AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mount Everest: গণিতে দক্ষতা প্রশ্নাতীত, বাঙালি ‘কম্পিউটর’ রাধানাথের বদলে নাম হল এভারেস্টের!

Radhanath Sikdar: এভারেস্টের অবসরের পর 'গ্রেট ট্রিগনোমেট্রিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া'র দায়িত্বে আসেন কর্নেল অ্যান্ড্রু স্কট ওয়াহ। ১৮৫২ সালে রাধানাথ হিমালয়ের শৃঙ্গগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করছিলেন। আর সেখানেই তিনি বের করেন হিমালয়ের উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়।

Mount Everest: গণিতে দক্ষতা প্রশ্নাতীত, বাঙালি 'কম্পিউটর' রাধানাথের বদলে নাম হল এভারেস্টের!
Image Credit: PTI
| Updated on: Oct 14, 2025 | 12:10 AM
Share

“বাঙালী আপন দেশে ব’সে, এভারেস্টের গায়ে ফিতে না লাগিয়ে, চূড়োয় চড়তে গিয়ে খামখা জান না দিয়ে ইংরেজকে বাৎলে দেয়নি, ঐ দুনিয়ার সবচেয়ে উঁচু পাহাড়?” ― ভ্রমণ কাহিনী দেশে বিদেশেতে এই ভাবেই বাঙালির প্রশ্নাতীত দক্ষতার কথা তুলে ধরেছিলেন সৈয়দ মুজতবা আলী। কিন্তু এভারেস্টের গায়ে ফিতে না লাগিয়ে বাঙালি কীভাবে মাপল তার উচ্চতা? সালটা ১৮৫২। ব্রিটিশরা একটি শৃঙ্গকে ‘পিক ১৫’ বলে অভিহিত করতেন। ‘গ্রেট ট্রিগনোমেট্রিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র বাঙালি কর্মচারী রাধানাথ শিকদার করলেন এক অসাধ্য সাধন। ত্রিকোণমিতি ব্যবহার করে মেপে ফেললেন সেই ‘পিক ১৫’-এর উচ্চতা।

১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ সার্ভেয়ার জর্জ এভারেস্টের নামে নামকরণ করা হয় ওই ‘পিক ১৫’-এর। অথচ যিনি এই পর্বত শৃঙ্গের উচ্চতা মাপলেন তাঁর কপালে জুটল ‘কাঁচকলা’। লেখক জন কী (John Keay) তাঁর বই The Great Arc: The Dramatic Tale of How India Was Mapped and Everest Was Named-তে লিখছেন, ‘এভারেস্ট নন, রাধানাথই প্রথম বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গটিকে মানচিত্রে বসিয়েছিলেন’।

১৮১৩ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকোয় জন্ম হয় রাধানাথের। হিন্দু কলেজে তাঁর গাণিতিক প্রতিভা নজর কাড়ে সেখানের অধ্যাপক জন টাইটলারের। মাত্র ১৮ বছর বয়সে, ১৮৩১ সালে তিনি যোগ দেন জর্জ এভারেস্টের ‘গ্রেট ট্রিগনোমেট্রিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’-তে। তখন তাঁর মাসিক বেতন ছিল ৩০ টাকা।

এভারেস্টের অবসরের পর ‘গ্রেট ট্রিগনোমেট্রিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র দায়িত্বে আসেন কর্নেল অ্যান্ড্রু স্কট ওয়াহ। ১৮৫২ সালে রাধানাথ হিমালয়ের শৃঙ্গগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করছিলেন। আর সেখানেই তিনি বের করেন হিমালয়ের উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়। বরং ২৯ হাজার ফুট বা প্রায় ৮৮৩৯ মিটার উচ্চতার ‘পিক ১৫’-ই আসলে হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

পরবর্তীতে ১৮৫৬ সালে কর্নেল অ্যান্ড্রু স্কট এই উচ্চতাকে সামান্য বাড়িয়ে ২৯,০০২ ফুট হিসাবে ঘোষণা করেন। কিন্তু নাম রাখার সময়, বাঙালি গণিতজ্ঞের বদলে নাম হল জর্জ এভারেস্টের। যিনি নাকি এই শৃঙ্গটিকে চোখেই দেখেননি!

রাধানাথ শিকদার মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা মাপতে বরফের ঢালে দাঁড়াননি। কিন্তু কলকাতায় বসে ত্রিকোণমিতির ফিতে লাগিয়ে তিনি মেপে ফেলেছিলেন এভারেস্টকে। আমাদের গর্বের এই গণিতজ্ঞ জীবিত অবস্থায় বা পরবর্তীতে তাঁর আসল স্বীকৃতি পাননি? আগামীতে কি পাবেন? সেই উত্তর কিন্তু অধরাই।