কলকাতা: রবি শাস্ত্রী, গ্যারিফিল্ড সোবার্স, যুবরাজ সিং…. এবার যেন তৃণমূল কংগ্রেস। মিলে গেল বাইশ গজ থেকে রাজনীতির আঙিনা। উপভোটের ব্যালট বক্স খুলতেই সকাল থেকেই দেখা গেল সব আসনেই তরতড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তৃণমূলের বিজয়রথ। এক্কেবারে যেন ছয় বলে ছ’টা ছয়। ব্যাউন্ডারির বাইরে দাঁড়িয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকায় বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সালের আগস্ট মাসে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আশ্চর্য রেকর্ড প্রথমবার তৈরি হয়েছিল তাঁর হাত ধরেই। তিনি গ্যারিফিল্ড সোবার্স।নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে খেলতে নেমে গ্ল্যামারগনের বিরুদ্ধে এক ওভারের ৬টা বলে ৬টা ছয় মেরেছিলেন। হতভাগ্য বোলারের নাম ম্যালকম ন্যাশ। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে মুম্বইয়ের হয়ে খেলতে নেমে অবিশ্বাস্য রেকর্ড করে বসেন রবি শাস্ত্রী। বরোদার বাঁ হাতি স্পিনার তিলক রাজের এক ওভারে ৬টা ছয় মারেন। গ্যারি সোবার্সের পর শাস্ত্রীর ছিলেন দ্বিতীয় ক্রিকেটার, যিনি এক ওভারে ছয় ছক্কার রূপকথা লিখেছিলেন। অন্যদিকে বিশ্বকাপের আসরে প্রথমবার ছয় ছক্কার ইতিহাস তৈরি করেন যুবরাজ সিং। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের বিরুদ্ধে পর পর ৬টা ছয় মেরেছিলেন। ১৯তম ওভারে যুবির সেই কীর্তি আজও ভোলেনি মানুষ। উপভোটের ফল দেখে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন তৃণমূলও যেন ব্যাট চালালো যুবরাজদের কায়দাতেই।
সকাল এগারোটা নাগাদ যে খবর এল তাতে তো দেখা গেল নৈহাটিতে আবার বড় ব্যবধানে জিতেও গিয়েছেন তৃণমূল সনৎ দে। দশম রাউন্ড সম্পূর্ণ হওয়ার পর দেখা গেল তৃণমূল প্রার্থী ৪৮৮৭৯ ভোটে জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে বাকি পাঁচ আসনেও বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল প্রার্থীরা।
সিতাই থেকে মাদারিহাট, মেদিনীপুর থেকে তালডাংড়া, হাড়োয়ায় একই ছবি। হাড়োয়ায় সপ্তম রাউন্ড গণনা শেষে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল প্রার্থী রবিউল ইসলাম এগিয়ে ৭০,৮৪৪ ভোটে। বিশাল ব্যবধানে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসেন তিনিই। অন্যদিকে তারপরেই রয়েছে বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম গাজি। তালডাংড়ায় চতুর্থ রাউন্ড শেষে ১২ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে তৃণমূলের ফাল্গুনী সিংহ বাবু। জেতেন তিনিই। মেদিনীপুরে সপ্তম রাউন্ড শেষে তৃণমূল প্রার্থী এগিয়ে ১৮১১৭। অষ্টম রাউন্ড শেষে আবার দেখা যায় তিনি এগিয়ে রয়েছেন ২১০৩২ ভোটে। জয়ের ছবি স্পষ্ট হতেই দিকে দিকে বিজোয়ল্লাসে মাতোয়ারা তৃণমূল কর্মীরা।
দিকে দিকে সবুজ আবির নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন ঘাসফুল শিবিরের কর্মীরা। মাদারিহাটে জয়ের রাস্তা প্রশস্ত হতেই গয়েরকাটায় আবির খেলে পটকা ফাটিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হতে দেখা গেল তৃণমূল কর্মীদের। একই ছবি নৈহাটি থেকে সিতাইয়েও। এই জয় নৈহাটির মানুষের জয়। এখন আরও দায়িত্ব বাড়ল। জয়ের পর টিভি ৯ বাংলায় বললেন নৈহাটির জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে। একইসঙ্গে তিনি যে শুরুতেই নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উন্নয়নে হাত দেবেন সে কথাও বলেন তিনি।