West Bengal TET: টেট পরীক্ষা দিয়েছেন মমতা, শুভেন্দু, দিলীপ, সুজন! পর্ষদের তালিকা প্রকাশ হতেই শোরগোল

WBTET: আন্দোলনকারীদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রাজ্যের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের নামের সাদৃশ্য থাকতেই পারে।

West Bengal TET: টেট পরীক্ষা দিয়েছেন মমতা, শুভেন্দু, দিলীপ, সুজন! পর্ষদের তালিকা প্রকাশ হতেই শোরগোল
গ্রাফিক্স: টিভি৯ বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 14, 2022 | 1:28 PM

কলকাতা: ২০১৪ ও ২০১৭ প্রাথমিক টেট (Primary TET) পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Education Council) প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যে গ্রেফতারির পর আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বেড়েছে। এই অবস্থায় আদালতের নির্দেশে ২০১৭ সালের তালিকা প্রকাশের পর ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৪ সালের প্রকাশিত তালিকায় বেশ কয়েকটি নাম এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। পর্ষদ প্রকাশিত তালিকায় দেখা গিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন নামের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দ অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তীর নাম রয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাংলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতানেত্রীদের সঙ্গে পর্ষদের প্রকাশিত তালিকার নামের মিল রয়েছে। এই সব নাম প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে জোর তরজা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এমনকী পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। তবে পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পর্ষদের তালিকায় নেতানেত্রীদের নামের সাদৃশ্য নাম থাকার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। তালিকায় দেখা গিয়েছে, ১০০টির বেশি  ‘মমতা’ নাম রয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক নেতাদের পদবী মিলে যাওয়া নিতান্তই কাকতালীয় হতে পারে। উল্লেখ্য, মমতা ছাড়াও শুভেন্দু, সুজন, দিলীপ নামে একাধিক নাম রয়েছে। এমনকী সংশ্লিষ্ট নামের পাশে রোল নম্বর থাকায় তালিকা থাকা নাম ভুয়ো নাও হতে পারে।

আন্দোলনকারীদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রাজ্যের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের নামের সাদৃশ্য থাকতেই পারে। কিন্তু একই তালিকায় একসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা সহ অন্যান্য বিরোধী নেতাদের অনুরূপ নাম থাকায় তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, এই বিষয়টি বিচারপতির নজরে নিয়ে আসা হবে। চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীদের দাবি, পর্ষদ প্রকাশিত ২০১৪ সালের লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। পর্ষদের নিয়ম ছিল প্রাথমিক টেটের পরীক্ষা ৮৩ নম্বর পেলে তবেই চাকরির জন্য প্রার্থীকে যোগ্য বলে ধরে নেওয়া হবে। সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে পরীক্ষার্থীর ৮২ পাবেন তাঁকে পাস বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু পর্ষদের তালিকায় দেখা ২০১৭ সালেও ৮২ পাওয়া অনেক পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তারা এখন চাকরি করছেন।

প্রাথমিক টেট কেলেঙ্কারি মামলায় সম্প্রতি প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। মানিকে গ্রেফতার হতেই দুর্নীতির একের পর এক চাঞ্চল্যকর খবর সামনে এসেছে। কীভাবে টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে সেই প্রমাণও হাতে রয়েছে বলেছে দাবি করেছে তদন্তকারী সংস্থা। মানিক ভট্টাচার্যকে বিভিন্ন তৃণমূল নেতা চিঠি লিখে চাকরির সুপারিশ করেছিলেন, সুপারিশ পত্রে থাকা বেশ কয়েকটি নামও পর্ষদ প্রকাশিত তালিকায় দেখা গিয়েছে বলেই দাবি মামলাকারীদের আইনজীবীর। এখনও পর্ষদের তরফে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পরীক্ষার্থীদের কথা যে ঠিক তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তালিকার যে কোনও মূল্য নেই, বোর্ডের অপদার্থতাই তা প্রমাণ করে দিচ্ছে।” বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পৃথিবীর ইতিহাসে কোনও মানুষের মেধা, শিক্ষা ও চাকরি নিয়ে এতবড় তামাশা কোনওদিন করা হয়নি। ২০১৪ সালের যে পরীক্ষা হয়েছিল, সেটায় শিক্ষিত তরুণ তরুণীদের সঙ্গে ছেলেখেলা হয়েছে। পুরো তালিকাটাই ভুয়ো। “পৃথিবীর ইতিহাসে কোনও মানুষের মেধা, শিক্ষা ও চাকরি নিয়ে এতবড় তামাশা কোনওদিন করা হয়নি। ২০১৪ সালের যে পরীক্ষা হয়েছিল, সেটায় শিক্ষিত তরুণ তরুণীদের সঙ্গে ছেলেখেলা হয়েছে। পুরো তালিকাটাই ভুয়ো।”