Sri Lanka Crisis: বুদ্ধ পূর্ণিমায় উৎসবহীন শ্রীলঙ্কা, আজ রাত থেকেই ফের দেশ জুড়ে কারফিউ
Sri Lanka Crisis: সোমবার রাত থেকেই ফের দেশ জুড়ে কারফিউ জারি করা হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। বুদ্ধ পূর্ণিমায় কোনও উৎসব হল না সেই দেশে।
কলম্বো: ফের দেশ জোড়া কারফিউ-র পথে হাঁটতে চলেছে শ্রীলঙ্কা। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সেই দেশের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টা পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে। অন্যদিকে, এদিনই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার কথা নবনির্বাচিত লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংঘের। চরম অর্থনৈতিক মন্দা এবং রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্য থেকে দেশকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়, সেই বিষয়ে বড় বার্তা দিতে পারেন তিনি, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গত সপ্তাহে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের ইস্তফার পর থেকে গোটা দেশে নজিরবিহীন হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকারপন্থী এবং সরকার-বিরোধীদের সংঘর্ষে ৯ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ২২৫ জন আহত হয়েছিলেন। তারপর থেকে এক সপ্তহের জন্য দেশ জুড়ে কারফিউ জারি করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। তবে, রবিবার বৌদ্ধ অধ্যূষিত দেশে ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ উপলক্ষ্যে এই কারফিউ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। তবে, তা একেবারে তুলে নেওয়া হল কিনা, সেই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করা হলেও, সমস্যা জর্জরিত দেশে অধিকাংশ নাগরিকের মধ্যেই উৎসব পালনের উদ্দীপনার অভাব দেখা গিয়েছে।
তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার ফলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাষ্ট্রপতি গোটবায়া রাজাপক্ষে এবং তাঁর পরিবারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ দেখা গিয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। সরকার বিরোধী আন্দোলনের চাপে গত সোমবার ইস্তফা দিয়েছিলেন গোটবায়া রাজাপক্ষের দাদা তথা শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ। এরপর গত বৃহস্পতিবার, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদে রনিল বিক্রমাসিংঘে-কে নিয়োগ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি গোটবায়া রাজাপক্ষ।
তবে, তাতেও সরকার-বিরোধী ক্ষোভ প্রশমিত করা যায়নি। প্রতিবাদীরা সাফ জানিয়েছেন, যতদিন পর্যন্ত গোটবায়া রাজাপক্ষ রাষ্ট্রপতির চেয়ারে থাকবেন, ততদিন তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এমনকি, নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংঘে-কে রাজাপক্ষ পরিবারের ‘হাতের পুতুল’ বলে কটাক্ষ করেছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বিক্রমাসিংঘে চারজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই রাজাপক্ষদের দলেরই সদস্য। প্রতিবাদী সিংহলিদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষর সঙ্গে রাজনৈতিক চুক্তি করেছেন রনিল বিক্রমাসিংঘে।
রবিবার একাধিক টুইট করে, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংঘে বলেছেন, শীঘ্রই দেশের আর্থিক সংকটের ‘সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা’ দেবেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন, নতুন সরকারের ‘অনেক কিছু করার আছে এবং অনেক কিছু আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আমরা সেই বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। নিশ্চিত থাকুন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেগুলি সমাধান করা হবে’।
এর মধ্যে, রবিবার (১৫ মে) ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জানিয়েছিল, আগামী ১৮ মে শ্রীালঙ্কায় হামলা চালাতে পারে তামিল টাইগারদের একটি দল। এলটিটিই-এর কয়েকজন পুরোনো ক্যাডার এই লক্ষ্যে ভারতের তামিলনাড়ুতে সমবেত হয়েছে। প্রথমে এই প্রতিবেদন মানতে না চাইলেও, পরে শ্রীলঙ্কা সরকার জানিয়েছে, এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বিষয়ে ‘যথাযথভাবে তদন্ত করা হবে’ এবং দ্বীপরাষ্ট্রের ‘নিরাপত্তা জোরদার’ করা হচ্ছে।