Mamata Banerjee: ‘জানিয়ে জল ছেড়েছে DVC’, মেনে নিয়েও মোদীকে পত্রাঘাত মমতার, এবার কোন বাণ ছাড়লেন?
Mamata Banerjee: বানভাসি এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বৃহস্পতিবার উদয়নারায়ণপুরে দাঁড়িয়ে মুখ্য়মন্ত্রী দাবি করেছিলেন, DVC ৪ লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছেড়েছে। এত জল এর আগে কখনও ছাড়েনি। কিন্তু দ্বিতীয় চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, আদতে সর্বোচ্চ ২.৫ কিউসেক হারে জল ছেড়েছিল ডিভিসি। আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার কথা আগেই বলেছিল DVC।
কলকাতা: বাংলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য DVC-কে দুষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠি দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রের তরফে জলশক্তি মন্ত্রক দিয়েছে পাল্টা চিঠি। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার, আবারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছেড়েছিল DVC। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, বাংলাকে জানিয়েই জল ছাড়া হয়। এবার দ্বিতীয় চিঠিতে উল্লেখ করা হল, ‘মাত্র সাড়ে ৩ ঘণ্টার নোটিসে’ জল ছাড়া হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্য সরকারকে জানিয়েই জল ছাড়া হয়েছে, তা স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, বানভাসি এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বৃহস্পতিবার উদয়নারায়ণপুরে দাঁড়িয়ে মুখ্য়মন্ত্রী দাবি করেছিলেন, DVC ৪ লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছেড়েছে। এত জল এর আগে কখনও ছাড়েনি। কিন্তু দ্বিতীয় চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, আদতে সর্বোচ্চ ২.৫ কিউসেক হারে জল ছেড়েছিল ডিভিসি। আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার কথা আগেই বলেছিল DVC।
ডিভিসির কমিটি থেকে রাজ্য সরকারি প্রতিনিধি তুলে নেওয়ার কথা চিঠিতে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে এটাও স্পষ্ট হচ্ছে, ডিভিসির রেগুলেশন কমিটিতে রাজ্য সরকারি প্রতিনিধি ছিলেন। যে কমিটি জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই অভিযোগ করেছিলেন, DVC-র চেয়ারম্যানকে ফোন করে তিনি নিজে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তা শোনা হয়নি। সেই বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। পাঞ্চেত, মাইথনে সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত জল ধরা হয়নি বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের এই ভিন্ন মত নিয়ে ইতিমধ্য়েই রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সামগ্রিকভাবে নিজের দায় ঝেড়ে ফেলে কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপাতেই DVC-কে দোষ দিচ্ছে। তিনিও যখন ঘণ্টার হিসাব দিয়েছেন, আমিও দেব। যখন সবুজ সঙ্কেত, তখন সব স্বাভাবিক থাকে, যখন কমলা হয়, পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়, আর লাল মানে জল ছাড়া হবে। জল যখন ছাড়ার পরিস্থিতি, জল ছাড়তেই হবে, উপায় কী!”
তবে জল DVC থেকে ছাড়ার পর প্লাবিত এলাকায় পৌঁছতে কতক্ষণ সময় লাগে, তা একটা স্পষ্ট হিসাব দিয়ে দেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ৩ ঘণ্টার নোটিসে জল ছাড়া হয়েছে। তবে আমি এটা স্পষ্ট করে দিতে চাই, পাঞ্চেত কিংবা মাইথন থেকে জল ছাড়ার পর সেই জল দুর্গাপুর ব্যারেজে আসতে সময় লাগে ১১-১২ ঘণ্টা। DVC আবার যখন জল ছাড়ে, তখন বাংলার সেচ দফতরের ইয়ারমার্ক চাপাডাঙার কাছে পৌঁছতে সময় লাগে ২৬ ঘণ্টা। আর চাপাডাঙা থেকে যেখানে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়, সেই উদনারায়ণপুর, আমতায় জল আসতে সময় লাগে আরও ৭-৮ ঘণ্টা। সব মিলিয়ে দেখা যায়, পাঞ্চেত কিংবা মাইথন থেকে জল ছাড়ার পর প্লাবিত এলাকায় এসে পৌঁছয় ৪৬-৪৮ ঘণ্টা লাগে। এটা রাজ্য সেচ দফতরের মাপা হিসাব।”