কলকাতা: আশ্বিনে বিপদ বঙ্গে। এক দুর্যোগের রেশ না কাটতেই ফের আরও একটি দুর্যোগের পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Alipur Meterological Department)। সপ্তাহান্তে বঙ্গোপসাগরের উপর জোড়া ঘূর্ণাবর্ত তৈরির পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের। পরপর দুটি ঘূর্ণাবর্ত ঘূর্ণাবর্ত এগিয়ে আসতে পারে বাংলা-ওড়িশা উপকূলের দিকে। একটি ২৬ সেপ্টেম্বর, অন্যটি ২৮ সেপ্টেম্বর। এরমধ্যে দ্বিতীয়টি আরও শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে (Deep Depression) পরিণতি পেতে পারে বলে আশঙ্কা। পাশাপাশি, সোমবার মধ্য বঙ্গোপসাগরেও (Bay Of Bengal) একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা ছাড়া দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আগাম দুর্যোগের পরিস্থিতি মাথায় রেখেই দক্ষিণবঙ্গে লাল সতর্কতা জারি করেছে নবান্ন। লাগাতার বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি (West Bengal Flood Situation), উদ্ধারকার্য নিয়ে বুধবার নবান্নে ইতিমধ্যেই জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্য সচিব (Chief Secretary) হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (H K Dwibedi)। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্য সচিব। কলকাতা পুরসভার কমিশনারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভবানীপুরে কোনওভাবে যাতে জল না জমে সেজন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনোদ কুমারকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য সচিব।
দেখুন বঙ্গ-হাওয়ার হালহকিকত…
মঙ্গলকোট: ঘুমের মধ্যেই মাটির ঘর চাপা পড়ে মৃত্যু (Death) এক গৃহবধূর। জখম দুই সন্তান। অবিরাম বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন (Water Logged) ছিল এলাকা। অন্যদিকে, মাটির বাড়ি হওয়ায় আরও দূর্বল হয়ে পড়ে ভিত। কিন্তু কিছুই টের পাননি ওই বধূ। অন্যান্য দিনের মতোই দোতলা মাটির ঘরে ছেলে তন্ময় ও স্ত্রী রাখীকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন সুফল থান্দার। আচমকা গোটা বাড়িটাই যে ধসে পড়বে তা ভাবতেও পারেননি সুফল। রাখী শুয়ে ছিলেন দেওয়ালের দিকে। গোটা বাড়িটাই দেওয়াল ভেঙে হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি মঙ্গলকোটের পালিগ্রামের ঘটনা।
বিস্তারিত পড়ুন: Mangolkot: ঘরে ছেলে-স্বামীর সঙ্গে শুয়ে ছিলেন বধূ, আচমকা হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ল গোটা বাড়ি!
বাঁকুড়া: জেলায় জেলায় অব্যাহত জল যন্ত্রণার ছবি। বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে দুর্ভোগের আশঙ্কা। কংসাবতীর জলে চাষাবাদে ক্ষতির সম্ভাবনা । জলস্তর বিপদসীমার উপরে ওঠার সম্ভাবনায় কংসাবতী জলাধার থেকে ১০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হল। বর্তমানে জলস্তর রয়েছে বিপদসীমা থেকে মাত্র ১ ফুট নীচে। যার ফলে সমস্যায় পড়তে হবে অসংখ্য চাষীদের পাশাপাশি বন্যাকবলিত ঘাটাল দাসপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় নতুন করে প্লাবিত হওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে। কংসাবতী সেচ দপ্তর সূত্রে খবর নিম্নচাপের পরিস্থিতি দেখে আবারও জলের পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে।
হাওড়া: প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন টিকিয়াপাড়া ও হাওড়া কারশেড। দুর্যোগের জেরে বাতিল দূরপাল্লার একাধিক ট্রেন। কিছু ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন। একাধিক স্টাফ স্পেশাল হাওড়ার পরিবর্তে শালিমার থেকে ছাড়বে। বিভিন্ন রেললাইনে জমে রয়েছে জল। যার জেরে একাধিক ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। একাধিক ট্রেনের (Railway Service) পথ পরিবর্তনের ঘোষণা ভারতীয় রেলের (Indian Railway)। বদল এসেছে ট্রেনের টাইম টেবিলেও। অর্থাৎ যে সময়ে ট্রেন ছাড়ার কথা, তার থেকে কিছুটা পিছিয়েছে সময়। সোমবার ও মঙ্গলবার একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল কলকাতা ও হাওড়া স্টেশন থেকে। ট্রেনের পথও বদল করা হয়। বুধবারও সেই ছবি খানিকটা অপরিবর্তিতও থাকছে। টিকিয়াপাড়া কারশেডে জল