কথায় ভেলোর ছোটেন কেন? সিএমসি-র বিলস্বরূপ ‘আয়না’ তুলে ধরল স্বাস্থ্য কমিশন

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঋদ্ধীশ দত্ত

Sep 07, 2021 | 11:31 AM

শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সামনে আয়না তুলে ধরতে তাদেরকে ভেলোর হাসপাতালে বিল দেখানো হয়েছে বলে খবর।

বাঙালিরা কথায় কথায় ভেলোর ছোটেন কেন? সিএমসি-র বিলস্বরূপ আয়না তুলে ধরল স্বাস্থ্য কমিশন
ভেলোর সিএমসি

Follow Us

কলকাতা: রাজ্যে হাসপাতাল, বা উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অভাব নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঝাঁকে ঝাঁকে বাঙালি রোগীরা সপরিবারে ছোটেন দাক্ষিণাত্যে। কেন? এই প্রশ্নের হাতে গরম উত্তর পেয়ে গেল স্বাস্থ্য ভবন। একই চিকিৎসায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল এবং ভোলোরের হাসপাতালের বিলের তূল্যমূল্য বিচার করা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, কলকাতার হাসাপাতালে যে চিকিৎসা করতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। সেই একই চিকিৎসায় ভেলোরের হাসপাতালে খরচ হয়েছে মাত্র ১ লক্ষ টাকার কিছু বেশি।

এখানেই শেষ নয়। কলকাতায় চিকিৎসার পর যে ব্যক্তির পা বাদ যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, সেই একই ব্যক্তি ভেলোরে চিকিৎসা করিয়ে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এই ঘটনাকে সামনে রেখে শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সামনে আয়না তুলে ধরতে তাদেরকে ভেলোর হাসপাতালে বিল দেখানো হয়েছে বলে খবর।

ফর্টিস হাসপাতালের একটি ঘটনাকে সামনে রেখে সোমবার কমিশনের চেয়ারম্যানের পর্যবেক্ষণ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কার্যত আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বাইক দুর্ঘটনায় আহত বিকাশ মণ্ডল গত ১৭ জানুয়ারি থেকে আনন্দপুর ফর্টিসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিকাশবাবুর দশ দিনে বিল হয়েছিল ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার পরে রোগীর পা বাদ যেতে পারে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। এ কথা শোনার পরে সিএমসি ভেলোরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিকাশ।

ঘটনাচক্রে, পা তো বাদ দিতে হয়ইনি। সেখানে দশ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে সুস্থ হয়ে ব্যারাকপুরের বাড়িতে ফিরেছেন বিকাশবাবু। দশ দিনে বিল হয় ১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। এই ঘটনার উদাহরণ টেনে চেয়ারম্যানের মন্তব্য, ভাল চিকিৎসক-সহ পরিষেবা থাকা সত্ত্বেও প্রতি বছর রাজ্যের প্রচুর সংখ্যক মানুষ এ জন্য‌ই দক্ষিণে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন। রাজ্যের কর্পোরেট হাসপাতালগুলিকে ভেলোরের হাসপাতালের বিলের কপি পাঠিয়ে নিজেদের সংশোধন করতে বলা হবে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। অর্থাৎ, স্বাস্থ্য কমিশন সাফ করে দিয়েছে যে রোগ সারাতে রোগীদের দাক্ষিণাত্য অভিযানের জন্য দায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলিই।

এভাবে চলতে থাকলে যে রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলি নিজেরাই নিজেদের কবর খুঁড়বে, সেই কথা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় স্বীকার করে নিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া। তবে গোটা দেশের অন্যান্য প্রান্তে কী ধরনের খরচ হয়, সেটাও তুলনা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি। সেটা না হলে বিভ্রান্ত হয়েই বাংলার রোগীরা অন্য রাজ্যে চলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

অন্যদিকে, গোটা ঘটনা সম্পর্কে ফর্টিস হাসপাতালের বক্তব্য, রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত ডান পা এবং গোড়ালি সেরেই উঠেছিল। তবুও পরিজনেরা রোগীকে দক্ষিণের চ্যারিটেবল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাই তাদের কিছু করার ছিল না। আরও পড়ুন: ঘরে ছিল কোন ‘গুপ্তধন’? লুঠে বাধা পেয়েই কি খুন? পর্ণশ্রীতে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যুতে বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা

 

Next Article