কলকাতা: এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড়। ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে এখনও ২৯টি কেন্দ্রে তৃণমূল জয়ী বা এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি জিতেছে ১২টি কেন্দ্রে। ১টিতে কংগ্রেস জিতেছে। অথচ এ রাজ্যে বিজেপির দিল্লি নেতৃত্ব এসে প্রথমে ৩৫, পরে ৩০-এর লক্ষ্যমাত্রা বেধে দিয়ে গিয়েছিল। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বও বিভিন্ন মিটিং মিছিলে বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা অনায়াসে এই আসন জিতে নেবে। তবে খেলা ঘুরিয়ে দিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ” বাংলার মানুষ বাংলার মেয়েকে সম্মান দিয়েছে আমি সম্মানিত। বাংলার মানুষকে আমি ধন্যবাদ জানাব।” কিন্তু কোন অঙ্কে ঘুরল এই খেলা? ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল ২২টি আসন জিতেছিল। বিজেপি জেতে ১৮, কংগ্রেস ২টি। কিন্তু এবার আরও অনেক বেশি আসন তৃণমূলের দখলে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
কোন মন্ত্রে ঘুরল এই খেলা? সিংহভাগ মানুষেরই মত, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প একটা আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। বিজেপির নেতারা এই প্রকল্পের ৫০০ কিংবা হাজার টাকাকে নস্যির সমান মনে করলেও, বাংলার বহু মহিলার কাছে এই টাকাই জীবনের ‘প্রথম রোজগার’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তৃণমূল-বিরোধিতায় এই ৫০০ টাকাকে ‘হাতিয়ার’ করেন অনেক নেটিজেনও। তবে এসব বোধহয় খুব একটা প্রভাব ফেলল না ভোটে। বরং ভোটের মুখে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার ‘ডিভিডেন্ড’ ধরে তুলল তৃণমূল।
দুর্নীতি-নো এফেক্ট
শিক্ষা থেকে পুরনিয়োগ, একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমান শাসকদলকে বিদ্ধ করে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। কিন্তু জোরাল আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে এসব নিয়ে হইচই হলেও ভোটারদের মধ্যে তা খুব বেশি ছাপ ফেলেছে বলে ভোটের ফল তা বলছে না।
ভোটে দাগ কাটতে ব্যর্থ সন্দেশখালি
সেই জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে। যত ভোট এগিয়েছে, বিজেপি থেকে শুরু করে সিপিএম, কংগ্রেস সন্দেশখালিকে কার্যত ভোটের ইস্যুতে রূপান্তরিত করেছে। তবে যে লোকসভার মধ্যে এই সন্দেশখালি, সেই বসিরহাটেই দাগ কাটতে পারেনি এই সন্দেশখালি।
তৃণমূল বিরোধিতা
অনেকে বলছেন, বিরোধিতার নামে যদি অন্ধ বিরোধিতা হতে শুরু করে তা হলে জনমানসে খুব একটা সদর্থক প্রভাব ফেলে না।
সংখ্যালঘু ভোট
অনেকে মনে করেছিল বাম-কংগ্রেস একজোট হয়ে ভোট কাটাকুটি খেলা খেলে দেবে। বিশেষ করে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাবে। কিন্তু সংখ্যালঘু ভোটে তারা থাবা বসাতে পারেনি। আইএসএফও সংখ্য়ালঘু ভোটে তেমন প্রভাব বসাতে পারেনি। ফলে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের সিংহভাগটাই তৃণমূলের সঙ্গে থেকে গিয়েছে।