এই বাঁধের পাশে দাঁড়িয়ে যদি আপনি বোতল থেকে জল ফেলতে যান, তাহলে দেখবেন জল নীচে না পড়ে উপরে ভাসতে শুরু করেছে। অনেকেই ভুতূড়ে কর্মকাণ্ড ভেবে ভুল করে থাকেন। এমনটি হওয়ার আসল কারণ হল সেখানে মধ্যাকর্ষণ শক্তির অনুপস্থিতি। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে মধ্যাকর্ষণ শক্তি তো কেবলমাত্র মহাশূন্যে কাজ করে। জানলে অবাক হবেন, পৃথিবীর এমন কয়েকটি স্থান আছে যেখানে মধ্যাকর্ষণ শক্তি হার মেনে যায়।
ঠিক যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুভার ড্যাম নামক বাঁধ। মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই বাঁধটি। বিশ্বে আশ্চর্যজনক স্থানের অভাব নেই। হুভার ড্যাম বাঁধে গেলে আপনি যারপরনাই অবাক হয়ে যাবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ও অ্যারিজোনার সীমান্ত এলাকায় কলোরাডো নদীর ওপরে গড়ে উঠেছে হুভার বাঁধ। বিভিন্ন রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, এই বাঁধের কাঠামো এমন একটি শক্তিশালী আপড্রাফ্ট সৃষ্টি করেছে, যার ফলে এখানকার বায়ু সব কিছুকে ওপরের দিকে ধাক্কা দিতে থাকে।
এই বাঁধের আকৃতি ধনুকের মতো। যে কারণে সেখানকার বাতাস জলকেও ধাক্কা দিয়ে ওপরের দিকে ছুড়ে দেয়। এমনকি এই স্থানে কোনও বস্তুকে টস করা হলেও, ওই বস্তু বাঁধের দেওয়ালের সমান্তরালে লেগে যায়। রহস্যময় এ দৃশ্যের স্বাক্ষী হতে পর্যটকরা ভিড় জমান হুভার বাঁধে। সেখানে ঘুরতে গিয়ে হাতেনাতে তারা সত্যতা যাচাই করেও দেখতে পারেন। এই বাঁধটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ হাইড্রোইলেকট্রিক ইনস্টলেশান।
প্রায় ৯০ বছর নির্মাণ করা হলেও আজও সক্রিয় আছে এই বাঁধটি। ২৩৩৪ কিলোমিটার লম্বা ও ৭২৬ ফুট উঁচু এই বাঁধটির পরিধি ৬৬০ ফুট। দু’টি ফুটবল স্টেডিয়ামের সমান এই বাঁধ। ১৯৩১-১৯৩৬ সালের মধ্যে নির্মিত বাঁধটির নামকরণ করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩১তম রাষ্ট্রপতি হার্বার্ট হুভারের নামে। গঠনগত দিক দিয়ে এটি বিশ্বের সর্বাধিক অভিনব বাঁধ।
প্রকৃতি প্রেমী হলে আমেরিকা ঘুরতে গিয়ে হুভার বাঁধ দেখতে ভুলবেন না। জানলে অবাক হবেন, আধুনিক পৃথিবীর ৭টি ইঞ্জিনিয়ারিং আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম এই বাঁধটি। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কাছাকাছি অবস্থান বাঁধটির। তাই একসঙ্গে দুটি জায়গাই ঘুরে দেখতে পারবেন। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের অতিপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন আপনাকে মুগ্ধ করবে, হুভার বাঁধের এই আশ্চর্যজনক ঘটনা আপনাকে অবাক করে দেবে। সব মিলিয়ে দেখলে, আপনার আমেরিকার ভ্রমণ সাধারণ বিদেশ ভ্রমণের চেয়ে অনেক সুখকর হয়ে উঠতে পারে।