ভারতের অন্যতম সেরা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনিই। উদার অর্থনীতির ভাবনা তাঁরই মস্তিষ্ক প্রসূত। তিনি মনমোহন সিংহ। পঞ্জাব বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন মনমোহন সিংহ। এরপরে কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয় এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের বাকিরা কতটা শিক্ষিত জানেন?
১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পঞ্জাবি শিখ পরিবারে বর্তমান পাকিস্তানে জন্ম নেন তিনি। তাঁর বাবা পেশায় ব্যবসায়ী গুরমুখ সিংহ কোহলি এবং মা অমৃত কৌর। ১৯৫৮ সালে গুরশরণ কৌর সিংহকে বিয়ে করেন মনমোহন। পেশায় ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন মনমোহন জায়া। লেখিকা হিসাবেও পরিচিত ছিল।
মনমোহন সিংহ এবং গুরশরণ কৌর সিংহের তিন সন্তান তিন জনেই কন্যা। অমৃত সিংহ, দমন সিংহ এবং উপিন্দর সিংহ। নিজ নিজ ক্ষেত্রে এঁরা প্রত্যেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত।
মনমোহনের বড় কন্যা উপিন্দর সিংহ পরিচিত ইতিহাসবিদ রূপে। উপিন্দর সিংহ দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। এছাড়াও ইতিহাসে স্নাতকোত্তর এবং এম.ফিল করেছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বড় কন্যা বিয়ে করেন দর্শনের অধ্যাপক বিজয় তানখাকে। তাঁদের দুই ছেলে আছে।
মনমোহন সিংহের মেজো কন্যার নাম দমন সিংহ। স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেন, সেন্ট স্টিফেন কলেজ, দিল্লি থেকে। ইনস্টিটিউট অফ রুরাল ম্যানেজমেন্ট, আনন্দ, গুজরাট থেকে পড়াশোনা করেন। দমন সিংহ লেখিকা হিসাবে পরিচিত। আইপিএস অফিসার অশোক পটনায়ককে বিয়ে করেন তিনি।
মনমোহনের কনিষ্ঠতম কন্যা অমৃত সিংহ। অমৃত আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের আইনজীবী। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে ছোট কন্যা এখনও অবিবাহিত। প্রসঙ্গত, রাজনীতিতে যোগদানের আগে তিনি ভারত সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর এবং প্ল্যানিং কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ সহ সরকারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৮৭ সালে মনমোহন সিংহকে 'পদ্মবিভূষণ' পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
২০০৪ সালে, ডঃ মনমোহন সিংহ ভারতের ১৩ তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দ্বায়ভার গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন দেশের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নেতৃত্বে ভারত অর্থনৈতিকভাবে বিকশিত হয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভাবমূর্তি মজবুত হয়ে ওঠে। তাঁর অবদানের জন্য ১৯৯৩ এবং ১৯৯৪ সালে 'বর্ষের অর্থমন্ত্রী' উপাধিতে ভূষিত হন মনমোহন। বৃহস্পতিবার ৯২ বছর বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।