কলকাতা: রাজ্যের পাঁচ জেলার ৬ আসন। বুধবার উত্তরবঙ্গের দুটি ও দক্ষিণবঙ্গের ৪টি আসনে ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন ভোটাররা। উপনির্বাচনে ভোট দেবেন। একুশের নির্বাচনে এই ৬টি আসনের মধ্যে ৫টি জিতেছিল তৃণমূল। একটি পেয়েছিল বিজেপি। এবার কী হবে? রাজনীতির কারবারিবার বলছেন, সাধারণত উপনির্বাচনে জেতে শাসকদল। কারণ, এই নির্বাচনে সরকার বদলের কোনও সুযোগ থাকে না। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। ভিনরাজ্যে তো আছেই। বাংলায় এমন অনেক উদাহরণ।
বাম জমানায় সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর তিনটি উপনির্বাচনে হারে বামেরা। সেই সময় রাজগঞ্জ, বিষ্ণুপুর পশ্চিম ও
বেলগাছিয়া পূর্ব সিপিএমের থেকে তৃণমূল দখল করে। আবার ঘাসফুলের জমানায় সাগরদিঘিতে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থী।
বাম জমানার শেষের দিকে একটা জিনিস লক্ষ্যণীয় ছিল, তা হল ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুটি জেলা পরিষদ হারানোর পর উপনির্বাচনগুলিতে পরপর হারতে থাকে বামেরা। ২০০৯-এ রাজগঞ্জ, তারপর একে একে বিষ্ণপুর পশ্চিম ও অধুনা লুপ্ত বেলগাছিয়া পূর্ব সিপিএমের থেকে দখল করে নেয় তৃণমূল।
এখন ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে বামেরা বৃহত্তর ঐক্যের কথা বলছে। এবার নৈহাটি আসনটি সিপিআই(এমএল) লিবারেশনকে ছাড়া হয়েছে। পাশাপাশি জোটে এসেছে আইএসএফ। দ্রোহকালে প্রতিবাদ মিছিল-জমায়েতে বামপন্থীদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোটবাক্সে কি তার ছাপ পড়বে?
একুশের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস আর আইএসএফ সঙ্গী ছিল বামেদের। কিন্তু লোকসভা ভোটে আইএসএফ আলাদা লড়ে। এবার তারা ফিরে এসেছে। কিন্তু জোট নিয়ে নওশাদের আন্তরিকতা ফিরেছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে!
বাংলায় গত কয়েকটি ভোটের দিকে খেয়াল রাখলে দেখা যাচ্ছে, কখনও বামেদের হাত ধরছে কংগ্রেস, কখনও আবার হাত ছাড়াছাড়ি। উপনির্বাচনেও তাই হল। নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারকেও সে অর্থে জোট নিয়ে তেমন সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। লোকসভা ভোটের পর চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে একা লড়ে কংগ্রেস সেভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি। গাইঘাটায় ফরওয়ার্ড ব্লকের থেকেও কম ভোট পেয়েছিল। কংগ্রেসের এই একলা চলো, তৃণমূলের ছয়-শূন্যর টার্গেট, বামেদের প্রাসঙ্গিক হওয়ার চেষ্টা, গড়রক্ষার লড়াইয়ে বিজেপি। সব উত্তর জানা যাবে তেইশে নভেম্বর। তার আগে বুধবার ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন ৬ বিধানসভার ভোটাররা। ভোটগ্রহণ হবে মাদারিহাট, সিতাই, তালডাংরা, মেদিনীপুর, নৈহাটি ও হাড়োয়া আসনে। সেদিকেই এখন নজর সকলের।