Bolpur EXCLUSIVE : বোলপুর যেন ‘বদলপুর’! চুরি হয়ে যাচ্ছে আস্ত নদী, রেহাই নেই কোপাইয়ের
Bolpur : স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রকাশ্য দিবালোকে এই কাজ চললেও, সব জেনে চুপ করে রয়েছে প্রশাসন। খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছে বোলপুরের (Bolpur) রাজনৈতিক মহলে।
কলকাতা : চুরি হয়ে যাচ্ছে আস্ত একটা নদী! এও সম্ভব? কোপাই নদীর বয়ে যাওয়া জলের উপর কংক্রিটের দেওয়ালের ছবি দেখে কার্যত এটাই মনে হচ্ছে সবার আগে। টিভি-৯ বাংলার (TV9 Bangla) হাতে উঠে এসেছে সেই এক্সক্লসিভ খবর। নদীর পাড় কেটে বেআইনিভাবে লুঠ হয়ে যাচ্ছে বালি এবং মাটি। গতিপথ হারাচ্ছে কোপাই নদী (Kopai River)। নদীর উল্টো পাড়ে রয়েছে আদিবাসী গ্রাম। নদীর উপর লাগাতার অত্যাচারের ফলে সেই গ্রাম পড়েছে ভাঙনের কবলে। বল্লভপুর, কমলাকান্তপুর গ্রাম সংলগ্ন এলাকা কার্যত নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। নদীর পাড় সংলগ্ন খাস জমি দিনেদুপুরে দেদার দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীর পাড়েই রয়েছে একটি আস্ত রিসর্ট। কংক্রিটের প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। একদিকে যেমন নদী গর্ভে থাকা বালি-মাঠি যেমন লুঠ হচ্ছে তেমনই অন্যদিকে নদী গর্ভে থাকা জায়গাও লুঠ হয়ে যাচ্ছে। সোনাঝুড়ি সংলগ্ন বল্লভপুর আদিবাসী গ্রাম পার হয়ে মাঠের রাস্তা ধরে একেবারে কোপাই নদীর ধারে চলে গেলেই দেখা যাচ্ছে এই ছবি। নদীকে যেন ঠেলে ঠেলে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে অন্যদিকে।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রকাশ্য দিবালোকে এই কাজ চললেও, সব জেনে চুপ করে রয়েছে প্রশাসন। ধীরে ধীরে যেন বদলে যাচ্ছে বোলপুরের মানচিত্রটাই। এই ছবি দেখে কেউ কেউ তো আবার বোলপুরকে বদলপুর বলেও ডাকতে শুরু করেছে। এদিকে যে রিসর্টের প্রাচীর নদীর পাড় থেকে দেখা যাচ্ছিল সেখানে গিয়ে দেখা গেল গেট বন্ধ। ভিতরে রাস্তার কাজ চলছে। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ইট-পাথর। গেট আগলে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা রক্ষী। মালিক কে? কে করাচ্ছেন এই কাজ। মিলল না খোঁজ।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলেন, “নদীর পাড়ে ঘর করেছিলাম ওরা সব ভেঙে দিয়েছে। কলকাতার কোনও এক বাবুই নাকি এ কাজ করেছে। ওখানে একটা গোডাউনও বানিয়েছে।” আর একগ্রামবাসীর অভিযোগ, “কংক্রিটের বাঁধ দিয়েছে ওদিকে। তারফলে এপাড়ে বাঁধ ভেঙে ঢুকছে নদীর জল। বদলে যাচ্ছে গতিপথ।” এদিন এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়েছে বিরোধীরা। তোপ দেগেছে সিপিএম, বিজেপি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “বোলপুর-শান্তিনিকেতনে আগে লোকে রবীন্দ্রনাথের টানে আসতেন, এখন অপার সামনে ছবি তুলছেন আর খোয়াইয়ের বাজারে যাচ্ছেন। এদিকে ওখানকার আদিবাসীদের হাত ধরেই এই বাজারের প্রচলন হয়েছিল। তাঁরাই বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে ওই বাজারে বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। যখনই দেখা গেল ওটা একটা ভাল ব্যবসার জায়গা তৈরি হচ্ছে তখনই পুরোটা দখল হয়ে গেল। এখন ওখানে ওই এলাকার মানুষরা কিছু করতে পারেন না। ওই এলাকায় যে সমস্ত রেস্তোরাঁ হয়েছে সব বেআইনি। প্রশাসনের নাকের ডগায় এটা হয়েছে। কোপাই নদী তো অর্ধেকটাই দখল হয়ে গিয়েছে।” এলাকার বিজেপি নেতা ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, “কয়লা মাফিয়া, বালি মাফিয়ারা ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস ভাল লোকেরা করে না। আমরা ঘটনার কথা শুনেছি। খতিয়ে দেখছি। আন্দোলনেও নামব।”