TMC Meeting: তৃণমূলের ২ জানুয়ারি ‘তারিখ’ চিন্তায় ফেলেছে দলের একাংশকেই: সূত্র
TMC: বেশ কয়েকটি জেলা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য নদিয়া।
কলকাতা: পঞ্চায়েত (Gram Panchayet) ভোটের আগে দলীয় সমাবেশ তৃণমূলের (Trinamool Congress)। ২ জানুয়ারির দিকে তাকিয়ে রাজ্যের কর্মী-সমর্থকরা। এদিন দলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য, সাংগঠনিক জেলা সভাপতিদের নিয়ে নজরুল মঞ্চে বৈঠক করবেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যেহেতু পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই বৈঠক, নিঃসন্দেহে বৈঠকের মূল নির্যাস পঞ্চায়েত ঘিরেই আবর্তিত হবে। ফলে ইতিমধ্যেই অনেকের বুকে কাঁপন শুরু হয়ে গিয়েছে। মনে ভয়, কোনও অভিযোগ জমা পড়ে গেল না তো? নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি কাঁথির মারিশদা, রানাঘাটের তাতলা-১ গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানদের বিরুদ্ধে যেভাবে কঠোর পদক্ষেপ করেছেন অভিষেক, তা অনেক পঞ্চায়েত প্রধানকেই ভয়ে রেখেছে বলে তৃণমূল অন্দরের খবর। এই সভায় থাকবেন জেলা পরিষদ সভাধিপতি এবং কর্মাধ্যক্ষরা। প্রকাশ্যে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হবে না তো, এ প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে।
বেশ কয়েকটি জেলা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য নদিয়া। কারণ, এ জেলায় লোকসভা, বিধানসভা ভোটে খারাপ ফল করেছে শাসকদল। অভিষেক প্রকাশ্য সভা থেকে এ প্রসঙ্গের উত্থাপনও করেছেন। বিশেষ করে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের দুর্বল সংগঠন নিয়ে ভাবতে হচ্ছে শাসক দলকে। যে কারণে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নিজেই আগে দলের কর্মীদের সতর্ক করেছেন। বিরোধীরা সবচেয়ে বেশি সরব এই জেলা নিয়ে। নদিয়া সেই জেলা, যেখানে পর্যবেক্ষক ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। দু’জনেই দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। সূত্রের দাবি এ জেলার সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের একাংশের কাজ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ দল। সেই ছায়া কী পড়বে ২ তারিখের সভায়? চর্চা চলছে তা নিয়েও।
অন্যদিকে হুগলি গ্রামীণ বিশেষ করে আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, পুরশুড়া, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার একাংশে দলের তরফে বেশি করে নজর দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। বিধানসভা ভোটে হাতছাড়া হয়েছে একাধিক জায়গা। ব্লক স্তরে নেতাদের যোগাযোগ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সাংগঠনিক বার্তা দেওয়া হলেও অনেকের ভূমিকাই দলের নজরে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
হুগলি জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ বহুদিনের। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত স্তরে রয়েছে নানা দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগও। হুগলির জন্য কড়া কোনও বার্তা থাকবে নাকি, নজর থাকছে দলীয় কর্মীদের। নজরে সবুজে ঘেরা জঙ্গলমহলও। দলের ব্লক স্তরের নেতারা কত দূর জনসংযোগ করছেন তা বারবার দলের অন্দরেই আলোচনায় উঠে এসেছে। ভোটের আগে জঙ্গলমহল নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশেষ বার্তা দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে ।
নজরে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাও। কুণাল ঘোষকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে সেখানে। নিয়মিত সেখানে নানা কর্মসূচি করছেন কুণাল। এ জেলায় বারবার অভিযোগ উঠেছে, হাতে তৃণমূলের পতাকা ধরা থাকলেও তলে তলে অনেকেই বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। দলের কাছে সব খবরই রয়েছে বলে নেতৃত্ব বিভিন্ন সময়ে দাবিও করেছেন। আর অবশ্যই এই মুহূর্তে ‘হাই ভোল্টেজ’ জেলা বীরভূম। গত পঞ্চায়েত ভোটে এ জেলা ‘বিরোধী শূন্য’ করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। এবার কী হবে? তিনি কি জেলে থেকেও মেঘনাদের ভূমিকায় থাকবেন নাকি উঠে আসবে অন্য নাম? দলের বিশেষ কী পরিকল্পনা এ জেলা নিয়ে তাও নজরে।