SSC Recruitment Scam: বেনিয়মে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের শিরে সংক্রান্তি! সুবীরেশের নির্দেশে কাদের নম্বর বাড়িয়েছিলেন পর্ণা বসু? এবার সেই তালিকা সিবিআই-এর হাতে
SSC Recruitment Scam: তদন্তে জানা গিয়েছে, কাদের কাদের নম্বর সার্ভার থেকে বাড়াতে হবে, তার হাতে লেখা তালিকা পর্ণাকে পাঠাতেন সুবীরেশ।
সুজয় পাল
এসএসসি-র নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। গত ২৭ অক্টোবর প্রথম চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারীরা। চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে রয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কিত একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে কার কার নাম রয়েছে, তা আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। ওই চার্জশিটে স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। তবে নাম নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নির্দেশে সার্ভার থেকে অযোগ্যদের প্রাপ্ত নম্বর বদল করা হয়েছে। তা বাড়ানো হয়েছে। সুবীরেশের নির্দেশে সার্ভার থেকে এই কাজ করেছেন প্রোগ্রামিং অফিসার পর্ণা বসু। এখানেই থেমে থাকেননি পর্ণা। সার্ভার থেকে নম্বর বাড়ানোর পর কাজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিজের ই-মেল আইডি থেকে মেল করে জানিয়েছেন সুবীরেশকে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, কাদের কাদের নম্বর সার্ভার থেকে বাড়াতে হবে, তার হাতে লেখা তালিকা পর্ণাকে পাঠাতেন সুবীরেশ। নম্বর বাড়ানো প্রার্থীদের তালিকা এখন সিবিআই এর হাতে। তালিকা পাওয়ার পর সেগুলি এক্সেল শিটে তুলে দিতেন দফতরের অস্থায়ী কর্মী সমরজিৎ আচার্য্য।
চার্জশিটে উল্লেখ, সুবীরেশ তাঁদের তালিকায় দিতেন যারা ফেল করেছেন কিংবা নন কোয়ালিফাইড। তাঁদের লিস্ট পাওয়ার পর পর্ণা বসু এমনভাবেই নম্বর বাড়াতেন যাতে সেই অযোগ্য প্রার্থীদের নাম নিয়োগ প্যানেলে কিংবা ওয়েটিং লিস্টে ঢুকে যায়।
ভুয়ো নিয়োগকে স্বচ্ছ দেখানোর জন্য ওএমআর শিটের দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্তা নীলাদ্রি দাসকেও ষড়যন্ত্রে যুক্ত করেন সুবীরেশ। অযোগ্য প্রার্থীদের যত নম্বর সার্ভারে বাড়ানো হয়েছিল, একই নম্বর সংস্থার কাছে থাকা ওএমআর শিটের ভিতরেও বাড়ানো হয়েছিল।
তদন্তে উঠে এসেছে, পার্সোনালিটি টেস্টের সময় সেই বোর্ডের সদস্য ও রিজিওন্যাল কমিশনের চেয়ারপার্সনদের সুবীরেশ নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রাপ্ত নম্বরের অংশ খালি কিংবা পেন্সিল দিয়ে প্রাপ্ত নম্বর লিখে তা এসএসসি-র দফতরে জমা দিতে। নম্বর বাড়ানোর জন্যই এটা করেছিলেন সুবীরেশ।
সিবিআই-এর দাবি, শান্তিপ্রসাদ সিনহার সঙ্গে যোগাযোগের সুবাদে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করত প্রসন্ন রায়। তাঁদের টাকার বিনিময়ে চাকরির টোপ দিতেন। রাজ্য জুড়ে তাঁর ফিল্ড এজেন্ট ছিল। যাঁরা পুরো টাকা দিতেন, তাঁদের নামেই ভুয়ো রেকমেন্ডেসন লেটার তৈরি করা হত।
এই ভুয়ো লেটার তৈরি হত এসএসসি-র দফতরেই। তারপর সেই কপি চলে আসতো প্রসন্নর কার রেন্টাল কোম্পানির অফিসে। এই অফিস থেকে কপি চলে যেত ভুয়ো চাকরি প্রার্থীদের কাছে। একই কপি এসপি সিনহার মারফত যেত কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছেও।
অশোক সাহার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ওএমআর শিটের আসল কপি নষ্ট করা হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় টেগর পার্কের একটি সংস্থাকে। প্যানেল প্রকাশের এক বছর হওয়ার আগেই তা নষ্ট করা হত। একাধিক শিক্ষা কর্তা ছাড়াও সিবিআই চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিংহের মতো মিডলম্যান ও কয়েকজন অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকেরও।