North Bengal News : দক্ষিণ কলকাতাকেন্দ্রিক রাজ্য ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গের মানুষ চায় না : শঙ্কর ঘোষ

North Bengal News : স্কুলে গরমের ছুটি থেকে শুরু করে আরও একাধিক ইস্যু, সাম্প্রতিককালে বারাবরই বাংলা ভাগের দাবি তুলেছেন বিজেপি (BJP) নেতারা। যা নিয়ে জোর চর্চা চলেছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে।

North Bengal News : দক্ষিণ কলকাতাকেন্দ্রিক রাজ্য ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গের মানুষ চায় না : শঙ্কর ঘোষ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 29, 2023 | 3:53 PM

কলকাতা : “দার্জিলিংয়ের কুয়াশা, ঘুমের রেল স্টেশন, ডুয়ার্সের চা বাগানের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে উত্তরবঙ্গকে উপভোগ করা এক জিনিস। আর ঠিক তার পাশেই আলিপুরদুয়ার বা কোচবিহার থেকে অসুস্থ রোগী বা একজন পরীক্ষার্থীর অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাংলার প্রাণকেন্দ্র কলকাতায় পৌঁছানোর কষ্টটা আর এক জিনিস।” এমনটাই বললেন বিজেপি নেতা তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ (BJP Leader Shankar Ghosh)। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে কী পেয়েছে উত্তরবঙ্গ (North Bengal)? উত্তরবঙ্গে টিভি নাইন বাংলার বিশেষ কনক্লেভ ‘উত্তরের খোঁজে’-তে এই প্রশ্নই করলেন শঙ্কর। আরও একবার সরব হলেন বঞ্চনার অভিযোগে। নতমস্তকে তাঁর দাবিকে খানিক সমর্থনও করলেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা শঙ্করের পুরনো সতীর্থ অশোক ভট্টাচার্য। 

‘উত্তরবঙ্গের মনীষীরা তাঁদের যোগ্য মর্যাদা পাননি’ 

শঙ্করের স্পষ্ট দাবি, দক্ষিণ কলকাতাকেন্দ্রিক রাজ্য ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গের মানুষ চায় না। এমনকী উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়ার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরকেও কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। শনিবারের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে উত্তরের শঙ্করের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের মনীষীরা তাঁদের যোগ্য মর্যাদা পাননি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থারও কোনও উন্নতি হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, “এসবের উত্তর খুঁজতে গেলে কেন আমাদের যন্ত্রণার কথা বেদনার কথা শোনা হয় না! কী কারণে আজ উত্তরবঙ্গের এইমসকে রায়গঞ্জ থেকে সরিয়ে কল্যাণীতে নিয়ে যাওয়া হল? কেন উত্তরকন্যায় সচিব-মন্ত্রীদের বদলে মাকড়শা-টিকটিকি ঘুরে বেড়ায়? কেন এত গুণী মানুষ থাকা সত্বেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন উপচার্য আমরা উপহার দিতে পারলাম না? উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে ৮০০ কোটি টাকা। যার মধ্যে খরচ হচ্ছে মাত্র ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ টাকা।”  

প্রসঙ্গত, স্কুলে গরমের ছুটি থেকে শুরু করে আরও একাধিক ইস্যু, সাম্প্রতিককালে বারাবরই বাংলা ভাগের দাবি তুলেছেন বিজেপি নেতারা। উঠেছে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা মিলিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি। যা নিয়ে সরগরম হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। যদিও তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, “উত্তরবঙ্গের মানুষ বঙ্গভঙ্গ চাইছে না”। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলা বিরোধী। এই দাবি থেকে এটাই বারবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। 

‘২০১১ সাল পর্যন্ত বঞ্চিত ছিল উত্তরবঙ্গ’

অন্যদিকে এদিন শঙ্করের সুরে সুর মিলিয়েই কার্যত বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে বলতে শোনা যায়, “উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা যে রয়েছে এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গের মানুষেরও একটা আবেগ রয়েছে। আমি তা অস্বীকার করি না।” তাঁর দাবি সাতচল্লিশে দেশ স্বাধীন হলেও, বাংলা স্বাধীন বলেও দেশভাগের ক্ষত দীর্ঘদিন বয়ে বেড়াত হয়েছিল উত্তরবঙ্গকে। যার জেরে আসল স্বাধীনতার আনন্দ অনেক পড়ে উপভোগ করেছে উত্তরবঙ্গের মানুষ। তাঁর কথায় “আমরা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা উপভোগ করেছি ১৯৭৫ সালের পরে যখন ফারাক্কা ব্রিজ হল। দেশভাগের পরে যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার জন্য সবথেকে বেশি পিছিয়ে পড়েছিল উত্তরবঙ্গই।” একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গের বঞ্চনা নিয়ে শাসক তৃণমূলকেও কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা সুর চড়িয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, “বঞ্চনা হয়েছিল। তবে তা ২০১১ সালের আগে। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত ছিল। তবে তা ২০১১ সাল পর্যন্ত। মমতার উদ্যোগেই তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রক। এই মন্ত্রকের জন্য বরাদ্দ টাকা শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের ৮টি জেলার উন্নয়নেই খরচ করা হয়।”