Utilization of Money: ৫০ কোটি টাকা পেলে কী করবে? ভাবতেই হোঁচট খাচ্ছে মধ্যবিত্ত বাঙালি

অধিকাংশ মধ্যবিত্তই জীবনে কোনও দিন এত পরিমাণ নগদ টাকা এক সঙ্গে দেখেননি। ৫০ কোটি নগদ অর্থের মালিক হওয়া, চাকুরিজাবী মধ্যবিত্ত বাঙালির অধিকাংশেরই আকাশকুসুম কল্পনাতেও আসেনি।

Utilization of Money: ৫০ কোটি টাকা পেলে কী করবে? ভাবতেই হোঁচট খাচ্ছে মধ্যবিত্ত বাঙালি
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 30, 2022 | 7:31 PM

কলকাতা: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এর পর থেকেই উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা বঙ্গ জীবনে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে বিভিন্ন দুর্নীতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এর থেকেও বেশি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু খোদ কলকাতায় এই পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধারের সাক্ষী ছিল না মধ্যবিত্ত বাঙালি। ‘বোতাম আটা জামার নীচে শান্তিতে শয়ান’ বাঙালিকে বিপুল নগদ অর্থ যে নাড়িয়ে দিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অধিকাংশ মধ্যবিত্তই জীবনে কোনও দিন এত পরিমাণ নগদ টাকা এক সঙ্গে দেখেননি। ৫০ কোটি নগদ অর্থের মালিক হওয়া, চাকুরিজাবী মধ্যবিত্ত বাঙালির অধিকাংশেরই আকাশকুসুম কল্পনাতেও আসেনি। এই টাকা উদ্ধারের রেশ ধরে টিভি৯ বাংলা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল- “৫০ কোটি নগদ যদি আপনাকে দেওয়া হয়, তাহলে আপনি কী ভাবে খরচ করবেন?”

সোশ্যাল মিডিয়া এবং সমাজের বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন রোজগারের মানুষের কাছে এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। তাঁদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত। এত টাকা পেলে কী করবেন তার উত্তর দিতে বেশ চাপে পড়েছেন মধ্যবিত্ত বাঙালি। অধিকাংশের উত্তর শুনেই মনে হয়েছে, কেউ তাঁরা জীবনে কোনও দিন এত টাকা খরচ করার কথা চিন্তাও করেননি। তাই কী ভাবে খরচ করবেন তা চিন্তা করতে বসেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাঁদের। অনেকের খরচের তালিকা শেষ হলেও টাকার পরিমাণ শেষ হয়নি!

৫০ কোটির খরচের প্রশ্নে যে দু’টি উত্তর প্রথমেই উঠে এসেছে,তা হল বাড়ি তৈরি ও ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস বা এলআইসি-র বিভিন্ন স্কিমে টাকা জমিয়ে রাখা। ৫০ কোটি পেলে অধিকাংশই বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বা সুসজ্জিত বাড়ি তৈরিতে প্রাধান্য দিয়েছেন। যাঁদের বাড়ি নেই তাঁরা তো চেয়েইছেন। যাঁদের আছে, তাঁরা আরও ভাল করতে চেয়েছেন। কেউ কেউ আবার একাধিক বাড়ি তৈরির দিকে ঝুঁকেছেন। গাড়ি কেনার আগ্রহও দেখিয়েছেন কম-বেশি অনেকেই। কেউ কেউ আবার ৫০ কোটি টাকার একাংশ দান করতেও উদ্যোগী হয়েছেন। কেউ ভেবেছেন বৃদ্ধাশ্রমের ব্যাপারে, কেউ সহায় সম্বলহীনদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। কেউ হাসপাতাল তৈরি বা প্রত্য়ন্ত এলাকায় অ্য়াম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি তুলছেন। কয়েকজন বৃক্ষরোপণের কথাও বলেছেন।

বাড়ি, গাড়ি নিশ্চিত করে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসে টাকা রাখার বিষয়টি উঠে এসেছে অধিকাংশ জনের মধ্যে। কেউ কেউ প্রিয় জনকে টাকার ভাগ দিতে চেয়েছেন। বিপুল টাকার একাংশ দিয়ে নতুন ব্যবসা শুরু করার কথাও বলেছেন কেউ কেউ। কিন্তু পুরো টাকা দিয়েই ব্যবসা করার কথা শোনা যায়নি কারও মুখেই। ব্যবসার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বিষয়টি জানাতে পারেননি অধিকাংশ জন। এ ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি দেশ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়েও অগ্রাধিকার দিয়েছে ভ্রমণপ্রিয় মধ্যবিত্ত বাঙালি।

সোশ্য়াল মিডিয়ায় এই প্রশ্নের যে উত্তর এসেছে, তাতে খরচ করার চিন্তা যত না আছে, তার থেকে বেশি রয়েছে ট্রোলিং। মূলত ব্যঙ্গাত্মক উত্তরই দিয়েছেন নেটিজেনরা। কেউ বলেছেন, “লন্ডনে চলে যেতাম”। কেউ বলেছেন, “বুড়ো বয়সে পার্থ দাদু যা করত তাই করতাম।” কেউ বলেছেন, “বড়দের খেলনার দোকান দিতাম।” কেউ বলেছেন, “২টো বিড়ি বেশি খেতাম।” অনেকে আবার ট্রোলিংয়ের মাধ্যমে রাজনীতিকদের আক্রমণ করেছেন। কেউ বলেছেন, “কালীঘাটে মা সারদার সোনার মূর্তি গড়তাম।” কেউ বলেছেন, “আরও ২টো অর্পিতা পুষতাম।” কেউ বলেছেন, “তৃণমূলের টাকার দরকার সবথেকে বেশি। ওদেরই দিয়ে দিতাম।” কেউ কেউ আবার বেশ কয়েকটি বিয়ে করা এবং নিউজ চ্যানেল খোলার কথাও বলেছেন তাঁদের মন্তব্যে।