কলকাতা: আরজিকর (R G Kar Hospital) হাসপাতালের অচলাবস্থা জারি। এখনও অনশনে রয়েছেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। স্বচ্ছ স্টুডেন্ট কাউন্সিলের দাবিতে অনড় পড়ুয়ারা। ১৫৬ ঘণ্টা ধরে অনশন জারি মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীরা। পড়ুয়াদের অনশনে সাময়িক বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা। প্রিন্সিপ্যালের পদত্যাগের দাবিতে অনশনে পড়ুয়ারা।
পরিকাঠামোগত উন্নয়ন-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলন দেখাতে থাকেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ, শনিবার আন্দোলনের সময়ই অধ্যক্ষ তাঁদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন। এই তথ্যের সত্যতা প্রকাশ করতে একটি ভিডিয়ো সামনে আনেন পড়ুয়ারা। শনিবার তা নিয়ে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর।
শনিবার রাতে হাসপাতালে নিজের ঘরে ছিলেন অধ্যক্ষ। রাতপর থেকে নাটকীয়ভাবে শুরু হয় আন্দোলন। একাধিক দাবি-দাওয়াকে কেন্দ্র করে অগস্ট মাসেও একবার অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেছিল ডাক্তারি পড়ুয়ারা। সেই সময় কোনও মতে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা পড়লেও সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে আবার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ হাসপাতালে শুরু হয়। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত পোস্টার দেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে পড়া সেই পোস্টারগুলি খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন এমএসভিপি।
উপাধ্যক্ষ সঞ্জয় বশিষ্ঠকেও ঘেরাও করা হয়েছিল সেবার। এমনকি, সুপারকে তালা বন্ধ করে রেখে দেওয়া বলেও খবর আসে। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ সুপার বা অধ্যক্ষের কোনও বয়ান এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, এর আগে উদ্ভুত পরিস্থিতির জেরে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের কাছে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ।
যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বক্তব্য ছিল, এমএসভিপি তাঁদের কথা না শুনে নিজেকে তালাবন্দি করে রাখেন। উল্টোদিকে ছাত্ররাও বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে ঘরের বাইরে বসে পড়েন। চিকিৎসক পড়ুয়াদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ স্বৈরাচারী মনোভাব দেখাচ্ছেন।
১২ দফা দাবিতে চলা আন্দোলনে হস্টেল সমস্যার বিষয় যেমন রয়েছে, তেমনই আছে চিকিৎসক পড়ুয়াদের হেপাটাইটিস বি টিকাকরণ না হওয়া, কলেজ চত্বরে ছাত্র-ছাত্রীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং সর্বোপরি হস্টেল কমিটি গঠন নিয়ে চিকিৎসক পড়ুয়াদের অসন্তোষ রয়েছে।
শনিবার রাতে বেনজির ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে টানাপোড়েন। উর্ধ্বশ্বাসে হাঁটছিলেন অধ্যক্ষ। পিছনে স্লোগান দিতে দিতে দৌঁড়াচ্ছিলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। আন্দোলনরত ছাত্রদের থেকে বাঁচতে রাজা বীরেন্দ্র স্ট্রিটে ঢুকে পড়েন অধ্যক্ষ। পড়ুয়ারা পৌঁছে যান সেখানেও। অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে উল্টোডাঙা ট্রাফিক গার্ড। নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকে আরজি কর হাসপাতাল।
এখনও জারি পড়ুয়াদের অনশন। ১৫৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন পড়ুয়ারা। স্বচ্ছ স্টুডেন্ট কাউন্সিলের দাবিতেও অনড়। প্রিন্সিপ্যালের পদত্যাগের দাবি আরও জোরাল হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Khardah By Poll 2021: খড়দহে বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে ভাঙচুর, খুনের চেষ্টার অভিযোগ