কলকাতা: কলকাতায় পুরভোট ১৯ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজ্যের অন্যান্য যে সমস্ত পুরসভায় ভোট বাকি তা কবে হবে জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি চলাকালীন আরও একবার রাজ্যের কাছে হাইকোর্ট জানতে চাইল, কবে ভোট হবে বাকি পুরসভায়? কত দফায় ভোট হবে? আগামী সোমবারই এই মামলার চূড়ান্ত রায়দানের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিন শুনানি চলাকালীন মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরভোট ঘোষণা কবে, জানতে চায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কমিশনের আইনজীবী জানান, তাঁরা হলফনামায় উল্লেখ করেছে, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই কমিশন দিন ঘোষণা করে। ইতিমধ্যেই সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক-সহ বিভিন্ন উৎসবের বিষয় দেখতে হবে।
বিজেপির আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ এদিন এজলাসে বলেন, ‘আগের নির্দেশে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল কবে ভোট, গণনাই বা কবে? এরপর কমিশন জানায় ৬ থেকে ৮ দফায় ভোট হবে। তবে দিন বলেনি। হলফনামায় মেয়াদ ফুরনো পুরসভার ভোট কবে তা দেওয়া হয়নি।’
রাজ্যের তরফে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্দিষ্ট করে তারিখ রাজ্যের পক্ষে জানানো সম্ভব নয়। কোভিডের অবস্থা কেমন সেটা জানা না পর্যন্ত ভোট নিয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। তাই জানানো হয়নি। কোথায় কত পুলিশ, ভোট কর্মী লাগবে সেগুলো দেখতে হবে। মানুষের আবেগ জড়িত। তাই পালাব না।’ রাজ্য মে মাসের মধ্যে ভোট না করতে পারলে নিজেই আদালতকে জানাবে বলে এদিন এজলাসে প্রতিশ্রুতি দেন এজি।
একই সঙ্গে পুরভোটে ইভিএমের ব্যবহারের প্রসঙ্গও ওঠে এদিনের শুনানিতে। ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, সব পুরভোট করতে কত ইভিএম লাগবে? কমিশন জানায়, তাদের হাতে ১৫৬৮৭ ইভিএম আছে। সমস্ত পুরসভায় ভোটে কত ইভিএম দরকার তার স্ক্রুটিনি দরকার। কমিশনের বক্তব্য, বিভিন্ন রাজ্য গুজরাট, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ, সিকিম, কেরল থেকে ইভিএম চাওয়া হয়। কেউ ইভিএম দিতে পারেনি একমাত্র অরুনাচল প্রদেশ ছাড়া। এই পরিস্থিতিতে কিভাবে ভোট?
রাজ্যে পুরসভা ও পুরনিগম মিলিয়ে মিশিয়ে রয়েছে ১২৫টি। এর মধ্যে ১১৮টি পুরসভা, ৭টি পুরনিগম। সর্ববৃহৎ পুরনিগম কলকাতা। ১৪৪টি ওয়ার্ড। রাজ্য সরকার প্রথমেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল তারা কলকাতা ও হাওড়ায় আগে ভোট চায়। ১৯ ডিসেম্বর সেই ভোটের আর্জি জানিয়েছিল শাসকদল। যদিও সেই দাবিতে সিলমোহর পড়েনি। কলকাতায় ১৯ তারিখ ভোট হলেও, হাওড়ায় আপাতত ভোট নয়।
কিন্তু এতগুলো পুরসভায় ভোট বাকি থাকলেও শুধুমাত্র একটিতে কেন ভোট হচ্ছে তা নিয়ে বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হয়। কেন সবক’টি পুরসভায় একসঙ্গে ভোট হবে না তা জানতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সেই মামলার শুনানিতে আদালত রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশনকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছিল।
শুক্রবারও শুনানির একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে আদালত আবার জানতে চায় ‘পরিকল্পনা কী? কবে, কত দফায় ভোট?’ এজি জানান, রাজ্য ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চায়। কোভিডের কথাই তারা ভাবছে। সোমবার এই মামলায় রায়জদান হয় কি না নজর সেদিকেই।