কলকাতা: প্রভাবশালীদের সঙ্গে ছবি তুলে প্রতারণা করতেন কসবার দেবাঞ্জন দেব। একই পথের পথিক সনাতন রায়চৌধুরীও। তাঁর গ্রেফতারির পরও প্রকাশ্যে নানা ছবি। সনাতনের সঙ্গে একই ফ্রেমে দেখা গিয়েছে অভিনেতা তথা অধুনা বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষকেও। যা নিয়ে শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। এ নিয়ে কী বলছেন ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী?
ফেসবুকে সদা সক্রিয় ছিলেন ভুয়ো সিবিআই অফিসার সনাতন। একটি ছবিতে দাবি করেছিলেন রুদ্রনীলের সঙ্গে আন্দামানে নিকোবরে দেখা করেছেন তিনি। এছাড়া রুদ্রনীলকে ফুল হাতে তুলে দিচ্ছেন তিনি, এমন ছবিও ভাইরাল। তবে রুদ্রনীলও স্বীকার করেছেন সনাতন পরিচিত। ফ্যান পরিচয় দিয়ে অনেকেই তাঁকে ফুল দেন। ছবি তোলেন। তার মধ্যে কে কোন পেশায় আছেন, কী করে জানবেন তিনি। কিন্তু আর দশটা ফ্যানের থেকে সনাতনকে রুদ্রনীলের মনে আছে বিশেষ এক কারণে। কী সেটা?
রুদ্রনীলের কথায়, “আমার হাওড়ার বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতদের থ্রু দিয়ে ওঁ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বলে আমার ফ্যান, একটু ফুলটুল দেবে, একটু সংবর্ধনা দেবে। ওই আরকি ফুল দিতে এসেছিল, বলেছিল উকিল।” কিন্তু প্রায় চার বছর আগে এই ফ্যানের সাক্ষাৎ কীভাবে মনে আছে অভিনেতা-রাজনীতিবিদ রুদ্রের? তিনি খোলসা করলেন নিজেই।
রুদ্রনীলের কথায়, ওনাকে মনে থাকার একটা কারণ আছে। ভদ্রলোক প্রবল বকেন, কানের পোকা গরম করে দেন এমন। যে কোনও বিষয়েই প্রবল বকতে থাকেন। একবার ফুলটুল নিয়ে আমার গল্ফগ্রিনের বাড়িতে এসেছিলেন। পরিচিত কিছু বন্ধুদের সঙ্গেই। কেউ এলে তো বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারব না। তবে উনি আইনজীবী এটা সত্যিই। কিন্তু সেই আইনজীবী হেঁটে আসছেন, নাকি নীলবাতি গাড়ি চড়ে আসছেন নাকি গরুর গাড়িতে আসছেন, সেটা জানি না।”
কী কথা হয়েছিল সনাতনের সঙ্গে? রুদ্র জানান, “আমার কাছে এসে বলেছিলেন, ভাল মানুষের সঙ্গে দেখা করতে ভাল লাগে। তাই চলে এলাম আরকি।”
আরও পড়ুন: ‘তোমার আমার নাম লেখা থাকবে তারায় তারায়’, শোভনকে শুভেচ্ছা বৈশাখীর
রুদ্র বলতে থাকেন, “এখন সনাতনের সঙ্গে নাম জড়ানোর খবর যখন জানতে পারি, আমি মনে করার চেষ্টা করতে থাকি কবে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কারণ, আমার মনে হয়, একজন মানুষ যখন অনৈতিক কাজ করছেন বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও পদমর্যাতার নাম ভাঙিয়ে তার থেকে সুবিধে নিচ্ছেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার সাহায্য করা উচিত।”
আরও পড়ুন: ‘সনাতন ম্যাজিক,’ এক চেয়ারে বসে কখনও রাজভবন, কখনও নিজাম প্যালেস!
দেবাঞ্জন কাণ্ডে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্য়ান্ডেল থেকে পাওয়া গিয়েছে রাজ্যের একাধিক নেতামন্ত্রির সঙ্গে তাঁর ছবি। কিন্তু কেউই তাঁর সঙ্গে পরিচিত নন বলে মন্তব্য করেছেন। তবে রুদ্র বলছেন, “এক্ষেত্রে সবাই কিন্তু একজোট হয়ে বলেছেন, দেনাঞ্জনকে নাকি তাঁরা চেনেন না। যা উচিত ছিল, একবার মনে করার প্রচেষ্টা যে তাঁকে কি সত্যিই চেনেন না? নাকি ভুল গিয়েছেন, তাহলে তদন্তে খানিকটা হলেও সাহায্য হত বলে আমি মনে করি।”