কলকাতা: ‘ফোঁস করুন, চক্রান্তকারীদের মুখোশ খুলে দিয়ে এবার ফোঁস করতে শিখুন’, এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে এ ভাষাতেই গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তৃণমূলের সেই চিরকালীন বদলা নয় বদল চাই, স্লোগানেরও বদলের কথা শোনা গেল তৃণমূল সুপ্রিমোর মুখে। বললেন, “আমরা বলেছিলাম বদল চাই, বদলা নয়। আজ বলছি ও কথা নয়। যেটা করার দরকার সেটা আপনারা ভাল বুঝে করবেন।” আর এ মন্তব্য নিয়েই রাজ্য-রাজনীতির আঙিনায় তৈরি হয়েছে জোরদার বিতর্ক। চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ইতিমধ্যেই নালিশ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছেও। সুকান্তর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহিংসতার পক্ষে মন্তব্য করেছেন। এই অভিযোগ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন।
এদিন টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, “আমি অশান্তি চাই না। কিন্তু কুৎসা, অপ্রচার, চক্রান্ত করে যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে আপনি তাঁকে কামড়াবেন না, কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।” তুলে আনের রামকৃষ্ণের কথাও। বলেন, “রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব বলেছিলেন একটা গোখরো সাপ তার কাছে গিয়ে বলেছিল ঠাকুর তুমি তো আমাকে কামড়াতে বারণ করেছিল আমি কাউকে কামড়াই না। কিন্তু, অনেকে আমাকে ইট মারে, আমার রক্ত পরে, আমার কষ্ট হয়। ঠাকুর বললেন, তোমাকে আমি কামড়াতে বারণ করেছি, ফোঁস করতে বারণ করিনি। আগামী দিন আপনাদের কাজ হচ্ছে চক্রান্তকারীদের মুখোশ খুলে দিয়ে ফোঁস করতে শিখুন।”
পাল্টা দফায় দফায় তোপ দেগেছেন সুকান্তও। বলেন, “আজকের বনধকে বানচাল করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে প্রচেষ্টা তা প্রমাণ করে দিয়েছে দিদিমণি ভয় পেয়েছে। তাই আমরা বলছি ভয় পেয়েছে দিদিভাই। ইস্তফা ছাড়া গতি নাই। মুখ্যমন্ত্রী এখন সাপের কথা বলছেন, কথামৃত থেকে ফোঁস করার কথা বলছেন। নিজে হিংসাকে প্রোভক করছেন। হিংসা বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে। ১৪ অগস্ট রাতে বাংলার সাধারণ মহিলারা রাস্তায় নেমেছিল। একদিন আগে ছাত্র সমাজ নেমেছিল। আর এখন মমতা তাঁর হার্মাদদের বলছেন তোমাদের যা করার করো।” এখানেই না থেমে আরও সুর চড়িয়ে বলেন, “প্রকারন্তরে তিনি হুমকি দিয়ে বলছেন, বাংলার মানুষের উপর আক্রমণ করো, মারধর করো। মুখ্যমন্ত্রীকে বলে দিতে চাই বিজেপি চুপ করে বসে থাকবে না। এই প্রথম আমরা দেখলাম মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সাংবিধানিক পদে বসে থেকে তিনি বাংলার মানুষের উপর অত্যাচারের হুমকি দিচ্ছেন।” টানেন সুকুমার রায়ের প্রসঙ্গও। বলেন, “কবি সুকুমার রায় হয়তো এনার কথা ভেবে লিখে গিয়েছিলেন, সেই সাপ জ্যান্ত, গোটা দুই আনতো। আর তাদের জন্য জনগণ কী ট্রিটমেন্ট করবেন সেটা বলে গিয়েছেন কবি। বলেছেন, তেড়ে মেরে ডান্ডা, করে দিই ঠান্ডা। যাঁরা ফোঁস করতে আসবে বাংলার জনগণ তাঁদের এই মন্ত্র দিয়েই ট্রিটমেন্ট করবে। গণতান্ত্রিকভাবে মারার জন্য তৈরি হয়ে আছে সবাই।”