D.El.Ed: ডিএলএড পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন বাইরে, টেটের মুখে ‘হোঁচট’ পর্ষদের?

Question Leak Controversy: পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক আগেই প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি বাইরে আসার অভিযোগ এল। পরে অবশ্য জানা গেল, যে প্রতিলিপি বাইরে এসেছিল, তার সঙ্গে হুবহু মিল আসল প্রশ্নপত্রের। যা ঘিরে শোরগোল গোটা দিন। তবে পর্ষদ অবশ্য এ ঘটনাকে প্রশ্ন 'ফাঁস' বলে মানতে নারাজ।

D.El.Ed: ডিএলএড পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন বাইরে, টেটের মুখে 'হোঁচট' পর্ষদের?
ছবিতে 'ফাঁস' হওয়া প্রশ্নপত্র এবং আসল প্রশ্নপত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 28, 2022 | 11:07 PM

সুমন মহাপাত্র

ঘড়ির কাঁটায় তখন এগারোটা বাজতে মিনিট ১৫ বাকি। হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল কয়েকটা পাতা। খোলসা করে বললে প্রশ্নের পাতা। আর সেই প্রশ্নের পাতাই ঝড় তুলে দিল শিক্ষামহলে। একাধিক নিয়ম মেনে রাজ্যে শুরু হয়েছিল ডিএলএড পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষাও প্রশ্নাতীত রইল না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল প্রশ্নপত্র জন্ম দিল একাধিক বিতর্কের। পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক আগেই প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি বাইরে আসার অভিযোগ এল। পরে অবশ্য জানা গেল, যে প্রতিলিপি বাইরে এসেছিল, তার সঙ্গে হুবহু মিল আসল প্রশ্নপত্রের। যা ঘিরে শোরগোল গোটা দিন। তবে পর্ষদ অবশ্য এ ঘটনাকে প্রশ্ন ‘ফাঁস’ বলে মানতে নারাজ। বরং, পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের দাবি, এখানে অন্তর্ঘাত রয়েছে। পরীক্ষকদের নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সভাপতি। তবে শিক্ষাবিদদের একাংশ একটা বিষয়ে সহমত, এই ঘটনা টেটের আগে পর্ষদকে খানিকটা হলেও বিড়ম্বনায় ফেলল।

আগামী ১১ ডিসেম্বর রাজ্যে টেট পরীক্ষা। ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির ৫ বছর পর অবশেষে টেট হচ্ছে রাজ্যে। ৭ লক্ষের বেশি আবেদন জমা পড়েছে ইতিমধ্যেই। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের কালো অধ্যায়ের পর নিঃসন্দেহে পর্ষদের কাছে টেট অগ্নিপরীক্ষা। কিন্তু তার আগেই ছিল ডিএলএড পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি চলে আসে বাইরে। যা নিয়ে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের অবশ্য যুক্তি, এটা প্রশ্নফাঁস নয়, বরং বিশ্বাসঘাতকতা। পরীক্ষায় যাঁরা বিভিন্ন সেন্টারে দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের নিষ্ঠা সততার ওপর ভর করেই পরীক্ষা হচ্ছিল। তাঁদের মধ্যেই কেউ এই কাজ করেছেন, যা অনৈতিক।

টেটের আগে এহেন ঘটনা ঘটায় পর্ষদের দিকে কড়া প্রশ্নবাণ ছুড়ে দিচ্ছেন বিরোধী থেকে শুরু করে প্রাক্তন শিক্ষাকর্তারাই। সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য তো একধাপ এগিয়ে বলছেন, “ইচ্ছে করেই প্রশ্ন ফাঁস করা হয়েছে। এটা একটা পরিকল্পনা। এর আগেও প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।” আসলে তৃণমূল সরকারের কাছে স্বচ্ছতা একটু কম দুর্নীতির সমার্থক, দাবি বিকাশের। তৃণমূল আমলে সব পরীক্ষাতেই টাকার খেলা হবে, তোপ তাঁর। পর্ষদ সভাপতি যেখানে অন্তর্ঘাতের আভাস পাচ্ছেন, সেখানে অবশ্য ‘বিশ্বাসের অভাব’ খুঁজে পাচ্ছেন প্রাক্তন এসএসসি চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। তিনি অন্য বিষয়ে গৌতমবাবুর সঙ্গে সহমত। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে প্রশ্ন বেরতেই পারে। সেক্ষেত্রে পর্ষদ সভাপতিকে অতি সাবধানী হতে বার্তা তাঁর। অবজার্ভার বা সেন্টার ইন চার্জের পদে বিশ্বস্ত কাউকে রাখলে এমনটা হত না, দাবি চিত্তরঞ্জনবাবুর।

তবে, প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি আগে বেরিয়ে আসার অভিযোগ আসতেই তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ। পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে ভবিষ্যতে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হলে তাও নেবে পর্ষদ। কিন্তু গৌতমবাবু যেভাবে স্বচ্ছতার মাধ্যমে সব পরীক্ষার স্বপ্ন দেখছিলেন, সেখানে কি জল ঢাললেন কোনও একজন বা একাংশ? সুযোগ পেয়ে প্রশ্ন, কটাক্ষ-দুইই ভেসে আসছে বিরোধীদের কাছ থেকে।

বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই বিষয়ে বলেন, “যদি মনে করেন প্রশ্নফাঁস হয়নি, তাহলে তো বিতর্কের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু যেখানে ওএমার শিট গায়েব হয়ে যায়, যেখানে সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়া যায়, সেখানে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়।”