কলকাতা : দলের মধ্যে বিদ্রোহ ঠেকাতে দুই বিক্ষুব্ধ নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং রীতেশ তিওয়ারিকে ইতিমধ্যেই শোকজ নোটিস পাঠিয়েছে বঙ্গ বিজেপি (West Bengal BJP)। রবিবাসরীয় বিকেলেও আরও এক বিক্ষুব্ধ নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। বৈঠকের পর সারমর্ম কিছুটা এরকম – ‘বিজেপি বাঁচাও আন্দোলন’ এখনও চলবে। বঙ্গ বিজেপির থেকে শোকজ নোটিস ধরানা হয়েছিল এই আশায় যে, এবার হয়ত একটা বার্তা দেওয়া যাবে। কিন্তু এই শোকজের পরেও বেপরোয়া জয়প্রকাশ মজুমদার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা শান্তনুর সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন জয়প্রকাশ। সূত্রের খবর, মতুয়াবাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে ঢোকেন জয়প্রকাশ।
উল্লেখ্য, জয়প্রকাশ ও রীতেশকে যে শোকজ করতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি, এই খবর TV9 বাংলা শনিবার রাতেই প্রকাশ করেছিল। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শান্তনু ঠাকুর রাজ্য নেতৃত্বকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন, কতজনকে শোকজ করবে? শান্তনুর সেই চ্যালেঞ্জের পর জয়প্রকাশের সঙ্গে এই বৈঠক যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এদিকে শোকজ নোটিসে পর বেপরোয়া রীতেশও। সরাসরি দলীয় শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি। শোকজ করার বিষয়টি তিনি জানার আগে কেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হল, সেই নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এদিকে বঙ্গ রাজনীতিতে এখন জোর চর্চায় রয়েছে পিকনিক সমীকরণ। গত সোমবারের পর রবিবার সকালেও গোবরডাঙায় বনভোজনের আয়োজন করেছিলেন শান্তনু। সেই পিকনিকে অবশ্য বিক্ষুব্ধ নেতাদের অনেককেই দেখা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, এই বৈঠকে সবাইকে ডাকা হয়নি। এটি মূলত সাংসদের ভাই তথা গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর এবং আগের বনভোজনে যাঁরা উপস্থিত থাকতে পারেননি এমন কিছু নেতা ও কর্মী। এদিকে দলীয় নেতাদের নামে শো-কজ নোটিস জারির প্রায় পৌনে দুঘণ্টা পরও সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপির মুখপাত্রের দাবি, তিনি কিছু জানেন না। সব মিলিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাদের কাণ্ডে বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তির ঢেউ ফুলেফেঁপে উঠেছে।
শান্তনু ঠাকুরকে সামনে রেখে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতারা যে জোট বাঁধছেন, সে কথা উঠে এসেছে বার বার। তবে শোকজ নোটিসের পরেও বঙ্গ বিজেপির দুই বিক্ষুব্ধ নেতার মেজাজে কোনও বদল নেই। যা স্বাভাবিকভাবে অস্বস্তিতে ফেলছে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ কর্তাদের। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত সূত্র মারফত যা খবর, তাতে দুই নেতাই তাঁদের শোকজের জবাব দেবেন। তার সঙ্গে এটাও স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন, তাঁরা কেউই বিজেপি ছাড়ছেন না। তাঁরা নরেন্দ্র মোদীর অনুগামী। তবে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে তাঁদের যে ক্ষোভ রয়েছে সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতারা।
আরও পড়ুন : Kolkata Airport: প্রতিকূল আবহাওয়ায় রাচিগামী বিমান নামল কলকাতায়, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা
আরও পড়ুন : Covid Bulletin: আশার আলো… স্বস্তি দিচ্ছে রাজ্যে একদিনের সংক্রমণ, পজিটিভিটি রেটও নেমেছে