Cockroach: কখন ভেবেছেন আরশোলা বিলুপ্ত হয়ে গেলে কী হবে? যা তথ্য সামনে এল ধারণারও বাইরে
'প্রসেডিং অফ দ্যি ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স' (PNAS)-এর প্রকাশিত এক গবেষণা জানা গিয়েছে, আরশোলার শরীরে থাকে ব্লাটাব্যাকটেরিয়াম নামের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেনকে ভেঙে পুষ্টিতে পরিণত করে—যা আরশোলাকে যে কোনও প্রতিকূল পরিবেশেও টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।

আরশোলা, নামটা শুনেই কারও গা ঘিনঘিন করে, কেউ আবার ভয় পান। রান্নাঘরের এক কোণ থেকে অন্য কোণে দৌড়ে বেড়ায় এই আরশোলা। লুকিয়ে থাকে ময়লা আবর্জনার পাশে। আর আরশোলা তাড়াতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যায় সকলের। পৃথিবী থেকে আরশোলা যদি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তাহলে হয়ত অনেকেই খুশি হয়। তবে, ভেবে দেখেছেন কখনও আরশোলা একদম না থাকলে কী হতে পারে? একটি গবেষণা থেকে যা তথ্য সামনে এসেছে তা জানলে রীতিমতো চমকে যাবেন।
‘প্রসেডিং অফ দ্যি ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’ (PNAS)-এর প্রকাশিত এক গবেষণা জানা গিয়েছে, আরশোলার শরীরে থাকে ব্লাটাব্যাকটেরিয়াম নামের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেনকে ভেঙে পুষ্টিতে পরিণত করে—যা আরশোলাকে যে কোনও প্রতিকূল পরিবেশেও টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে প্রকৃতির পুষ্টিচক্রকেও সচল রাখে। তাই তাদের যদি বিলুপ্তি হয়, তবে নাইট্রোজেন ভাঙার এই চক্রও ভেঙে পড়বে।
জঙ্গল পরিচ্ছন্ন করে
অনেকেই হয়ত জানেন না বাস্তবে কিন্তু আরশোলা থাকে গভীর জঙ্গলে, মানুষের বাড়িতে নয়। তারা শুকনো পাতা, পচা কাঠ, মৃত উদ্ভিদসহ নানা জৈব পদার্থ চিবিয়ে ক্ষুদ্র পুষ্টিকণায় পরিণত করে। তাই যদি আরশোলা আবিলুপ্ত হয় তবে বনাঞ্চলে জৈব বর্জ্য জমবে। পচনক্রিয়া মন্থর হবে। তার জেরে মাটির উর্বরতা কমে যাবে। গাছপালা দুর্বল হয়ে পড়বে। ফলে বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
খাদ্যশৃঙ্খলের অপরিহার্য অংশ
টিকটিকি, ব্যাঙ, পাখি, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীসহ বহু জীব আরশোলার উপর নির্ভর করে। আরশোলা না থাকলে খাদ্যাভাব দেখা দেবে। প্রতিযোগিতা বাড়বে। অনেক প্রজাতি বিলুপ্তির পথে যাবে। আর তাতে ধীরে-ধীরে ভেঙে পড়বে পুরো খাদ্যশৃঙ্খল।
মাটির নীরব প্রাণসঞ্চারক
আরশোলা মৃত উদ্ভিদকে ভেঙে মাটির সঙ্গে মেশায়। এতে মাটির জৈবিক গুণ বেড়ে যায়। অসংখ্য ক্ষুদ্র জীবের জন্য উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে। তাই আরশোলা বিলুপ্ত হলে বহু অঞ্চলের মাটি নষ্ট হতে শুরু করবে। গাছপালা দুর্বল হবে।
তাই যাঁরা ভাবেন আরশোলা না থাকলে ভাল হত, তাঁদের মনে রাখতে হবে আরশোলাহীন পৃথিবী—পরিষ্কার নয়, বরং দুর্বল। এদের বিলুপ্তি পৃথিবীকে হয়ত ধ্বংস করবে না, কিন্তু ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে।
