কলকাতা: ১৯৯২ সাল। তখনও তৃণমূল কংগ্রেস দলটা গঠিত হয়নি। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন যুব কংগ্রেসের নেত্রী। ব্রিগেডের সভায় ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজিয়েছিলেন তিনি। বাম শাসনের প্রতীকী ‘মৃত্যুঘণ্টা’। তারও প্রায় ১৯ বছর বাদে বাম শাসনের অবসান হয় বাংলায়। ৩২ বছর পর কলকাতার রাজপথে দাঁড়িয়ে আবারও ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজালেন তিনি। এবারও নেপথ্যে সেই পরেশ পাল।
আজ সোমবার বৃষ্টিভেজা রাস্তা ধরে রোড শো করেন মমতা। উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সভায় বক্তব্য রাখার পর বেলেঘাটা গান্ধীমূর্তি থেকে হাঁটা শুরু করেন মমতা। শুরুতেই বাজান ‘মৃত্যুঘণ্টা’। এবার তাঁর এই প্রতীকী মৃত্যুঘণ্টা বিজেপির জন্য। ঘণ্টার গায়ে বিজেপি লিখে সেই বার্তাই দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ৩২ বছর আগে ব্রিগেড থেকে মমতা যে ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজিয়েছিলেন, তা তৈরি করে নিয়ে গিয়েছিলেন এই পরেশ পাল। তারপর সময় গড়িয়েছে। ২৪-এর নির্বাচনী আবহে আবারও সামনে এলে সেই ‘মৃত্যুঘণ্টা’। এদিন পরেশ পালের এলাকায়, তাঁরই উদ্যোগে ‘মৃত্যুঘণ্টা’টি তৈরি করা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে সুদীপের প্রচারে গিয়েই স্বর্ণকমল সাহা ও পরেশ পালের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় মমতার। তখনই ৩২ বছর আগের ‘মৃত্যুঘণ্টা’র প্রসঙ্গ উঠে আসে। এরপরই দলের তরফে পরেশকে ‘মৃত্যুঘণ্টা’ তৈরির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে এই ঘটনায় আরও একটি প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে, পরেশকে দিয়ে ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বানিয়ে কোন বার্তা দিতে চাইলেন মমতা? কান পাতলে শোনা যায়, সুদীপের সঙ্গে পরেশ গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেই কারণেই কি পরেশকে বার্তা দিতে চাইলেন মমতা? বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপির ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজাতে গেলে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে?
বিজেপি বিধায়ক তথা দলীয় মুখপাত্র শঙ্কর ঘোষ বলেন, ” উনি রাজ্যটাকে শ্মশানে পরিণত করেছেন। মানুষ তৃণমূলের অপশাসনের অবসান ঘটাতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা বুঝেছেন বলেই নিজের হাতে মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন।”