কলকাতা: বিরোধিতার সুর বিজেপি যতই সপ্তমে তোলার চেষ্টা করুক না কেন, তাতে ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মুকুলের। তিনি রয়েছেন নিজের তালে। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করতে চেয়ে শুভেন্দু হন্তদন্ত এবং মরিয়া ভাব দেখালেও মুকুল রায় এসব নিয়ে নিরুত্তাপ। তাঁর ভাবখানা এমন, যেন কিছুই করতে পারবেন না শুভেন্দু অধিকারী। পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ার পর তাই শুক্রবার থেকে জোরকদমে কাজও শুরু করে দিয়েছেন খাতায় কলমে বিজেপিতে থাকা এই বিধায়ক।
মুকুলের বিধায়ক খারিজের আবেদন নিয়ে শুক্রবার স্পিকারের ঘরে শুনানি ছিল। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৩০ জুলাই। তবে শুভেন্দু স্পিকারের এই ‘দীর্ঘসূত্রিতায়’ সন্তুষ্ট নন তা এ দিন বেরিয়েই স্পষ্ট করে দেন। বিরোধী দলনেতা বলেন, “অনির্দিষ্টকাল ধরে শুনানি চলবে এটা হয় না।” সুতরাং আদালতে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান। এই নিয়ে মুকুলের ভাব কতকটা ‘ডোন্ট কেয়ার’ গোছের। শুভেন্দুদের আদালতে যাওয়া নিয়ে মুকুলের সংক্ষিপ্ত অথচ কৌশলী প্রতিক্রিয়া ছিল, “যেখানে খুশি যাক না! আদালতে যেতেই পারে।” তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, যেদিন তাঁর বিরুদ্ধে বিধানসভায় শুনানি চলছে, সেদিনই বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে মুকুল একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিলেন, তিনি শুভেন্দুর আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিকে খুব একটা গায়ে মাখছেন না।
অন্যদিকে, পিএসি-র দায়িত্ব নেওয়ার পর শুক্রবারই প্রথমবার এই কমিটির বৈঠকে যোগ দেন মুকুল। তাঁর পাশাপাশি বিধানসভার ৪১ টি কমিটির চেয়ারম্যানকে নিয়েই এ দিন বৈঠকটি ডেকেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলি আগামী এক বছর কী ভাবে পরিচালনা করা হবে, কী কী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে বিধানসভাকে আরও সম্বৃদ্ধ করা যাবে, এই নিয়ে আলোচনা করেন বিমান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। পরবর্তী সময় সাংবাদিক বৈঠকে হাজির হয়েও তিনি মুকুলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।
এর পাশাপাশি শুক্রবার বিধানসভার ৮ টি স্ট্যান্ডিং কমিটির নতুন চেয়ারম্যানদের নামও ঘোষণা করেন বিধানসভার স্পিকার। মুকুলকে পিএসি চেয়ারম্যান করার বিরোধিতায় এই ৮ কমিটির চেয়ারম্য়ান পদ থেকেই ইস্তফা দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। নতুন আটটি কমিটির মধ্যে দু’টি কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন কামারহটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুমায়ুন কবীর। কার্যত এই প্রথমবার বিধানসভার মোট ৪১ টি স্ট্যান্ডিং কমিটির মধ্যে ৪০ টির মাথাতেই থাকছেন তৃণমূলের বিধায়কেরা। একটি কমিটি রয়েছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির অধীনে। আরও পড়ুন: মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে এবার আদালতে যাওয়ার তোড়জোড় শুভেন্দুদের