World’s Highest Shiva Temple: বিশ্বের উচ্চতম শিব মন্দিরে টানা ৬ মাস পুজো বন্ধ থাকে, দেশের কোথায় অবস্থিত জানেন?
Tungnath: বিশ্বের উচ্চতম শিবমন্দির যখন, এর সঙ্গে পুরাণের যোগ থাকতেই হবে। পুরাণ অনুযায়ী, এই শিবমন্দির স্থাপন করেছিলেন অর্জুন। এই মন্দিরে পুজো হয় শিবের হৃদয় ও বাহু। শোনা যায়, এই মন্দিরে তপস্যা করেছিলেন লঙ্কাপতি রাবণ।
শ্রাবণ মাস হল শিবের মাস। এ মাস জুড়ে শিবের আরাধনা করা হয়। কিন্তু বিশ্বের উচ্চতম শিবমন্দির দেশের কোথায় অবস্থিত, জানেন? পঞ্চকেদারের তৃতীয় কেদার হল ‘তুঙ্গনাথ’। এই তুঙ্গনাথই বিশ্বের উচ্চতম শিব মন্দির, যা উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় অবস্থিত। মন্দাকিনী ও অলকানন্দা উপত্যকার উপর ১২,৮০০ ফুট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তুঙ্গনাথ। সম্প্রতি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই (ASI) তুঙ্গনাথের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্বের উচ্চতম শিবমন্দির ইতিমধ্যে ৫-৬ ডিগ্রি হেলে পড়েছে। এমনকী মন্দির চত্বরের ছোট-ছোট কাঠামোগুলো প্রায় ১০ ডিগ্রি হেলে গিয়েছে। তাই সময় থাকতে ঘুরে আসুন তুঙ্গনাথ থেকে।
বিশ্বের উচ্চতম শিবমন্দির যখন, এর সঙ্গে পুরাণের যোগ থাকতেই হবে। পুরাণ অনুযায়ী, এই শিবমন্দির স্থাপন করেছিলেন অর্জুন। এই মন্দিরে পুজো হয় শিবের হৃদয় ও বাহু। শোনা যায়, এই মন্দিরে তপস্যা করেছিলেন লঙ্কাপতি রাবণ। এমনকী রাবণকে বধ করার পর রামচন্দ্রও তপস্যা করেছিলেন তুঙ্গনাথে বসে। এমন অনেক পুরাণ কাহিনি রয়েছে তুঙ্গনাথকে ঘিরে। গল্প রয়েছে চন্দ্রশিলারও। তুঙ্গনাথের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল এই চন্দ্রশিলা।
ট্রেক করে পৌঁছাতে হয় তুঙ্গনাথ-চন্দ্রশিলায়। চোপতা থেকে শুরু হয় তুঙ্গনাথ যাত্রা। চোপতা থেকে ঘন সবুজ বুগিয়ালের পথ ধরে যেতে হয় তুঙ্গনাথে। চোপতা উত্তরাখণ্ডের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানকার সৌন্দর্যের টানে দেশ বিদেশ থেকে বহু পর্যটকেরা আসেন চোপতা। চোপতার পর পাইন, ওক, ম্যাপেল, রডোডেনড্রনের পথ ধরে হাঁটতে হয় তুঙ্গনাথের উদ্দেশ্যে। সবুজ বুগিয়ালের পাশাপাশি সঙ্গ দেয় দূরের তুষারাবৃত চূড়া। চোপতা থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটারের হাঁটা পথ এই তুঙ্গনাথ।
কেদারনাথের মতোই গ্রানাইট পাথরে তৈরি তুঙ্গনাথ। মন্দিরের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে সুন্দর কারুকার্য। মন্দিরের চূড়ায় রয়েছে তামার পাত। মন্দিরের সামনে রয়েছে পঞ্চেশ্বরী মাতা, ভগবান বিষ্ণু, গৌরীশংকর, নন্দীদেব, ভৈরবনাথ। মন্দিরের ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে শিবের লিঙ্গ মূর্তি, কালভৈরব, ঋষি বেদব্যাস ও আদিশংকরাচার্যের তৈলচিত্র।
গ্রীষ্ম ও শীতেই সবচেয়ে বেশি ট্রেক করা হয় তুঙ্গনাথে। বর্ষার সময় এই ট্রেক এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। তবে, পুজোর সময় যদি আপনি তুঙ্গনাথ যেতে চান, তাহলে সে সুযোগ রয়েছে এখানে। পর্যটকদের জন্য নভেম্বর মাস পর্যন্ত খোলা থাকে তুঙ্গনাথের দরজা। তারপর আবার শীতে শুরু হয় তুঙ্গনাথের ট্রেক। শীতকালে বরফের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে হয় চন্দ্রশিলার উদ্দেশ্যে। যদিও ঠান্ডার জন্য তুঙ্গনাথে টানা ছ’মাস পুজো বন্ধ থাকে।