Teenage Pregnancy: রাজ্যে কৈশোরে মাতৃত্ব এবং প্রসূতি মৃত্যু উভয়ই বেশি, কন্যাশ্রীর গতি কি তবে থমকে গিয়েছে?
Teenage Pregnancy: রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "টিনেজ প্রেগন্যান্সি সবথেকে বেশি আমাদের প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায়। তারপর আমাদের। এটা দীর্ঘকালীন একটা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সমস্যা। কন্যাশ্রী প্রকল্প হয়ত সেই সমস্যাকে আগামী দিনে আস্তে আস্তে পরিবর্তন নিয়ে আসবে।"
কলকাতা : রাজ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের গতি কি থমকে গিয়েছে! মাতৃত্বকালীন মৃত্যু নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের বিবৃতি সেই প্রশ্ন তুলে দিল। কৈশোরেই মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার এ রাজ্যে অনেক বেশি বলে মঙ্গলবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। কৈশোরে সন্তানসম্ভবার সংখ্যাও অন্য রাজ্য থেকে এ রাজ্যে অনেক বেশি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। গত চার বছরে টিনেজ প্রেগন্যান্সি ২৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১৯ শতাংশ। স্বাস্থ্য ভবনের লক্ষ্যমাত্রা হল টিনেজ প্রেগন্যান্সির হার ১০ শতাংশে কমিয়ে আনা। স্কুলছুট হয়ে কম বয়সে মেয়েদের যাতে বিয়ে না হয় সে জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পের সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করছে শিক্ষক সমাজ। প্রশ্ন হল, তাহলে কৈশোর বয়সে মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার বেশি কেন? কন্যাশ্রী প্রকল্পের একটা দিক হল স্কুলছুট হয়ে তড়িঘড়ি যাতে বিয়ে না হয় তা নিশ্চিত করা। অথচ, স্বাস্থ্য দফতরের বিবৃতি বলছে এ রাজ্যে কৈশোরে মাতৃত্ব এবং প্রসূতি মৃত্যু দুটোই বেশি।
সামগ্রিক ভাবেই অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলায় মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার বেশি বলে কেন্দ্রীয় সমীক্ষার তথ্যে উঠে এসেছে। এদিন সে বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়। কারণ জানতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ভবন। প্রসূতি মৃত্যু ঠেকাতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সব স্তরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিয়ে গঠন করা হয়েছে নজরদার কমিটি। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “টিনেজ প্রেগন্যান্সি সবথেকে বেশি আমাদের প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায়। তারপর আমাদের। এটা দীর্ঘকালীন একটা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সমস্যা। কন্যাশ্রী প্রকল্প হয়ত সেই সমস্যাকে আগামী দিনে আস্তে আস্তে পরিবর্তন নিয়ে আসবে। দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন আনতে যে সামাজিক বিপ্লব দরকার, সেটা সর্বস্তর থেকে শিক্ষার হার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সহ নানা রকমের বিষয়ের সঙ্গে জড়িয়ে। তাই অত্যন্ত দ্রুত সেখানে সাফল্য অর্জন করা কষ্টকর।”
তিনি আরও বলেন, “টিনেজ প্রেগন্যান্সি সম্বন্ধে যে তথ্য দিয়েছি, সেটা এখনও পর্যন্ত নিখুঁত নয়। কারণ, আমরা এখনও পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করছি। টিনেজ প্রেগন্যান্সি সবসময়ই হাই রিস্ক তাই স্বভাবতই আমাদের টিনেজ গ্রুপে অনেক বেশি যত্ন করা দরকার। যদি টিনেজ প্রেগন্যান্সি আমরা রুখে দিতে পারি, তাহলে কিছুটা হলেও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনা যাবে। গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চলে বিভিন্ন জেলা বিভেদে টিনেজ বিবাহ এবং মাতৃত্বের হার বিভিন্ন রকম অর্থ এবং সামাজিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।”
উল্লেখ্য, যে তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেটির মূল কাজকে চারটি ভাগে ভাগ করা হবে। প্রথমত, প্রাথমিক স্তরে মাতৃ স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং যাঁদের ঝুঁকি বেশি তাঁদের শনাক্তকরণ এবং তাদের দ্রুত সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয়ত, প্রাথমিক এবং সেকেন্ডারি হাসপাতালের পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ব্যবহার করা। সেখানে আরও ডেলিভারি বাড়ানো আর একইসঙ্গে কোয়ালিটি অফ কেয়ারের দিকে নজর রাখা। তৃতীয়ত, মেডিকেল কলেজ এবং বড় জেলা হাসপাতালে যাতে সঠিকভাবে প্রতিটি রোগীর উপর নজর রাখা যায় এবং তারপর তার জন্য যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এই ব্যাপারে সব রকম নিয়মকানুন জোরদার করতে হবে। চতুর্থত, প্রতিটি হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশন অডিট করতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকসন কমিয়ে আনা যায় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন : Mission Pritilata : ‘বাড়ছে নারী নির্যাতন’, মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ দিতে ‘মিশন প্রীতিলতা’ শিবির এসএফআইয়ের