RG Kar: ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ হতে পারে আরজিকর, ট্রায়াল অনুমোদনে বিতর্ক, থমকে ক্যান্সার গবেষণা

RG Kar: ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কেন্দ্রীয় সংস্থা CDSCO-র অধীনে হয়। ট্রায়ালের অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে রিপোর্ট দেওয়া আবশ্যক। রাজ্যের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের গড়িমসির কারণ জানতে আসরে নামতে পারে সিডিএসসিও।

RG Kar: 'ব্ল্যাকলিস্টেড' হতে পারে আরজিকর, ট্রায়াল অনুমোদনে বিতর্ক, থমকে ক্যান্সার গবেষণা
আরজি কর হাসপাতাল।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 16, 2023 | 4:04 PM

কলকাতা: ক্যান্সার চিকিৎসায় আরজি কর হাসপাতালের মাথায় গর্বের মুকুট পরাতে পারত যে গবেষণা, তার অনুমোদন ঘিরেই এবার গুরুতর অভিযোগ উঠছে। সূত্রের খবর, আগামী দিনে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ হতে পারে আরজি কর। এথিকস কমিটির অনুমোদনের পরও গত ১৫ মাস ধরে কেন আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সই করছেন না, সে প্রশ্নে তোলপাড় স্বাস্থ্য প্রশাসন। মূলত, ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য ২টি গবেষণা, হাড়ে ছড়িয়ে পড়ার ক্যান্সারে ১টি গবেষণা সংক্রান্ত ওষুধের এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই গবেষণার হাত ধরে কয়েক লক্ষ টাকার ওষুধ কমে আসতে পারে কয়েক হাজার টাকায়। এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নতুন পথ খুলে দিতে পারে ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে। অধ্যক্ষের সইয়ের জন্য আটকে তা বলেই অভিযোগ। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, অধ্যক্ষ সই না করতেই পারেন। তবে সেটা তাঁকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। এ নিয়ে অধ্যক্ষ কোনও মন্তব্য না করলেও এ ধরনের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের যে সমস্যা হতে পারে তা মানছেন বিশেষজ্ঞমহল।

যে কোনও ওষুধের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজে নিজস্ব এথিকস কমিটি আছে। তাদের কাজ, যে ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে, সেই ওষুধ থেকে কারও কোনও ক্ষতি হতে পারে কি না, সেই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা যায় কি যায় না সেই বিষয়ে বিবেচনা করা। এই এথিকস কমিটিতে যারা থাকেন, তারা যে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের সদস্য হবেন তা নয়। মূলত বাইরে যেসব ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে, তার বিশেষজ্ঞরা থাকেন এই কমিটিতে। এথিকস কমিটির স্বশাসিত। এথিকস কমিটি যদি কোনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন দিয়ে দেয়, সেক্ষেত্রে আর তাতে বাধার কিছু থাকে না। তবে এর জন্য একটি চুক্তিপত্রে সই করতে হয়। প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর, ক্লিনিক্যালের মুখ্য গবেষক, প্রতিষ্ঠানের যিনি অধ্যক্ষ ও ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাকে তাতে সই করতে হয়। অভিযোগ, আরজি করের অধ্যক্ষ তা ১৫ মাস ধরে তা করেননি।

এ নিয়ে আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় বলেন, “আমি দেখব বিষয়টি। অধ্যক্ষের সঙ্গেও কথা বলব।” অন্যদিকে প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “যখন একবার পাস করাই হল, প্রতিষ্ঠানে এই কাজটা হচ্ছে। তাহলে কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া প্রিন্সিপাল এটা আটকে রাখতে পারেন না। এটা আমার মতে দুর্ভাগ্যজনক। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে হবে।”

ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কেন্দ্রীয় সংস্থা CDSCO-র অধীনে হয়। ট্রায়ালের অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে রিপোর্ট দেওয়া আবশ্যক। রাজ্যের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের গড়িমসির কারণ জানতে আসরে নামতে পারে সিডিএসসিও। অনৈতিকতার অভিযোগ প্রমাণে বাতিল হতে পারে আরজি করের এথিকস কমিটির লাইসেন্সও।

এ বিষয়ে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ট্রায়ালের একটা সময় থাকে। যেহেতু এতে আর্থিক ব্যাপারও জড়িয়ে, তাই অনেক সময় যারা স্পন্সর করে, তারা দেরীর কারণে প্রত্যাহার করে অন্য হাসপাতালে চলে যায়। যদি স্পন্সররার মনে করে নির্দিষ্ট আইন ভাঙা হচ্ছে তা হলে কিন্তু CDSCO কে অনেক সময় জানিয়ে দেয়। তাতে ব্ল্যাকলিস্টেডও হয়ে যেতে পারে প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানে এটা হবে, কালো দাগটা কিন্তু বছরের পর বছর বইতে হবে।” ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, “১৫ মাস হল না মানে অন্যান্য জায়গায় এটা চলে যাবে। এমনকী এটা গ্লোবাল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হলে ভারতের বদলে অন্য দেশেও চলে যেতে পারে।”