কখনও গরম, কখনও বৃষ্টিভেজা আবহাওয়ায় (Humid Weather) ত্বকের অবস্থা দফারফা। ক্লান্ত, চ্যাটচ্যাটে ত্বকের জেরে নাজেহাল পরিস্থিতি। আর্দ্র ও সুস্থ ত্বক (Healthy Skin) কখনও একসঙ্গে যায় না। বাতাসে বেশি পরিমাণ আর্দ্রতার মাত্রার কারণে ঘাম নির্গত হয় বেশি। তাতে ত্বকের সেবেসিয়াস গ্রন্থিগুলি গরমে কারণে অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করে। এতে ত্বককে আর্দ্র ও তৈলাক্ত করে তোলে। সব মিলিয়ে ত্বকের ছিদ্রগুলির মুখ আটকে যায়। তাতে ব্রণের (Acne) প্রবণতা বাড়ে। ন্যাচারাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের একটি গবেষণা অনুসারে, বিভিন্ন মানুষের ত্বকের ধরন আলাদা। সেই অনুযায়ী ব্রণের কারণও আলাদা হয়। যেমন বয়স, লিঙ্গ, অর্থনৈতিক কারণ, জেনেটিক, স্থূলতা, ত্বকের ধরন, মহিলাদের পিরিয়ডের জন্য, অপুষ্টি, ধূমপান করা, সঠিক প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার না করা, ইলেকট্রনিক আইটেম, ঘুমের গুণমান ও মানসিক স্ট্রেসের কারণে ব্রণের সম্ভাবনা হতে পারে।
এছাড়া তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি, বায়ুদূষণ, ক্লোরিনযুক্ত রাসায়নিকের কারণে ত্বকের উপর ছোট ও বড় মাপের ব্রণ সৃষ্টি হয়। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও সকলের একটাই প্রশ্ন এই বিরক্তিকর ব্রণ প্রতিরোধ করা যায়? ডার্মালজিস্টদের মতে, আর্দ্র আবহাওয়ায় ত্বকের মধ্যে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। আর্দ্রতা ত্বকের মধ্যে বেশি মাত্রায় আর্দ্র করে তোলে। এতে ছিদ্রগুলি উন্মুক্ত করতে ও অতিরিক্ত তেল উত্পাদন বৃদ্ধি করতে জোড় করে। তাতে ছিদ্রগুলির মুখ বন্ধ হয়ে যায়। ব্রেকআউট ও ব্রণের সৃষ্টি হয়। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি মাত্রায় থাকতে ঘামকে বাস্পীঙূক হতে দেয় না। যার ফলে ব্রণ ও ব্রেকআউট তৈরি হয়।
ব্রণ ও ব্রেকআউট থেকে মুক্তি পেতে কী কী করণীয়, তা জানুন…
ত্বককে ব্রণ মুক্ত করতে আর্দ্র আবহাওয়ায় ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া আবশ্যিক। স্বাস্থ্যকর খাবার ও প্রতিদিনের ডায়েটে ত্বক যাতে হাইড্রেটেড থাকে, তেমন খাবার খাওয়া উচিত। ব্রণ সৃষ্টি করে অমন খাবার এড়িয়ে চলুন। এছাড়া ভারী ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম থেকে জেল ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজারগুলিকে পরিবর্তন করলে ত্বক থাকে সুস্থ।
নিয়মিত মুখ পরিস্কার করা, ত্বককে টোনড করা ও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখা আবশ্যিক। মুখে বারবার স্পর্শ করবেন না। বাইরের জীবাণ থেকে দূরে রাখতে বালিশের কভার পরিবর্তন করুন। পারলে ঘন ঘন মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন। ত্বকের যত্ন ও সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য এই নিয়মগুলি সঠিক উপায়ে মেনে চলতে হবে।
ব্রণর প্রবণতা যাদের রয়েছে, তাদের ভারী ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা এড়িয়ে চলতে হবে। অ্যালকোহল, সুগন্ধি, অতিরিক্ত তেল ও প্যারাবেন সমৃদ্ধ পণ্যগুলি থেকে ত্বকের মধ্যে জ্বালাভাব ধরে। ক্লিনজিং হল স্কিন কেয়ার পদ্ধতিরে প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
ত্বকের যত্নের পাশাপাশি ডায়েটের দিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। গ্লুটেন, দুগ্ধজাত দ্রব্য, চকোলেট এবং পরিশ্রুত কার্বোহাইড্রেট যেমন সাদা রুটি এবং পেস্ট্রি ব্রণ ব্রেকআউটের কারণ হতে পারে। সোডা, চিনি-মিষ্টি পানীয়, রেড মিট এবং প্রক্রিয়াজাত মাংসের মতো প্রদাহজনক খাবারগুলিও ব্রণ উৎপন্নকারী এনজাইমগুলিতে যোগ করে।
পর্যাপ্ত ঘুম ও ফিট শরীরের জন্য নিয়মিত যোগব্যায়াম ও ওয়ার্কআউট করা প্রয়োজন। মন, শরীর ও আত্মাকে একত্রিত করার জন্য স্বাস্থ্যকর বিকল্পের প্রয়োজন। তাই রোজ নিয়ম মেনে ব্যায়াম করা উচিত।