জমে থাকার কারণে দক্ষিণ পূর্ব রেলের বেশ কিছু ট্রেন সাঁতরাগাছি অবধি যাবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর: শিলাবতী নদীকে বন্যামুক্ত করা-সহ একাধিক দাবি নিয়ে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দিলেন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্য়ান সংগ্রাম কমিটির সদস্যরা। এদিনের বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের বন্যা দুর্গতরাও। বুধবার দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে প্ল্য়াকার্ড নিয়ে মিছিল করে ঘাটাল মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে পৌঁছন। ডেপুটেশনের সেই ৯ দফা দাবিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য বরাদ্দ যে টাকা তা বন্যা দুর্গতদের হাতে তুলে দিতে হবে। এছাড়াও, শিলাবতী নদীর উপর কংক্রিটের সেতু, দাসপুরের দুটি খাল সংস্কার-সহ একাধিক দাবি উল্লেখ করা হয়েছে।
কলকাতা: এক দুর্যোগ কাটতে না কাটতেই আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা (Weather Update)। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ পিছু ছাড়ছে না। যে কারণে নতুন করে সপ্তাহান্তে আবারও বৃষ্টি (Rain Forecast) বাড়বে। আবহাওয়া দফতরের এই পূর্বাভাসের পরই নবান্নর পক্ষ থেকে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এক বৈঠকের পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
বিস্তারিত পড়ুন: Weather Update Nabanna: ২৬ থেকে প্রবল বর্ষণ! দক্ষিণে রেড অ্যালার্ট, নবান্নের ‘বিশেষ’ নজর ভবানীপুরে
মহিষাদল: ফের রাজ্যে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা। বুধবার সকালে ফের বাজ পড়ে মৃত্যু হল দু’জনের। আহত আরও দু’জন। ঘটনাটি ঘটেছে মহিষাদল থানার বাঁকা এলাকায়।মৃতদের নাম সমীর পাল (৩২) ও বিশ্বনাথ ভুঁইঞা (২৯)। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মিলন ভুঁইঞা এবং শেখ ফারুক। আজ সকালে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন তাঁরা। তখনই আচমকা বজ্রপাত হওয়ায়, মাঝ নদীতেই মৃত্যু হয় দু’জনের।
বিস্তারিত পড়ুন: Lightning Strike: রূপনারায়ণে মাছ ধরতে গিয়ে সাত সকালে বাজ পড়ে মৃত ২
উত্তর ২৪ পরগনা: এক পরিবারের তিন সদস্যের বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। খড়দহের পাতলিয়ায় জমা জল নিষ্কাশনে সেচ দফতর (Irrigation Department) থেকে ৬টি পাম্প ও দমকল ২টি পাম্প আনা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই চলছে জল নিষ্কাশনের কাজ। যদিও ফের বৃষ্টি হলে এলাকা জলমগ্ন (Water Logging) হতে পারে বলে আশঙ্কা।
বিস্তারিত পড়ুন: Khardah: জমা জলে একই পরিবারে ৩ সদস্যের মৃত্যু, তড়িঘড়ি ২ কোটির পাম্পিং প্রোজেক্টে অনুমোদন প্রশাসনের!
খড়গপুর: কয়েক সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ খড়গপুরের (Kharagpur) আম্বা। পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলার খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত পূর্ব আম্বা গ্রামে। নিম্নচাপের কারণে কিছুদিন থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে গতকাল রাতে পূর্ব আম্বা গ্রামে তছনছ বাড়ির পর বাড়ি।
বিস্তারিত: Photo Gallery: কয়েক সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড খড়গপুরে আম্বা, তছনছ ৭৫টি বাড়ি!
কলকাতা: আর মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্য়েই কলকাতায় ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি। পুজোর আগে আবারও ভাসবে তিলোত্তমা। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী শনিবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। সেটি ক্রমশ পশ্চিম-উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ওড়িশা উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে। পাশাপাশি, সোমবার মধ্য বঙ্গোপসাগরেও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা ছাড়া দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিস্তারিত: Photo Gallery: কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ভাসতে চলেছে কলকাতা, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ৪ জেলাতেও