‘ধৃতরাষ্ট্রের মতো মমতাও পুত্র স্নেহে অন্ধ ছিলেন…’
“তোর (Suvendu Adhikari) কি মনে হয়ে, তুই ধাপে ধাপে উঠেছিস, আর আমরা খাপে খাপে উঠেছি। আরে আমরাও ধাপে ধাপেই উঠেছি।”
পরনে কালো হাইনেক ইনারের ওপরে টকটকে লাল রঙের টি-শার্ট। সঙ্গে ব্রাউন ট্রাউজার। চোখে চশমা পরে রুপাোলি পর্দার বাহাকে নিয়ে মঞ্চ কাঁপালেন মদন মিত্র। সিনেমার কায়দায় একের পর এক সংলাপে কার্যত বিঁধলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। বাদ গেল না অধিকারী পরিবারও। মাঝে টেনে আনলেন দিলীপ ঘোষকেও (Dilip Ghosh)।
আরও পড়ুন: ‘দলে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না,’ আরও এক নেতার তৃণমূল ত্যাগ
এ দিনর সভায় নিজের বক্তব্যের শুরুতেই রসিকতা করে মদন মিত্রকে বলতে শোনা যায়, “সায়নী ঘোষ বলেছে আমি নাকি বাংলার ক্রাশ। জেনে রাখুন, বাংলার ক্রাশ হতে জন্মাইনি। বিজেপির ত্রাস হতে এসেছি।”
এরপরই কোনও বিলম্ব না করে, কাঁথিতে দাঁড়িয়ে মদন মিত্র সরাসরি নিশানা করেন অধিকারী পরিবারকে। পিছাবনীর জনসভায় তিনি বলেন, “কাঁথির মাটিতে দাঁড়িয়ে গদ্দারদের বলে যাচ্ছি, যদি মায়ের লাল হয়ে থাকিস রুখে দাঁড়া। কী বলেছিস, দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) নয় সিবিআই? আমিও বলে যাচ্ছি তোর দুয়ারে তৃণমূল।” আরও একধাপ এগিয়ে শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে মদন মিত্র বলেন, “ধৃতরাষ্ট্র যেমন পুত্র স্নেহে অন্ধ ছিল মমতাও (Mamata Banerjee) অন্ধ বিশ্বাসে রাজ্যপাঠ ছেড়ে দিয়েছিল। তোমরা ফ্যামিলি মিলে ধাপে ধাপে ওঠার বদলে ছুরি মেরেছ। বেইমানি করেছ। শুনে রাখ, পাপ বাপকেও ছাড়ে না।”
আরও পড়ুন: তৃণমূলের হয়ে ব্যাটে মনোজ, বিজেপির বোলার অশোক দিন্দা
দল বদলের আগে একাদিক সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কলকাতার নেতাদের নিশানা করে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “প্যারাশুটেও নামিনি, লিফটেও চড়েনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি।” এ দিন তার পাল্টা জবাব দিয়ে মদন মিত্র বলেন, “তোর (শুভেন্দু অধিকারী) কি মনে হয়ে, তুই ধাপে ধাপে উঠেছিস, আর আমরা খাপে খাপে উঠেছি। আরে আমরাও ধাপে ধাপেই উঠেছি।” প্রসঙ্গ অনুযায়ী ২০০৪ সালে তৃণমূলের ‘সর্বহারা’ সময়ের কথাও টেনে আনেন মদন মিত্র। তিনি বলেন, “তুই তো নৈবেদ্যর নাড়ু। ২০০৪ সাল, পঞ্চায়েত নেই। পৌরসভা নেই। ৫৪৩-এ একটা এমপি। সবাই টিটকিরি করে বলছে একটা সাংসদ দিয়ে কী করবে তৃণমূল? আমরা তখন একটা কথাই বলেছি, কংশ বধের জন্য একটাই একটা কৃষ্ণ হলই হবে। ৩৪ বছর এখানে যখনই এসেছি গুলি খেয়েছি। বেরিয়ে যাওয়ার সময় বোমা মেরেছে। আমি ছিলাম তখন। কোথায় ছিলিস তুই।”
আরও পড়ুন: ‘ঘরের বউকে কয়লা চোর বলছে…বিজেপিতে মেয়েদের সুরক্ষা নেই’
এই সভামঞ্চ থেকেই দিলীপ ঘোষের নাম করে মদন মিত্রকে বলতে শোনা যায়, “লক্ষ্মী ছাড়া নারায়ণ হয়? দিলীপ ঘোষকে বললাম শ্রীরাম না বলে সীতারাম বল। উত্তর দিল, সীতারাম বলব না। সীতার আধার কার্ড ছিল না, এনআরসি-তে নাম বাদ পড়েছে।”
এরপরই দলের প্রতি নিজের আনুগত্য ব্যাখ্যায় মমতা মন্ত্রিসভার প্রথম ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, “মরে গেলে গান স্যালুট চাই না। শুধু বুকের ওপর একটা জোড়াফুলের পতাকা দিয়ে দেবেন, আর একটা লাইন লিখে দেবেন, লাশটা ইমানদারের গদ্দারের নয়।”
পিছাবনীতে দাঁড়িয়ে শপথ নিয়ে মদন মিত্র এও বলেন, “২৩ মাস জেলে। অভিযোগ কী? প্রভাবশালী। প্রভাব তো আছেই, প্রয়োজন হলে বাহুবলি টু দেখিয়ে দেব।বিজেপি দুধ মাঙ্গো তো ক্ষীর দেঙ্গে। অধিকারী পরিবার কাঁথি মাঙ্গো তো চির দেঙ্গে।”