AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘আমি মরে গেলে তাঁরা জায়গা নেবে’, মমতার কথায় বক্সীর চোখে জল

আবেগের বিস্ফোরণ ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলে উঠলেন, “কেউ কেউ চাইছে আমি মরে যাই।“ মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা শুনে ডুকরে কেঁদে ওঠেন সুব্রত বক্সী। বলেন, “আপনি বেঁচে থাকুন, তাহলেই বাংলা সুরক্ষিত থাকবে।“

'আমি মরে গেলে তাঁরা জায়গা নেবে', মমতার কথায় বক্সীর চোখে জল
| Updated on: Dec 04, 2020 | 11:40 PM
Share

কলকাতা: তৃণমূলের একদা একনিষ্ঠ সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) দল ছাড়ছেন। জোর গুঞ্জন চলছে রাজনৈতিক মহলে। এমন একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক সভায় আবেগের বিস্ফোরণ ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলে উঠলেন, “কেউ কেউ চাইছে আমি মরে যাই।“ মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা শুনে ডুকরে কেঁদে ওঠেন সুব্রত বক্সী। বলেন, “আপনি বেঁচে থাকুন, তাহলেই বাংলা সুরক্ষিত থাকবে।“

তৃণমূল কংগ্রেসের আন্দোলনের পথ ধরে উত্থানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নাম নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে কখনই শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা ছোট করে দেখা সম্ভব না। সেই শুভেন্দুর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে তিনি এখন দল ছাড়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সমালোচকেরা বলছেন, দল শুভেন্দুকে যতটা দায়িত্ব বা পদ দিয়েছিল, তাঁর প্রত্যাশা সেটার চেয়ে অনেক বেশি। নিজের যোগ্য সম্মান পাননি বলেই তিনি মনে করেন। সেই কারণে তৃণমূল ত্যাগ করার পথে হাঁটছেন পূর্ব মেদিনীপুরের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। শাসক দলের কেউ এই ধরনের দাবিতে সিলমোহর না দিলেও কিছু মানুষ যে তাঁর কুর্সিতে দখল নিতে চাইছে তা এদিন রাখঢাক না রেখেই বলে ফেলেন মমতা। কথাগুলো বলতে গিয়ে ভারী হয়ে আসে মুখ্যমন্ত্রীর গলা। আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি।

মমতা বলেন, “কেউ কেউ আছে যারা চাইছে আমি মরে যাই। আমি মরে গেলে তাঁরা আমার জায়গা নেবে।“ খোদ দলনেত্রীর মুখে এহেন কথা শুনে নিজের চোখের জল আটকাতে পারেননি তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি সুব্রত বক্সী। তিনি কেঁদে ওঠেন। বলেন, আপনি বেঁচে থাকুন। তাহলেই বাংলা সুরক্ষিত থাকবে।

আরও পড়ুন: ‘অধিকারী এফেক্ট’? পূর্ব মেদিনীপুরের এসপিকে বদলি করল নবান্ন!

রাজনৈতিক মহলের অনুমান ছিল, শুভেন্দুকে নিয়ে আজকেই এসপার-ওসপার করতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। সেরকম কোনও পদক্ষেপ আশা করা হচ্ছিল তাঁর কাছ থেকে। তবে এদিনের বৈঠকে একবারও রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রীর নাম নেননি মমতা। শুধু আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন, কতটা আঘাত পেয়েছেন তিনি। মমতার কথায়, “অহংকার পতনের মূল কারণ। ট্রাম্পেরও অহংকার হয়েছিল।“ তাঁর আরও দাবি, আমি পাঁচ প্রজন্ম তৈরি করে রেখেছি।

সরাসরি শুভেন্দু প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হলদিয়া, নন্দকুমার এবং নন্দীগ্রামের ৩ ব্লক সভাপতিকে এদিন সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, নাম নিয়ে শুভেন্দুকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে এদিনের বৈঠকে দলীয় অনুশাসন মেনে হাজির ছিলেন শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী। বৈঠক থেকে আগামী সময়ে নির্বাচনের আগে এক কোটি মানুষের বাড়িতে পৌঁছতে ‘বঙ্গধ্বনি অভিযান’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: এই ৯ মুখ একুশের নির্বাচনের হিসেব বদলে দিতে পারে

বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম না-করলেও নন্দীগ্রামের বিধায়ক এবং তাঁর দিকে ঝুঁকে থাকা নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট বার্তা দেন মমতা। তিনি বলেছেন, “যারা সাহস করে আমার সঙ্গে থাকতে চান থাকুন। নইলে লুটেরাদের সঙ্গে চলে যান। দলে থেকে কোনও দলবিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবে না।” বৈঠকে নেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুরের নানা জায়গায় দল বিরোধী কাজ হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি।” দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ, কেউ দলে থেকে দলের বিরোধিতা করলে সেই ব্যক্তিকে পদ বা দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।