NIA: ভোর ৪.৩০মিনিটে থানায় যান NIA কর্তা, সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়েই তল্লাশি! ভূপতিনগরে ঠিক কী হয়েছিল বিবৃতি দিয়ে জানাল NIA
NIA: NIA সূত্রের দাবি, গন্ডগোল শুরু হওয়ার পর সেই ফোর্স ডাকা হয়েছিল ঘটনাস্থলে। ভোর সওয়া ছ'টা নাগাদ যখন বিক্ষোভ, হামলা হয়, তার অনেক আগেই থানায় জানানো হয়েছিল, NIA-এর তরফে তারা তল্লাশি চালাতে এসেছে।
কলকাতা: ভূপতিনগরে অভিযান ঘিরে এখন কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে। এনআইএ-বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ তৃণমূল। অভিযোগ জানানো হচ্ছে দিল্লি নির্বাচন কমিশনেও। একদিকে বঙ্গ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও হুঁশিয়ারি দিয়ে দিয়েছেন, দুষ্কৃতী-দুর্নীতি নাশ করতে এই ধরনের অভিযান চলবেই। অভিযুক্তরা আজীবন জেলেই থাকবে। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী সরব ভোটের মুখে পরিকল্পিত অভিযানের অভিযোগ তুলে। এই পরিস্থিতি প্রকাশ্যে NIA-এর বিবৃতি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির বক্তব্য, ভূপতিনগরে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আইন মেনেই ভূপতিনগরে অভিযানে যাওয়া হয়েছিল। ছিল সার্চ ওয়ারেন্টও। বিনা প্ররোচনায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময়ে মহিলা CRPF-এরও ছিলেন।
NIA সূত্রের দাবি, গত শনিবার তল্লাশি অভিযান শুরু হওয়ার আগেই NIA-র এক অধিকারিক ভূপতিনগর থানায় পৌঁছেছিল, ডিউটি অফিসারের কাছে পুলিশ ফোর্স (সহকারি) চেয়েছিল। ভোর সাড়ে ৪টের আগেই থানায় পৌঁছেছিল NIA। তারপর ৫টি লোকেশনে তল্লাশি শুরু হয়। তল্লাশি চালাতে প্রায় ৩০ জন CRPF নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ব্যাকআপের জন্য ৬টি টিম ছিল। একটি সিআরপিএফ ফোর্স টিম রাখা ছিল।
NIA সূত্রের দাবি, গন্ডগোল শুরু হওয়ার পর সেই ফোর্স ডাকা হয়েছিল ঘটনাস্থলে। ভোর সওয়া ছ’টা নাগাদ যখন বিক্ষোভ, হামলা হয়, তার অনেক আগেই থানায় জানানো হয়েছিল, NIA-এর তরফে তারা তল্লাশি চালাতে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। রাজকুমার-সহ ৩ জনের মৃ্ত্যু হয়। আদালতের নির্দেশে ২০২৩ সালে এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। ঘটনায় অভিযুক্ত বলাই মাইতি ও মনোব্রত জানাকে একাধিক বার নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত থাকার কারণ দর্শিয়ে সেই হাজিরা এড়িয়েছিলেন তাঁরা। তারপরই তাঁদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান। সেখানে এনআইএ-এর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। মহিলারা ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে এনআইএ-এর গাড়িও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।
যদিও গত শনিবারের ঘটনার পর থেকেই হেমতাবাদের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, পরিকল্পিতভাবেই এনআইএ অভিযান হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “হামলাটা কে করেছে? হামলাটা মেয়েরা করেনি। হামলাটা করেছে এনআইএ। গদ্দারটা জানে হারবে, তাই লোকের বাড়ি লোক পাঠাচ্ছে। তুমি লোকের বাড়িতে ঢুকে যাবে রাতে, তৃণমূলের সব বুথ সভাপতিকে গ্রেফতার করতে হবে, তৃণমূল এমএলএ-কে গ্রেফতার করতে হবে।” এমনকি NIA-BJP-র আঁতাতেরও অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেছেন, “NIA-র একজন অফিসারের বাড়িতে গিয়ে বিজেপি-র নেতারা লিস্ট দিয়ে আসছেন। মুখ্যমন্ত্রীও এই কথাই বলছেন।”
যদিও ঘটনার পর জলপাইগুড়ির সভায় দাঁড়িয়ে ভূপতিনগরের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “তৃণমূলের জমানায় ইডি-এনআইএ সবই আক্রান্ত হচ্ছে। তৃণমূল সংবিধানবিরোধী।”