TMC-BJP Sets Meme Fight: দেওয়াল নেই, তাই ভরছে ফেসবুকের ওয়াল! মোদী-মমতা-সেলিমদের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ এখন শুধুই Meme?
Internet Memes as Political Tools: কেউ কেউ বলছেন, লেখনীতেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। এই যেমন ১০ বছর আগেও প্রচারকাজে হোক বা ব্যঙ্গ করার কাজে, রাজনৈতিক লেখনী মানেই তাতে থাকবে ধার। কিন্তু এখন সেই ধার আর দেখা যায় না। খোঁচা রয়েছে, তবে অনেকটাই ব্যক্তিগত আক্রমণ। আর এই গোটা ব্যাপারটাতেই রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গী হয়েছে মিম।

- মোদী তুমি দুষ্টু লোক, তোমার মাথায় উকুন হোক।
- মিথ্যে বলছে মমতা, জেনে গেছে জনতা।
- ফুল বদলে লাভ কী? মুখ গুলো সব একই।
প্রথমটা তৃণমূলের। দ্বিতীয়টা বিজেপির। আর তৃতীয়টা সিপিএম-এর। এগুলো সবই দেওয়াল লিখন। ছোটো ছোটো ছড়া। তাতে ছন্দ আছে, মজা আছে আর আছে রাজনীতি। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে একবার থমকে যেতে হয়, তাই না! সে সময় ভোট এলেই দেওয়াল কার, এ নিয়ে শুরু হয়ে যেত আকচাআকচি। আজ সেই ছবি অনেকটাই ফিকে। এখনও আকচাআকচি হয়, তবে ইট-সিমেন্টের দেওয়ালে নয়, ফেসবুক দেওয়ালে। যার পোশাকি নাম মিম। যত খুশি লেখ, যা খুশি লেখ। আর লিখলেই কমেন্টের বন্যা। এক দম হাতে গরম রিয়াকশন। এই সুযোগ কি রাজনীতিবিদরা ছাড়েন! ছাব্বিশের নির্বাচনে এই দৃশ্য যে আরও প্রকট হচ্ছে, বলার অপেক্ষা রাখে না।
এখন প্রশ্ন সেই মিম কি দেওয়াল লিখনের জায়গা নিতে পারল? একটা সময় দেওয়াল লিখন ছিল রাজনীতির সাহিত্য। প্রতিবাদের সহজ ভাষা। যেমন ধার, তার তেমন সৃজনশীলতা। দেওয়াল লিখন রাজনৈতিক দলের রুচিবোধের পরিচয় দিত। কিন্তু মিমের থোড়াই কেয়ার। শক্তি চাট্টুজ্জের ভাষায় নয় একেবারে কেষ্টর ভাষায় চড়াম চড়াম কথা। শত্রুপক্ষের একদম বুকে তির বিঁধতে হবে। তাতে ব্যক্তি আক্রমণ হলেও যেন ওতটা দোষের নয়। এটাই এখন দস্তুর।
তবে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ মিমকে একটা ভারী হাতিয়ার হিসাবে দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘এটা দু’মুখো ধারালো তরবারি। যদি সুস্থ রুচি ও লিখন দিয়ে জনসাধারণের কাছে পৌঁছনো গেলে, তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কেউ বিকৃত আচরণ বা কুৎসিত মন্তব্য করলে সেটি অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ডিজিটাল প্রচারে এককালে মোদী ছিলেন ‘ফার্স্ট বয়’। বঙ্গ বিজেপি, তাঁরা পিছিয়ে নেই তো? বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার ইনচার্জ সপ্তর্ষী রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘গত কয়েক বছর ধরে দেখা গিয়েছে রাজ্যের দেওয়ালগুলি শাসকদলের দখলে। আর যেগুলি ফাঁকা, তাতে তাঁদের মালিকের আপত্তি। ফলত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে লিখন-মিম-রিলস আমরাও করে থাকি। শাসকদলের দুর্নীতি তুলে ধরতে সুবিধা হয়।’
মিম, ইন্টারনেট, সব শেষে রাজনৈতিক লিখন, বামেরা কি উহ্য় থাকতে পারে? বিধানসভায় তাঁদের কণ্ঠ ‘শব্দ-শূন্য’, কিন্তু সমাজমাধ্যম নয়। সেখানে তো ‘লাল-ঝড়’। মিমের দুনিয়া হোক বা রাজনৈতিক প্রচার। এমনকি, সাম্প্রতিককালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বার্তা। সবই নজর কেড়েছে সাধারণের। তাই ময়দানের চেয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় যেন তাঁদের একটু বেশি প্রিয়, দাবি একাংশের। এদিন সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য কলতান দাশগুপ্ত বলেন, ‘অন্যান্য দল যখন বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে লোকবল রেখে এই প্রচার করছে, তখন সিপিএম একমাত্র দল যাঁরা প্রথম থেকে সাংগঠনিক ভাবে ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে গঠনমূলক সমালোচনা করে।’
