কলকাতা: একমাস ঘুরতে না ঘুরতেই অতিবৃষ্টির জেরে ফের নাকাল দক্ষিণবঙ্গবাসী। জেলাজুড়ে গত কয়েকদিন ধরেই বর্ষণ চলছিলই। নতুন করে চাপ বাড়িয়েছে নিম্নচাপ। যার জেরে ফের একবার প্রাণ হারাতে হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। কয়েকশো হেক্টর জমি ডুবেছে জলের তলায়। জলমগ্ন এলাকায় বন্দি হয়ে আছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দিতে নেমেছে প্রশাসন। কিন্তু জমা জলে এবং লাগাতার বর্ষণে পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে উদ্ধারকার্যে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। এরই মধ্যে নবান্নের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ সোমবার বিকেলে প্রকাশ করেছে।
সেই রিপোর্টে উল্লেখ পেয়েছে, নিম্নচাপের কারণে জেলায় জেলায় অতিবৃষ্টির ফলে বেশ কয়েকটি জেলা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। জলের জেরে বিপাকে পড়া মানুষকদের জন্য মোট ৫৭৭ টি ত্রাণ শিবির চলছে। সেই ত্রাণ শিবিরগুলিকে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৮০ হাজারের বেশি মানুষ রয়েছেন। বিপজ্জনক এলাকা থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ১ লক্ষ ৪১ হাজার মানুষকে। ইতিমধ্যেই নবান্নর পক্ষ থেকে জেলাশাসকদের অতিরিক্ত তহবিল মঞ্জুর করা হয়েছে বিপর্যয়ের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। নবান্নর পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। এই কন্ট্রোল রুমের টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০, ২২১৪৩৫২৬। দুর্গতদের জন্য ইতিমধ্যেই সরকারের তরফ থেকে বিলি করা হয়েছে ৬০ হাজার ত্রিপল।
নবান্ন সূত্রে আরও খবর, জেলায় জেলায় অতিবর্ষণের জেরে গত ১৪ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবারের পর যে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এই ১৪ জনের মধ্যে ৮ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে জলে ডুবে, বাকি ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল ভেঙে এবং তড়িতাদহ হয়ে। জলে ডুবে মৃতদের মধ্যে ৭ জন পশ্চিম মেদিনীপুর এবং একজন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা বলে খবর। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের অরবিন্দ জানা নামে এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।
ক্ষতির খতিয়ান এখানেই শেষ নয়। নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত রাজ্যের ৪৭ টি ব্লক, এবং ৮ টি পুরসভা পুরোপুরি জলের তলায়। জলবন্দি হয়ে রয়েছেন ১৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৩২৮ জন মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ পেরিয়েছে। নবান্নর পক্ষ থেকেও সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর কঠোর নজর রাখা হচ্ছে। তবে অবিরাম বৃষ্টি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছে না জেলা ও রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন: Surjya Kanta Mishra: ‘কে অজন্তা, কীসের শোকজ়?’ অনিল-কন্যাকে চিনতেই পারলেন না সূর্যকান্ত!