Glenary’s: ‘চা-এ পে চর্চা’য় ছেদ দার্জিলিংয়ের ‘গ্লেনারিজ়’-এ? পুজোর আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা-পর্যটন ঘিরে শঙ্কা
Darjeeling Tea: চা বাগানের কর্মীদের পুজোর বোনাসকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার প্রতিবাদে এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ করতে চলেছে ‘গ্লেনারিজ়’
‘দীপুদা’ দীঘা-পুরী-দার্জিলিংপ্রিয় বাঙালির তালিকা থেকে এবার কি বাদ পড়তে চলেছে দার্জিলিংয়ের ‘গ্লেনারিজ়’কে কেন্দ্র করে ‘চা-এ পে চর্চা’? হঠাৎ কেন এমন ‘কু’-কথা, মানে কেন আচমকা এহেন আশঙ্কা তথা সন্দেহ? কারণ চা বাগানের কর্মীদের পুজোর বোনাসকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার প্রতিবাদে এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ করতে চলেছে ‘গ্লেনারিজ়’। আর সেই সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতি হিসেবে গ্লেনারিজ় থেকে দার্জিলিং-চা বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ডস।
বাঙালির কাছে পাহাড় মানেই দার্জিলিং। পাহাড় বেয়ে সর্পিল রাস্তা, দু’ধারে চা-বাগান আর সঙ্গে এককাপ খাঁটি ধোঁওয়া ওঠা দার্জিলিং চা—তবেই না ‘দার্জিলিং জমজমাট’ হয়। দার্জিলিং গিয়েছেন, অথচ একবার গ্লেনারিজ়ে ঢুঁ মারেননি, এমন মানুষ নেই বললেই চলে। গ্লেনারিজ়ে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে-দেখতে গরম চায়ে চুমুক… এমন স্বর্গীয় অনুভূতি কেউ কি আর মিস করতে চায়? তবে এবার ছেদ পড়তে চলেছে সেই অভ্যাসে। ১১০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দার্জিলিং চা-এর বিক্রি বন্ধ করলেন গ্লেনারিজ় কর্তৃপক্ষ। চা বাগানের কর্মীদের বকেয়া বোনাসের সূত্রেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দার্জিলিংয়ের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তথা গ্লেনারিজ-কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ডস। চা-বাগানের কর্মীদের পুজোর বোনাস প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই এমন পদক্ষেপ করতে চলেছে গ্লেনারিজ়। গ্লেনারিজ় কর্তৃপক্ষের দাবি, পুজোর আগেই চা-বাগানের সব কর্মীকের পুজোর সম্পূর্ণ বোনাস মিটিয়ে ফেলতে হবে।
পুজোয় চা-বাগানের কর্মীদের ২০% বোনাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তা দেওয়া হবে দুই দফায়। প্রথম দফায় ১৫ শতাংশ আর ৫ শতাংশ পুজোর পর দেওয়া হবে। অর্থাৎ দুর্গাপুজোয় ১৫ শতাংশ আর বাকি ৫ শতাংশ দেওয়া হবে কালীপুজোর পর। এই সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করেছেন অজয় এডওয়ার্ডস। প্রতিবাদ হিসেবে গ্লেনারিজ় থেকে দার্জিলিং-চা বিক্রির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ইতিহাসে এই প্রথমবার। গ্লেনারিজের নামের সঙ্গে জড়িয়ে দার্জিলিং-এর চা। পুজোর আগে এমন সিদ্ধান্তে যে প্রভাব পড়তে চলেছে পর্যটন শিল্পে, তা বলাই বাহুল্য।
দার্জিলিংয়ের আইকনিক ল্যান্ডমার্ক হল গ্লেনারিজ়। একশো বছরেরও বেশি পুরনো গ্লেনারিজ়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ আমলের আগে থেকেই। তবে প্রথম থেকেই এর নাম গ্লেনারিজ় ছিল না। তখন পরিচিত ছিল ‘ভাদো’ বলে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নাম বদলে যায় গ্লেনারিজ়-এ। দোকানের মালিকানায় একাধিকবার পরিবর্তন হলেও খাবারের গুণগত মানে কখনও পরিবর্তন হয়নি। শুধুমাত্র গ্লেনারিজ়ে ব্রেকফাস্ট সারবেন বলেই প্রচুর মানুষ দার্জিলিংয়ে আসেন। দার্জিলিং-চায়ের চাহিদা সবথেকে বেশি থাকলেও স্যান্ডউইচ, পিৎজ়া, কেক, রোল এসব তো আছেই। গ্লেনারিজ়ের ব্যালকনিতে বসে দার্জিলিং চায়ের স্বাদ উপভোগ করতেই বার বার ছুটে আসেন পর্যটকেরা। সেই স্বপ্নে আপাতাত ইতি। নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় গ্লেনারিজ কর্তৃপক্ষ।