ছটপুজো হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র একটি উত্সব। এইদিন সাধারণত মহিলারা চওড়া করে সিঁদুর পরেন। ছট উত্সবে সামিল সকল মহিলারাই নাকে সিঁদুর লাগান। ছট উপলক্ষে নাক পর্যন্ত সিঁদুর লাগানোর রীতি রয়েছে। একে বলে সিঁদুর জোয়ার।
কোথাও কোথাও এমন রীতিকে ধসাও বলা হয়। আসলে এইভাবে সিঁদুর পরার পিছনে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্বাস। এত সিঁদুরের নিজস্ব একটি গুরুত্ব রয়েছে। নাক পর্যন্ত সিঁদুর লাগানোর রহস্যটা কী. তা জানা অত্যন্ত প্রয়োজন।
নাক থেকে সিঁদুর পরার তাত্পর্য: ছট উপলক্ষে যে সব মহিলারা উপবাস রাখেন, তাদের চাহিদা অনুযায়ী নাকে বিশেষভাবে সিঁদুর লাগনো হয়। এই বিশ্বাসেই বলা হয়, মাথার সিঁথিতে সিঁদুর স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা করে পরা হয়। পরিবারের সুখ, সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে দাঁড়ায় সিঁদুর।
সিঁদুর সুহাগের প্রতীক। যে মহিলারা সিঁদুর লুকিয়ে রাখেন বা সিঁথিতে পরেন না, তাদের স্বামীরা সমাজে অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে। জীবনে উন্নত করার কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। এতে সাংসারিক জীবন আরও সংকীর্ণ হয়ে যায়। এই কারণেই মহিলারা ছটের সময় নাক পর্যন্ত লম্বা করে সিঁদুর পরেন।
নাক পর্যন্ত সিঁদুর পরলে স্বামীর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়। ছটপুজোয় সাধারণ কোনও সিঁদুর পরা হয় না। মোট ৩ ধরনের সিঁদুর ব্যবহার করা হয়।
লাল সিঁদুর- দেবী পার্বতী ও সতীর শক্তির প্রতীক হিসেবে লাল রঙের সিঁদুর ব্যবহার করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে লাল রঙের সিঁদুর পরলে স্বামীর আয়ু দীর্ঘ হয়। প্রসঙ্গত, ভারতীয় বিবাহিত মহিলারা এই লাল রঙের সিঁদুরই পরেন।
কমলা বা হলুদ সিঁদুর: ছট পুজোর সময় হলুদ বা কমাল রঙের সিঁদুর সিঁথিতে পরেন। এই রঙের সিঁদুর নাক থেকে কপাল পর্যন্ত লাগানোর বিধান। উপবাসকারী মহিলারা এই রঙের সিঁদুর পরে থাকেন। বিশ্বাস করা হয়, বিবাহিত মহিলাদের চাহিদা পূরণ করার জন্য এই সিঁদুর পরার নিয়ম রয়েছে। কথিত আছে, এই রঙের সিঁদুর ষষ্ঠীর দেবী, সংজ্ঞার প্রতিরূপ ছায়া, মায়া ও ভগবান সূর্যের কৃপা বজায় থাকে। স্বামীর সম্মান ও গুরুত্ব বৃদ্ধি করে।
মেটে সিঁদুর সাধারণত বিহার রাজ্যে ব্যবহার করা হয়। মনে করা হয়, সবচেয়ে বিশুদ্ধ সিঁদুর বলতে এই ধরনের সিঁদুরকেই বলা হয়। এমন সিঁদুর বিশেষভাবে ছটপুজোর সময় পুজোয় নিবেদনের ব্যবহৃত হয়।