দক্ষিণেশ্বর মন্দির গড়তে সেই সময় কত টাকা খরচ হয়েছিল, জানেন?

জমিটি দেখতে কচ্ছপের পিঠের মত তাই তন্ত্রমতে স্থানটি শক্তি উপাসনার জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। ১৮৪৭ সালে এই বিরাট মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

দক্ষিণেশ্বর মন্দির গড়তে সেই সময় কত টাকা খরচ হয়েছিল, জানেন?
দক্ষিণেশ্বর মন্দির গড়তে সেই সময় কত টাকা খরচ হয়েছিল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 29, 2021 | 8:29 AM

শ্রীরামকৃষ্ণ-রাণী রাসমনি খ্যাত দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের খ্যাতি এখন বিশ্বজোড়া। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা তো বটেই, কলকাতায় এলে দেশের সেলেব্রিটি, রাজনীতিবিদরাও এই কালী মন্দিরে পুজো দিয়ে যান। হিন্দুদের কাছে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মস্থান। ১৮৫৫ সালের ৩১ মে ‘স্নানযাত্রার দিন’ হুগলী নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত দক্ষিণেশ্বর নামক জায়গায় অবস্থিত এই মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণিদেবী। এই মন্দিরে দেবী কালীকে “ভবতারিণী” নামে পূজা করা হয়।

কথিত আছে, রানি রাসমণি দেবী কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।১৮৪৭ সালে কলকাতার জানবাজারের রানি রাসমণিদেবী অন্নপূর্ণার পুজো দেবেন বলে কাশীতে তীর্থযাত্রার আয়োজন করেন। ২৪টি নৌকা আত্মীয়স্বজন, দাসদাসী সবকিছু প্রস্তুত। যাত্রার ঠিক আগের দিন রাতে রানি দেবী কালীর স্বপ্নাদেশ পান যে তার কাশী যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গঙ্গাতীরেই একটি মন্দিরে কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পূজা করলে দেবী সেই মূর্তিতে আবির্ভূত হয়েই পূজা গ্রহণ করবেন। মন্দির প্রতিষ্ঠাকালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায় রানিকে প্রভূত সাহায্য করেছিলেন। রামকুমারই ছিলেন মন্দিরের প্রথম প্রধান পুরোহিত। ১৮৫৭-৫৮ সালে কিশোর রামকৃষ্ণ পরমহংস এই মন্দিরের পূজার ভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি এই মন্দিরকেই তার সাধনক্ষেত্ররূপে বেছে নেন।

দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ২০ একরের প্লটটি জন হেস্টিং নামে এক ইংরেজের কাছ থেকে কেনেন রানি। স্থানীয়রা এই জমিকে ‘সাহেবান বাগিচা’ বলতেন। এর একটি অংশ ছিল মুসলমানদের কবরখানা। জমিটি দেখতে কচ্ছপের পিঠের মত তাই তন্ত্রমতে স্থানটি শক্তি উপাসনার জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। ১৮৪৭ সালে এই বিরাট মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ হয় ১৮৫৫ সালে। খরচ হয়েছিল ৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, যার মধ্যে শুধু উদ্বোধনের দিনই খরচ হয়েছিল ২ লক্ষ টাকা। ১০০ ফুটেরও বেশি উঁচু এই নবরত্ন মন্দিরের গর্ভগৃহে সহস্র পাপড়ির রৌপ্য-পদ্মের উপর শায়িত শিবের বুকে দেবী কালী দাঁড়িয়ে। একটি পাথর থেকেই তৈরি হয়েছে এই কালীমূর্তি।

কথামৃত রচয়িতা মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত তাঁর ফুটনোটে বলেছেন — ১৮৫৮ সালে রানি রাসমণির বরাদ্দের তালিকা অনুযায়ী ঠাকুর ওরফে রামকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় মাইনে পাচ্ছেন মাসিক পাঁচ টাকা। (পরে তা হয় সাত টাকা।) তাঁর ভাগ্নে ‘পরিচারক’ হৃদয় মুখার্জির বেতন সাড়ে তিন টাকা। এঁর বাড়তি দায়িত্ব ছিল ফুল তোলার। এ ছাড়া বরাদ্দ তিন জোড়া কাপড়, যার মূল্য সাড়ে চার টাকা। সেই সঙ্গে প্রতিদিনের খোরাকি হিসেবে সিদ্ধ চাল, ডাল, তামাক, কাঠ।

আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: বয়স অনুসারে কুমারী পুজোর কন্যাদের রয়েছে অনেক নাম!

তথ্য সৌজন্যে উইকিপিডিয়া