‘১ মিনিট লাগবে যাদবপুর দখল করতে’, SFI-দের ক্ষমতা বোঝালেন অরূপ-সায়নীরা
TMC on Jadavpur: শনির সন্ধ্যাতেই রাস্তায় নেমে ব্রাত্য বসুর উপর আক্রমণের কড়া নিন্দা করলেন তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদরা। সুকান্ত সেতুতে বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যায় অরূপ বিশ্বাস, সায়নী ঘোষদের। অরূপ বিশ্বাস তো বলেই দিলেন ১ মিনিটে যাদবপুর দখলের কথা।

‘১ মিনিট লাগবে’
ক্ষোভের সঙ্গেই অরূপ বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীকে মারা হয়েছে। আজ ওরা যাদবপুরে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন। আমরা মনে করি যে ছাত্ররা অধ্যাপকের গায়ে হাত দেয়। তাঁরা কখনও ছাত্র হতে পারে না। ওরা গুন্ডা। এই গুন্ডামির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস রাস্তায় নেমেছে। আমাদের যাদবপুরের সাংসদ-বিধায়ক থেকে টালিগঞ্জ-যাদবপুরের সমস্ত পৌর প্রতিনিধিরা মানুষকে নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। যদি মনে হয় ১ মিনিট সময় লাগবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে।” এরপরই তাঁর সংযোজন, “আমাদের সবাইকে প্রতিবাদে নামতে হবে। আমরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবই।” যদিও ছাত্রদের আহত হওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই বলেন “সবটাই বানানো।”
‘খেলা হবে’
সুকান্ত সেতুতে বিক্ষোভ মিছিল থেকেই সুর চড়াতে দেখা গেল যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষকে। তাঁর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস অনেক সহনশীল পার্টি তাই এসব করে পার পেয়ে যাচ্ছে ওরা। তাঁর কথায়, “যাঁরা ২৯৪ টা আসনের মধ্যে একটা আসন জিততে পারে না। তাঁরাই বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ঘাড়ে বন্দু রেখে তাঁরা ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে।” এরপরই হুঁশিয়ারির সুর শোনা যায় তাঁর গলাতেও। বলেন, “শান্ত যাদবপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন না। শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন না। ছাব্বিশে পুনরায় খেলা হবে।” সুর চড়িয়েছেন যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদারও। রীতিমতো হুঙ্কারের সুরেই তিনি বলেন, “লক্ষণরেখা অতিক্রম করবেন না। নাহলে কিন্তু ভাল হবে না।”
‘এদের চিহ্নিত করা হোক’

কুণাল ঘোষ
ঘটনা দেখে হতবাক কুণাল। ক্ষোভের সুরেই তিনি বলেন, “এরা কী চায়? এই বামেরা তো ৩৪ বছর ধরে লন্ডভন্ড করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে প্রাণঘাতী হামলা এটা। আমি মাননীয় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাব। কারণ উনি সংযত থেকেছেন। অভিভাবকের মতো আচরণ করেছেন। আমাদের টিম কোনওরকম প্ররোচনায় পা দেয়নি।” তবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনিও। তাঁর সাফ কথা, “পরিকল্পনা করে সবটা করা হয়েছে। তৃণমূলের ঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টা করা হয়েছে। এক এক করে সবার ছবি বেরোচ্ছে। এদের চিহ্নিত করা হোক। তৃণমূলের সৌজন্যকে যেন এরা তৃণমূলের দুর্বলতা না ভাবে। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা যেন না নেয়!”
বিজেপি শাসিত রাজ্যে এরকম করতে পারবে?

অন্যদিকে যাকে ঘিরে এত কাণ্ড সেই ব্রাত্য বসুও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ক্ষোভের সুরেই তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস যাদবপুরে যেতে পারবে না? ওয়েবকুপা মিটিং করতে পারবে না? তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সংগঠন করতে পারবে না? এটা কী গণতন্ত্র! ওদের হিম্মত আছে বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যে গিয়ে এই কাজ করার? যে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির মণ্ডলের অধ্যাপকরা আছে তাঁদের গায়ে হাত দিতে পারবে ওরা? পারবে কোনও মন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর করতে?” তাঁর দাবি, “গোটা রাজ্য দেখেছে কারা নৈরাজ্য চালিয়েছে, আর কারা ওখানে ধৈর্য ধরে ওখানে বসেছিল। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের একজন কর্মী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। শান্তিতে বিশ্বাস করেন। আমি ওদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। ওরা নৈরাজ্য চেয়েছিলেন। বল্গাহীন একটা সন্ত্রাস চেয়েছিলেন। এটা খুব উদ্বেগজনক।”
শিক্ষামন্ত্রী গাঁজা খাচ্ছিল?

মহম্মদ সেলিম (ফাইল ফোটো)
এত কিছুর মধ্যেও খোঁচা দিতে ছাড়েনি বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম তো আবার শিক্ষামন্ত্রীকেই একহাত নিয়ে বসে আছেন। প্রশ্ন তুলছেন রাজ্যে দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ নিয়েও। টেনেছেন বাবুল প্রসঙ্গও। তাঁর কথায়, “আজকে রাজ্যে এরকম অবস্থা হল কেন? কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গত ১২ বছর ধরে SFI ঢুকতে পারে না। উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী কী করছিল? গাঁজা খাচ্ছিল? কলেজে নির্বাচন কেন হয় না? আর যেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে সেখানে বারবার আক্রমণ নেমে আসে। কখনও তৃণমূল করে, কখনও বিজেপি। বাবুল সুপ্রিয় যখন বিজেপিতে ছিল তখন ক্যাম্পাসে গিয়ে এমন নাটক করেনি?”
