কলকাতা : স্বাস্থ্য ভবনের বুলেটিন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজারের বেশি মানুষ। আর শুধুমাত্র কলকাতাতেই আক্রান্ত প্রায় ৫০ শতাংশ। মহানগরের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃহস্পতিবারেই হাজার পার করেছে। এই অবস্থায় আর ঝুঁকি নিচ্ছে না প্রশাসন। দ্রুত শুরু হচ্ছে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরির কাজ। যে সব অঞ্চলে অন্তত ৫ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেই জায়গাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার বৈঠক বসে কলকাতা পুরনিগমে। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ দিন কলকাতা পুরনিগমে বৈঠকে বসেন, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। বৈঠকে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতর ও কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরাও। প্রাথমিক ভাবে শহরের ১৭ টি জায়গাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বৈঠকে, যেখানে ৫ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। মূলত দৈনিক সংক্রমণ ও ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। কলকাতার কোন কোন ওয়ার্ডে বা বোরোতে করোনা সংক্রমণ বেশি, তা নিয়ে আলোচনা হয় এ দিনের বৈঠকে।
কলকাতা পুরসভার বৈঠকে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে জানা গিয়েছে, শহরে মোট ৯০ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছেন। সেই টিকাপ্রাপ্তদের ৮০ শতাংশের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবারই কলতাকা পুরসভার কাউন্সিলর তথা বোরো ১০-এর চেয়ারপার্সন জুঁই বিশ্বাস ফেসবুক পোস্টে সতর্কবার্তা দেন। তিনি জানান, বোরো দশেই সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা অন্তত ৪৫০। তাই সবাইকে কোভিড আচরণ বিধি মেনে চলার কথা বলেন তিনি। সূত্রের খবর, ওই বোরোতে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়।
স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ্য, কত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আর কত নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে, ৬ জনের নমুনা পাঠানোর পর ৫ জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তা থেকেই বিশেষজ্ঞদের অনুমান, কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত স্পষ্ট। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ধীরে ধীরে সরিয়ে ওমিক্রন তার থাবা বসাচ্ছে। কলকাতায় টেস্ট ও পজিটিভিটি রেটও সমান হারে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ওমিক্রন আক্রান্ত ১৬।
বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কলকাতায় ওমিক্রন সংক্রমণ চিহ্নিত করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরি করা হবে।
ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন বা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন কেউ থাকলে সেই এলাকাকে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কনট্যাক্ট ট্রেসিং বা সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওমিক্রন সন্দেহভাজনেরা ফোন না ধরলে প্রয়োজনে বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তি হোম আইসোলেশন ঠিকভাবে মানছেন কি না তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। প্রয়োজনে জিও ট্যাগিংয়ের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা।
আরও পড়ুন : Dr. R Ahmed Dental College: ১৩ থেকে রাতারাতি ২১! আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে ঝড়ের গতিতে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণ