‘আমি মারা যাচ্ছি’, অক্সিজেনের ছেঁড়া নল নিয়ে ঘরে ফোন, এনআরএস-এ তিলে তিলে মৃত্যু বৃদ্ধের
ছেলে সোহম দাসের বয়ান অনুযায়ী, বৃদ্ধ বাড়িতে ফোন করে বলেন, "আমার অক্সিজেনের নল ছিঁড়ে গিয়েছে, এখানে দেখাশোনার কেউ নেই। বাবা বললেন, আমি এখন মারা যাচ্ছি। আমি আর বাঁচব না।"
বছর ৬৮-র এন্টালির বাসিন্দা স্বপন দাস দিনকয়েক আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এনআরএস হাসপাতালে। কিন্তু বুধবার দুপুরে তাঁর অক্সিজেনের নল ছিঁড়ে যায় বলে অভিযোগ। ছেলে সোহম দাসের বয়ান অনুযায়ী, বৃদ্ধ বাড়িতে ফোন করে বলেন, “আমার অক্সিজেনের নল ছিঁড়ে গিয়েছে, এখানে দেখাশোনার কেউ নেই। বাবা বললেন, আমি এখন মারা যাচ্ছি। আমি আর বাঁচব না।”
সোহমের দাবি, এরপর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে বলা হয় ‘দেখছি’। পরে স্বপনবাবুর পরিবার হাসপাতালে এসে হাজির হলে ভিডিয়ো কলে কথা বলানোর ব্যবস্থা করা হয়। “প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় বাবা চোখ মেলে চাইলেন। একটাও কথা বলতে পারলেন না। যা বলার নার্সই বললেন। অভিযোগ আছে কি না জিজ্ঞেস করে নিজেই বললেন, না ওনার কোনও অভিযোগ নেই”, জানান সোহম দাস।
শেষ পর্যন্ত নববর্ষের দিন দুপুরে মৃত্যু হয় স্বপনবাবুর। যেহেতু স্বাস্থ্য ভবনের মাধ্যমে রোগীকে এনআরএসে ভর্তি করানো হয়েছিল, তাই বাবার ছটফট করার কথা শুনে স্বাস্থ্য ভবনের কন্ট্রোল রুমে ফোন করেছিলেন ছেলে। তাতে সাময়িক কাজ হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ওয়ার্ডের খবর বাইরে কীভাবে গেল, তা নিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। সোহমের দাবি, রোগীকে কেন ফোন রাখতে দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে ধমকও শুনতে হয়। মৃতের ছেলের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালের গাফিলতির জন্যই মৃত্যু হল বাবার।
আরও পড়ুন: পিএম কেয়ারস ফান্ডের টাকা কোন কাজে লাগছে? জানাল কেন্দ্র
বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ায় দীর্ঘ টালবাহানার পর মোবাইল, মানিব্যাগ ফিরে পান মৃতের ছেলে। কিন্তু ৬৮ বছরের স্বপনবাবু বাড়ি ফিরলেন না। কেন এমন ঘটল তা জানতে চাইলে এনআরএস কর্তৃপক্ষ জানান, মোবাইল ওয়ার্ডে থাকার কথা নয়। কিন্তু অক্সিজেনের নল খুলে রোগীর ছটফট করার অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: বেলাগাম করোনা, রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত সাড়ে ৬ হাজারের বেশি, পরীক্ষা কমলেও সংক্রমণ বাড়ছে