কলকাতা : লোকসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Kalyan Banerjee) মন্তব্য ঘিরে ফের তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। কংগ্রেস, বাম শিবির থেকেও তির্যক মন্তব্য করা হচ্ছে। রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধতে পিছিয়ে নেই পদ্ম শিবিরও (West Bengal BJP)। শুক্রবার বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের (Samik Bhattacharya) বক্তব্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে যে বিতর্ক হচ্ছে, তা আসলে একটি নাটক। তৃণমূল সরকারের রাজ্য প্রশাসন চালানোর ব্যাপারে যে ব্যর্থতাগুলি রয়েছে, সেগুলি ঢাকার জন্যই এমন নাটক তৈরি করা হচ্ছে। এভাবেই রাজ্যের শাসক শিবিরকে কড়া আক্রমণ শানালেন শমীক ভট্টাচার্য।
তাঁর কথায়, “তৃণমূল দেল কার কথা মূল বক্তব্য হিসেবে ধরা হয়, সেটা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। তৃণমূলের যে যে ব্যর্থতা রয়েছে রাজ্য প্রশাসন চালনার ব্যাপারে, তা ঢাকার জন্যই অভিষেক – কল্যাণ বিতর্কের নাটক তৈরি করা হচ্ছে।” উল্লেখ্য, সম্প্রতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তৃণমূলের বিরুদ্ধাচারণ করার অভিযোগ এনেছিলেন। আর তার পর থেকেই কল্যাণের মন্তব্যকে ঘিরে জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। সেই নিয়েই এবার তৃণমূলের ‘নাটকের’ তত্ত্ব উস্কে দিলেন বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য।
এর পাশাপাশি আসন্ন পুরভোটের আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে যে অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গেও শুক্রবার নিজেদের মত জানায় বঙ্গ বিজেপি। বঙ্গ বিজেপির বক্তব্য, “আমরা আমাদের অবস্থানে অবিচল। কমিশন যদি নিজেকে সত্যিকারের কমিশন হিসেবে মনে করে, তাহলে ভোট পিছিয়ে দেওয়া উচিত। আমরা অপেক্ষা করছি, কমিশন কী বলে সেটা দেখার।”
উল্লেখ্য, ময়নাগুড়িতে মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে শনিবার সকালেই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন বিজেপির সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তবে এই নিয়ে বিশেষ অস্বস্তি বোধ করছে না বঙ্গ বিজেপি। শুক্রবার রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, “রূপা গঙ্গোপাধ্যায় একজন সাংসদ। তাঁর কাছে হয়ত বিশেষ সূত্রে খবর রয়েছে। তাই তদন্ত চেয়েছেন। আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনও খবর নেই। রেল মন্ত্রী এসে দেখে গিয়েছেন। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। আমাদের দলের কর্মীরাও সাহায্যে করার জন্য রয়েছে।” এদিকে রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, রেল লাইনে কোনও সমস্যা ছিল না। ট্রেনের কোনও যান্ত্রিক সমস্যার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গঙ্গাসাগরে যেভাবে পূণ্যার্থীদের ভিড় হয়েছে, তাতে আগামী দিন পরিস্থিতি কী হবে তা নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন বঙ্গ বিজেপি। শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার হাসপাতালগুলিতে যা অবস্থা তাতে সংক্রমিতদের কোথায় ঠাঁই দেওয়া হবে সেটাই এখন দেখার। যে বিপুল পরিমাণে লোক সমাগম হয়েছে, তাতে করোনার বাড়বাড়ন্ত চেহারা আবার ফুটে উঠবে।” তিনি আরও জানান, ১২ জানুয়ারি বিজেপি যুব সংহতি ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ-এর উদ্যোগে প্রায় ২০ হাজার যুব মোর্চার সদস্য কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ বিবেক বাহিনীর নতুন হেল্প লাইন চালু করা হল। নতুন নম্বর হল ৯৮৭৩৭৬৭১২৭। এই হেল্প লাইনের মাধ্যমে যে কোনও রাজ্যের যে কোনও জায়গায় থেকে মানুষ খাবার হোক বা চিকিৎসা পরিষেবা তাঁদের দুয়ারে পৌঁছে যাবে। বিবেক বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত আছে।”
আরও পড়ুন : Sujan Chakraborty on TMC: ‘দেড় পয়সার কী যোগ্যতা?’ মমতাকে ছাড়া অভিষেকের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন সুজনের