Authentic Durga Puja: পায়ে হেঁটে প্যান্ডেল হপিং নয় এবার পুজো দেখুন গ্রাম ঘুরে, রইল কিছু ঠিকানা
Durga Puja Parikrama 2022: রাত জেগে ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড়, ভোরে বাসি চাউমিন বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খাওয়ার পরিবর্তে অনেকেই খাঁটি গ্রামের পুজো দেখতে পছন্দ করেন
পুজো আসে পুজো যায়, তবে প্রতি বছরই পুজোয় একটা নতুন গন্ধ পাওয়া যায়। পুজোর সঙ্গে জুড়ে থাকে অনেক স্মৃতি, অনেক নস্ট্যালজিয়া। নীল আকাসে পেঁজা তুলোর ভেলা, মাঠ ভরা ধান, সোনালী রোদ, উঠোনে জুড়ে থাকা শিউলি, সাদা কাশের বন জানান দেয় মা আসছে। পুজোর প্ল্যানিং চলতে থাকে বছরভর। পুজোর পাঁচদিন কোথায় আড্ডা হবে, কোন দিন কেমন পোশাক থাকবে, পুজোর মেন্যু, ঘুরতে যাওয়া, প্যান্ডেল হপিং আর রাত জেগে ঠাকুর দেখার প্ল্যানিংয়ে উপচে পড়ে হোয়্যাটস অ্যাপ গ্রুপ। পুজো মানেই আলোর রোশনাই, জমজমাট মজলিশ। ভিড়ের মাঝে কখনও নিজের সঙ্গে হারিয়ে যেতে পছন্দ করে। কাশবনের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছে ট্রেন, দূর থেকে দাঁড়িয়ে দুই ভাইবোন রেলগাড়ি দেখছে- এমন দৃশ্য তো অনেকেরই চোখে ভাসে। কাশের মন, মাটির রাস্তা, ঢাকের বাদ্যির মধ্যে পুজোর সেই পুরনো আমেজ নিতে অনেকেই চান।
রাত জেগে ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড়, ভোরে বাসি চাউমিন বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খাওয়ার পরিবর্তে অনেকেই খাঁটি গ্রামের পুজো দেখতে পছন্দ করেন। যেখানে নেই থিমের কোনও বাড়াবাড়ি, সাদামাটা শাড়ি পরানো প্রতিমা, আমপাতা আর কদমফুলে মণ্ডপসজ্জা, বাড়িতে গাওয়া ঘি-তে বানানো লুচি, গজার গন্ধ, কলাপাতায় প্রসাদ খাওয়া, ঠাকুরবাড়ির দালানে বসে আড্ডা – এমন পুজোর অনুভূতি পেতে কার না ভালোলাগে। যদিও এই সব গ্রামীন পুজোর সংখ্যা এখন আগের তুলনায় অনেকখানি কমে গিয়েছে। তবুও এমন পুজো কি আপনিও দেখতে চান? রইল রয়েকটি সন্ধান।
পূর্ব বর্ধমানের অভিজাত গ্রাম আমাদপুর। সেখাকার ঐতিহ্যমন্ডিত বাঘ বাড়ির পুজো, প্রাচীন ভগ্নপ্রায় এই বাড়ির ফটকে রয়েছে ২ টি বাঘ। ভিতরের ঠাকুর দালানে দেবী প্রতিমা দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। প্রতি বছর অনেকেই আসেন এই পুজো দেখতে। ধানক্ষেতের মধ্যে দিয়ে রাস্তা, মনোরম আবহাওয়াতে পুজোর আমেজ নিতে আসতে পারেন এখানে। কলকাতা থেকে দূরত্ব সামান্যই। আসতে পারেন ট্রেনে। পাশেই রয়েছে চৌধুরী জমিদার বাড়ি। পুরনো দিনের সেই বাড়ি, ফটক ঘুরে দেখতে বেশ লাগবে। এইখানে রয়েছে একটি হোম স্টে। যদিও পুজোর সময় সেই হোম স্টে বন্ধ থাকে। বছরের অন্য সময়ে সেখানে থাকতে পারেন। বর্ধমানের পাশেই রয়েছে হুগলি। হুগলির দশঘড়া ঘামের বিশ্বাস বাড়ির পুজো বেশ বিখ্যাত। এই পুজোর টানে প্রতি বছর প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। নাটমন্দির, পুরনো দিনের ঠাকুরদালান, বাড়ির পাশের বড় দীঘি- ফিরিয়ে দেবে পুরনো দিনের সেই সব স্মৃতি। এছাড়াও টেরাকোটার নাটমঞ্চ, দোলমঞ্চ, রাসমঞ্চ, গোপীনাথ জিউয়ের মন্দিরও দেখবার মতো। এই বাড়ির প্রতিমার চার হাত। জয়দুর্গা মায়ের একহাতে থাকে ত্রিশূল,অন্যহাতে সাপ,আর বাকি দু-হাতে ঢাল-তলোয়ার।তবে এছাড়াও আরও একটা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়-মা দুর্গার দুপাশে থাকে,কার্তিক(বামপাশে),গণেশ(ডানপাশে),এবং লক্ষ্মী-সরস্বতী থাকে একদম দু প্রান্তে।
বিশ্বাস পাড়া পেরিয়ে যেতে পারেন রায় বাড়িতেও। রায়বাড়ির তোরণদ্বার, দাতব্য চিকিৎসালয়, দুর্গাবাড়ি দেখবার মতো। পুরনো দিনের পুজোর সেই দিনগুলিতে ফিরে যেতে চাইলে এবছর হোক ব্যাতিক্রমী। ঘুরে দেখতে পারেন ঘরের কাছেই এই সব পুজো।