‘মমতার বিরোধী মুখ কোথায়?’ এবার ‘আত্মবিশ্লেষণ’ সব্যসাচীর
"কেউ বলবেন কাজ পেয়েছি, কেউ বলবেন প্রতিশ্রুতি পেয়েছি কাজ হয়নি। কিন্তু উনি দশ বছর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উল্টো দিকে ফেস আমাদের কে?''
কলকাতা: বিজেপি (BJP)-র কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাষা বুঝতে পারেননি সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও মুখ ছিল না। এই দুই কারণেই বাংলায় বিজেপি হেরেছে। ‘আত্মবিশ্লেষণ’ করলেন একুশের বিজেপি প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta)। মঙ্গলবার দলের বৈঠকে এই দুই বিষয়ে নিজের ‘মন কি বাত’ জানিয়েছেন বলে জানালেন বিধাননগরের বিজেপি প্রার্থী।
২০২০ সালের জুন মাসে তৃণমূল ছেড়ে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন সব্যসাচী। বিধাননগরে বিজেপির প্রার্থী হন। কিন্তু হেরে যান। তার পর দলের কর্মসূচিতে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। মঙ্গলবার অবশ্য বিজেপির বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তিনি। ওই বৈঠকে হারের কারণ নিয়ে সব্যসাচী জানান, নেতাদের ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয়েছে সাধারণ মানুষের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ না থাকাও বিপর্যয়ের আরও একটা বড় কারণ বলে মনে করেন তিনি।
তাঁর কথায়, “ভাষা একটা বড় মাধ্যম। সেখানে আমরা যে ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত বা যে ভাষায় আমরা সারাক্ষণ কথা বলি, তার একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল।” তিনি আরও যোগ করেন, “বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এসে অনেক ভাল ভাল কথা বলেছেন। কিন্তু গ্রাম বাংলার মানুষ, সাধারণ মানুষ যেহেতু অন্য ভাষায় কথা বলেন, হয়ত বুঝতেই পারেননি। হয়ত আমাদেরও ব্যর্থতা যে তাঁদের বোঝাতে পারিনি।”
এর পর সব্যসাচী আসেন, একুশের ভোটে বাংলায় মমতার বিরুদ্ধে মুখ প্রসঙ্গে। তাঁর কথায়, “এবার মোদীজি বা অমিতজি বা জেপি নাড্ডা সাহেব, এঁরা কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন এটা সবাই জানত। বাংলায় যেখানে বিপরীত মেরুতে মমতা ব্যানার্জি স্বীকৃত, পরীক্ষিত একজন মুখ্যমন্ত্রী দশ বছরের। কেউ ভাল বলবেন। কেউ খারাপ বলবেন, কেউ বলবেন কাজ পেয়েছি, কেউ বলবেন প্রতিশ্রুতি পেয়েছি কাজ হয়নি। কিন্তু উনি দশ বছর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উল্টো দিকে ফেস আমাদের কে?”
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুন মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন সব্যসাচী। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের একমাস কাটেনি আবার তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই কার্যত ঝুঁকলেন প্রাক্তন বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। দলবদল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিকবার সরব হয়েছিলেন রাজারহাট–নিউটাউনের প্রাক্তন বিধায়ক। বিজেপির টিকিটে বিধাননগরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সব্যসাচী। তবে একসময়ের রাজনৈতিক সতীর্থ সুজিত বসুর কাছে হেরে যান সব্যসাচী। তারপর থেকে অন্তরালে চলে যাওয়া সব্যসাচীকে নিয়ে ঘরওয়াপসির গুঞ্জন উঠেছে।
আরও পড়ুন: তবে কি এই কারণে পুরনো দলে ফিরতে ইচ্ছে করছে রাজীবের? টুইট-কটাক্ষ সৌমিত্রর
এদিকে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই বিজেপির অন্দরে বাড়ছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন দলীয় কর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও উগরে দিয়েছেন মান-অভিমান। যার জেরে বারবার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে বিজেপিকে। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার তিন সদস্যের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি গড়েছে বিজেপি। কমিটির মাথায় রয়েছেন সাংসদ সুভাষ সরকার। অন্য দুই সদস্য হলেন বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী ও রথীন বোস।