Mamata Banerjee: এবার মমতার শপথপাঠ নিয়ে তৈরি হল জটিলতা, রাজভবন থেকে আসছে না সবুজ সঙ্কেত
Bidhansava Bhawan: সংবিধানে রয়েছে, মন্ত্রী, বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল।
কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)-সহ নব নির্বাচিত তিন বিধায়কের শপথবাক্য পাঠ করাবেন কে? কবেই বা এই শপথবাক্য পাঠ করানো হবে? সমস্ত বিষয় নিয়েই এই মুহূর্তে তৈরি হয়েছে চরম জটিলতা। আর এই জটিলতার অন্যতম কারণ সেই রাজ্য-রাজভবন দ্বন্দ্ব।
সংবিধানে রয়েছে, মন্ত্রী, বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল। সঙ্গে এ কথাও বলা আছে, রাজ্যপাল চাইলে বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর ক্ষমতা অন্য কারও হাতে (বিধানসভার অধ্যক্ষের হাতেই মূলত যা দেওয়া হয়) তিনি তুলে দিতে পারেন। সেই মতোই সপ্তদশ বিধানসভার ক্যাবিনেট সদস্যরা যেদিন শপথ নেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ই সেই শপথবাক্য পাঠ করান। বাকি বিধায়কদের ক্ষেত্রে বিধানসভায় যেদিন শপথবাক্য পাঠ করানো হয় প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুধু শপথবাক্য পড়িয়েছিলেন জগদীপ ধনখড়।
এরপরই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তিনি বাকি বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর অধিকার ন্যস্ত করেন। সেই মতো বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শপথবাক্যও পড়ান। এত অবধি সবকিছু ঠিকই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে রাজভবন থেকে বিধানসভার সচিবালয়ে একটি চিঠি আসে। যেখানে বলা হয়, অধ্যক্ষকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর যে অধিকার রাজ্যপাল দিয়েছিলেন, তা তিনি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। অর্থাৎ এবার আর অধ্যক্ষ নন, নতুন বিধায়কদের শপথ নেওয়াবেন রাজ্যপালই।
এরপরই বিধানসভা থেকে আবারও রাজভবনে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, যে কোনও রাজনৈতিক দলের যে কোনও প্রতিনিধিই বিধায়ক পদে জিতে শপথ নিতে আসতে পারেন। তাই এই প্রত্যাহার করা ক্ষমতা যেন অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই চিঠির কোনও সদর্থক জবাব এখনও বিধানসভা পায়নি। অর্থাৎ নতুন নির্বাচিত তিন বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ভবানীপুর), জাকির হোসেন (জঙ্গিপুর), আমিরুল ইসলাম (সামশেরগঞ্জ)-এর শপথবাক্য কে পড়াবেন, কবে পড়ানো হবে তা নিয়ে এখনও বিশ বাঁও জলে বিধানসভা।
এদিকে তৃণমূল সূত্রে যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেবীপক্ষের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথবাক্য পাঠ করানোর প্রস্তুতি চলছে। এমনও হতে পারে, মহালয়ার পরদিনই ভবানীপুরের বিধায়ক হিসাবে শপথ নিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর সঙ্গী হতে পারেন জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন, সামশেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম।
তবে এই পর্ব তখনই সম্ভব, যখন রাজভবনের তরফ থেকে কোনও সবুজ সঙ্কেত আসবে। কেন না সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যপালই হচ্ছেন মন্ত্রী, বিধায়কদের শপথ পাঠ করানোর প্রথম ক্ষমতা তাঁরই। তিনি যতক্ষণ না কাউকে তা হস্তান্তর করছেন, ততক্ষণ অন্য কেউ শপথ পাঠ করাতে পারবেন না। এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিধায়ক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় শপথ নিন। সেটাই বাঞ্চনীয়। তবে এখনও রাজ্যপাল কোনও অনুমতি দেননি।” একইসঙ্গে শোনা যাচ্ছে, রাজভবনে শপথ হলে সেখানে যেতে আগ্রহী নন অধ্যক্ষ ও পরিষদীয় দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এখন প্রশ্ন থাকছে, তবে কি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ই বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করাতে চাইছেন? সে কারণেই কি বিধানসভার হাতে অধিকার দিচ্ছেন না। তেমনটা হলেও নজির তৈরি হবে। কারণ, উপনির্বাচনে জয়ী কোনও বিধায়ককে রাজ্যপাল শপথ পাঠ করাচ্ছেন, এমন ঘটনার খুব একটা দৃষ্টান্ত নেই।”
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: পুজোর মুখে বড় স্বস্তি শুভেন্দুর, ত্রিপল-চুরি মামলার তদন্তে আপাতত স্থগিতাদেশ