ওড়িশা বললেই প্রথমেই মাথায় আসে পুরীর সমুদ্র আর জগন্নাথ দেবের মন্দির। তবে পুরীর জগন্ননাথ দেবের মন্দিরের জন্য ওড়িশা বেশ বিখ্যাত। কিন্তু এছাড়াও ওড়িশার এমন কিছু জায়গা রয়েছে যা আপনাকে সমুদ্র উপকূলে থেকেও পাহাড়ের ভ্রমণ করবে। এই ওড়িশা রাজ্যে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যা সত্যি নজর কাড়া। তাই ওড়িশা বেড়াতে গেলে কোন কোন জায়গা গুলিকে বাকেট লিস্টে রাখবেন তা জেনে নিন।
দারিংবাড়ি
কাশ্মীরে অবস্থিত না হয়েও দারিংবাড়িকে ওড়িশার কাশ্মীর বলা হয়। ওড়িশার কন্ধমাল জেলায় অবস্থিত দারিংবাড়ি। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত ওড়িশার এই কাশ্মীর। পাইন আর কফি গাছে ঘেরা এই দারিংবাড়ি। শীতকালে শূন্য ডিগ্রিতেও নেমে যায় তাপমাত্রা এবং কোনও কোনও জায়গায় তুষারপাতও হয়। এই কারণেই এই জায়গাকে বলা হয় ওড়িশার কাশ্মীর। লুডু জলপ্রপাত, দাসিংবাড়ি জলপ্রপাত, মিদুবান্ডা জলপ্রপাত, এবং পুতুদি জলপ্রপাত নামক একাধিক দর্শনীয় স্থান ও জলপ্রপাত রয়েছে এই অঞ্চলে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন মশলার বাগান।
ভিতরকণিকা
ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য হল ওড়িশার ভীতরকনিকা, যা ওড়িশার কেন্দ্রপদ জেলায় প্রায় ৬৫০ বর্গ স্কোয়ার জুড়ে অবস্থিত। একে ওড়িশার মিনি অ্যামাজনও বলা হয়। বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতি যেমন নোনা জলের কুমির, জলের টিকটিকি এবং কয়েকটি প্রজাতির অজগরের বাসস্থান হল এই ভিতরকণিকা।
চিল্কা হ্রদ
ভারত তথা এশিয়ার বৃহত্তম নোনা জলের হ্রদ হল চিল্কা। এখানে গেলে আপনি ডলফিন এবং আরও বিভিন্ন প্রজাতির বক ও পাখি দেখতে পাবেন। এছাড়াও ওড়িশার এই হ্রদের মাঝে রয়েছে একটি মন্দির।
গোপালপুর সমুদ্র সৈকত
ওড়িশা বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত হওয়ায় একাধিক সমুদ্র সৈকত রয়েছে এই রাজ্যে। সাধারণত ওড়িশা বেড়াতে গেলেই মানুষ পুরীর সমুদ্র সৈকত উপভোগ করে। কিন্তু যদি অফবিট সমুদ্র সৈকত খোঁজেন, তাহলে চলে আসতে পারেন গোপালপুর সমুদ্র সৈকতে। ওড়িশার সবচেয়ে সুন্দর ও পরিষ্কার সমুদ্র সৈকত হল এই গোপালপুর সমুদ্র সৈকত। এটি ভারতের প্রথম সমুদ্র সৈকত যেখানে এখন ইতালীয় ভদ্রলোক রিসোর্ট খোলেন। পূর্ব দিকে অবস্থিত হওয়ায় এই সমুদ্র সৈকত সূর্যোদয় দেখার জন্য আদর্শ।
সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান
ওড়িশার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে প্রথম সারিতে আসে সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। ভারতের সপ্তম বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান এটি। ওড়িশার বারিপদায় অবস্থিত এই সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল এখানে লাল রেশমেরে গাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়্যাল বেঙ্গল থেকে শুরু করে হাতি, হরিণ, বানর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এই জাতীয় উদ্যানের মধ্যে রয়েছে জলপ্রপাতও। পাহাড়ের সাথে জলপ্রপাতের দৃশ্য অন্বেষণ করতে এবং তা ক্যামেরা বন্দি করতে ছোট্ট ট্রেকও করতে পারেন এই অঞ্চলে।
আরও পড়ুন: হিমালয়ের আসল সৌন্দর্য দেখতে এই সুন্দর উপত্যকায় একবার অন্তত যেতেই হবে!