Surjya Kanta Mishra: ‘কে অজন্তা, কীসের শোকজ়?’ অনিল-কন্যাকে চিনতেই পারলেন না সূর্যকান্ত!

Ajanta Biswas: ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক বিষয়ে তৃণমূলের মুখপত্রে গত ২৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই তিন কিস্তিতে অজন্তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। শেষ কিস্তিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তিও ছিল।

Surjya Kanta Mishra: 'কে অজন্তা, কীসের শোকজ়?' অনিল-কন্যাকে চিনতেই পারলেন না সূর্যকান্ত!
সূর্যকান্ত মিশ্র ও অজন্তা বিশ্বাস, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 20, 2021 | 6:00 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: সম্প্রতি, ৬মাসের জন্য দল থেকে নিলম্বিত সিপিএমের প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। তৃণমূলের রাজনৈতিক মুখপত্রে প্রবন্ধ লিখে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে  আগেই তিনমাসের জন্য সাসপেনশনের মুখে পড়েছিলেন অনিল-কন্যা অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাস (Ajanta Biswas)। পরে সেই সাসপেনশনের মেয়াদ আরও ৩ মাস বাড়িয়ে মোট ৬ মাস করা হয়। এরমধ্য়ে, জেলায় একটি দলীয় কর্মসূচিতে এসে, সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত অজন্তাকে চিনতে পারলেন না সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (Surjya Kanta Mishra)। পরে অবশ্য জানান, অজন্তাকে তিনি ডাকনামেই চেনেন।

সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে অজন্তা বিশ্বাসের নিলম্বন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত প্রথমেই বলেন, “কে অজন্তা বিশ্বাস? অজন্তা কে? কেন তাঁকে শোকজ় করা হবে?” এমনকী পাশে উপবিষ্ট সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাসকেও অজন্তা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন সূর্যকান্ত। জেলা সম্পাদক অজন্তাকে ‘অনিল-কন্যা’ বলে সম্বোধন করলেও প্রথমটা বুঝতে পারেননি সূর্যকান্ত। পরে অবশ্য অজন্তার ডাকনাম বলতেই তিনি বলে ওঠেন, “অনিলদার মেয়েকে আসলে আমি ডাকনামেই চিনি। ভালনামটা বিশেষ মনে থাকে না। অজন্তা যা করেছেন তা কাম্য নয়। এক দলে থেকে তিনি  বিরোধী দলের মুখপত্রে লিখছেন। দলবিরোধী মন্তব্য করছেন। তাই কলকাতা জেলা কমিটি তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। দলবিরোধী কোনও কাজ করলে বা কথা বললে সেই সদস্যকে তো ছেড়ে দেওয়া হবে না।”

উল্লেখ্য, ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক বিষয়ে তৃণমূলের মুখপত্রে গত ২৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই তিন কিস্তিতে অজন্তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। শেষ কিস্তিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তিও ছিল। যা দলের সদস্য হয়ে কাম্য় নয় বলেই দাবি বাম নেতৃত্বের। প্রাথমিকভাবে,   সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার তৃণমূলের মুখপত্রে অজন্তার উত্তর সম্পাদকীয় লেখাকে ‘খারাপ কাজ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। শুধু তাই নয়,  অজন্তা তাঁর রচনায়, সিঙ্গুর আন্দোলনকে গণবিক্ষোভ বলে উল্লেখ করেন, যা মূলত দলের বিচার ও ভাবধারার পরিপন্থী।  দলের সদস্য হয়ে প্রতিপক্ষ দলের মুখপত্রে বিনা অনুমতিতে লেখা যে মেনে নেওয়া হবে না তখনই স্পষ্ট করে দেয় সিপিএম রাজ্য় নেতৃত্ব। অধ্যপকদের জন্য নির্দিষ্ট এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকেও অজন্তাকে শোকজ নোটিস দেওয়া হয়।

তবে, অজন্তা যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তাতে সন্তুষ্ট হয়নি এরিয়া কমিটি। টানা কয়েকদিন নিজের অবস্থানে অনড় থাকার পর অজন্তা জানিয়েছিলেন, তিনি এই ঘটনার জন্য দুঃখিত। তাঁর এই লেখায় কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকে তা হলে তার জন্য তিনি ক্ষমা চাইছেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তিনি সতর্ক থাকবেন। ঘটনায়, সূর্যকান্ত মিশ্র (Surjya Kanta Mishra) জানিয়েছিলেন, অজন্তা ইউনিটের সদস্য। যা পদক্ষেপ করার ইউনিট আগে করবে। পরে প্রয়োজনে জেলা কমিটি ও রাজ্য কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।

নানা টানাপোড়েনের পরে, প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে অনিল-কন্যার নিলম্বনের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। যদিও তা নিয়ে জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার-সহ জেলা নেতৃত্ব প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। সিপিএমের জেলা কমিটি সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, এরিয়া কমিটি যা সুপারিশ করেছিল, জেলা কমিটির বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তে কিছু রদবদল করা হয়েছে।  অভিযুক্ত অজন্তা বিশ্বাসের সাসপেনশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। জেলা কমিটির এই সিদ্ধান্ত রাজ্য কমিটিকে পাঠানো হয়েছে।

সেক্ষেত্রে, অজন্তা রাজ্য কমিটির সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর সাসপেনশন নোটিস রাজ্য় কমিটিতে পাঠানো হবে তা নিয়েও বামকর্মীদের একাংশের মধ্য়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এক বামকর্মী নিজেই কটাক্ষ হেনে বলেছিলেন, “আমাদের পার্টিতে তো ছোটখাটো ব্যাপার নিয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা হয়।সকলেই জানেনই তো সব! কবে যে পরিবর্তন হবে!” অথচ, সেই অজন্তাকে কার্যত সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে চিনতে পারলেন না রাজ্য সম্পাদক! বর্ষীয়ান নেতার এ হেন আচরণে কার্যত অস্বস্তিতেই পড়েছে বাম শিবির।

আরও পড়ুন: BJP MLA: ‘বাবুল দলে অসম্মানিত হয়েছেন’, ফের ‘বেসুরো’ রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক!

আরও পড়ুন: Jitendra Tiwari: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরেছে মোদী-পদ্মের ছবি, জিতেন্দ্রর গতিপ্রকৃতিতে জল্পনা!