School Dropout: শিক্ষার হতশ্রী চেহারায় উত্তর প্রদেশকেও হার মানাল বাংলা! বলছে কেন্দ্রের রিপোর্ট

School Dropout: বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যদি ১০০ জন পড়ুয়া নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উঠছে। তাহলে শিক্ষায় থাকছে ৮৮ জন। ১২ জন পড়ুয়া শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ছিটকে যাচ্ছে। তাহলে তারা যাচ্ছে কোথায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  যারা স্কুল ছাড়ছে, সকলেই কাজের তাগিদে শিশু শ্রমিক হয়ে যাচ্ছে। কেউ বা পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে।

School Dropout:  শিক্ষার হতশ্রী চেহারায় উত্তর প্রদেশকেও হার মানাল বাংলা! বলছে কেন্দ্রের রিপোর্ট
বেড়েই চলেছে উদ্বেগImage Credit source: Getty Images
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 06, 2025 | 1:01 PM

কলকাতা: কেন্দ্রের রিপোর্টে হতশ্রী শিক্ষার ছবি এই বাংলার। নবম দশম শ্রেণিতে এক লাফে ড্রপ আউটের সংখ্যা বেড়ে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলার থেকে কম ড্রপ আউট উত্তর প্রদেশ, রাজস্থানেও।  রাজ্যে ৬ হাজারেরও বেশি স্কুল চলছে, মাত্র এক জন শিক্ষকের ভরসায়। বন্ধ হওয়ার মুখে সাড়ে হাজারেরও বেশি স্কুল। কারণ ওই স্কুলগুলোতে কোনও এনরোলমেন্ট নেই। এমনই ভয়াবহ রিপোর্ট কেন্দ্রের।

বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যদি ১০০ জন পড়ুয়া নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উঠছে। তাহলে শিক্ষায় থাকছে ৮৮ জন। ১২ জন পড়ুয়া শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ছিটকে যাচ্ছে। তাহলে তারা যাচ্ছে কোথায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  যারা স্কুল ছাড়ছে, সকলেই কাজের তাগিদে শিশু শ্রমিক হয়ে যাচ্ছে। কেউ বা পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে।

কিন্তু কেন এই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে দূরে চলে যাওয়ার প্রবণতা?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অষ্টম শ্রেণির পর্যন্ত পাশ-ফেল নেই। একজন পড়ুয়া যখনই শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে ঢোকে, ক্লাস এইট পর্যন্ত উত্তীর্ণ হয়ে চলে যাবে। নবম শ্রেণি থেকে উঠে যাচ্ছে মিড ডে  মিল। পড়াশোনার জন্য বাড়ি থেকেও একটা মোটামুটি অঙ্কের খরচ হয়।

করোনার পর সরকারি স্কুলগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছিল স্কুলছুটের সংখ্যা। যার প্রভাব পড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যাতেও। স্কুলছুট কমাতে শিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়ে এই সময় প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশ। প্রাথমিক ভাবে স্কুল মনে করছে, সপ্তম শ্রেণিতে স্কুলছুটের হার ২-৩ শতাংশ। নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত সেই সংখ্যা আরও বেড়ে যাচ্ছে। তা আর কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

কেন এই উদ্বেগজনক রিপোর্ট?

প্রধান শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি চন্দন মাইতি বলেন, “আমরা দেখেছি, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে ২.৫ মিলিয়ন ড্রপ আউট রয়েছে। আমাদের দেশে মধ্যপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে স্কুল বন্ধ হচ্ছে। আমাদের রাজ্য ব্যতিক্রমী ছিল, কিন্তু এবার তাতেও ঢুকে গিয়েছে। কেন্দ্র দেখছে ১২ শতাংশ ড্রপ আউট, কিন্তু আমরা দেখছি, তার থেকেও বেশি ড্রপ আউট হয়। মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার পরও পরীক্ষা দেয় না। যে জন্য তাদের উৎসাহিত করা হয়, সেই টাকাটা সঠিক লোককে দেওয়া হচ্ছে কিনা, সরকার-শিক্ষা দফতরের উচিত রিভিউ নেওয়া। শিক্ষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা। কোনও আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

নবম-দশম শ্রেণিতেই কেন ড্রপ আউটের শতাংশ বেশি?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নবম দশম শ্রেণিতে মিড ডে মিল দেওয়া হয় না, এটা ঠিক। কিন্তু ট্যাবের টাকা দেওয়া হয়, সবুজ সাথীর সাইকেল দেওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগ না হলে সমস্যা বাড়ছে স্কুলগুলোতে। যেখানে প্রতি বছর শিক্ষক নিয়োগ হত, সেটাই ফিরিয়ে আনতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্কুলে যদি শিক্ষকই না থাকে, তাহলে পড়ুয়ারা কেন যাবে?

শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার বলেন, “কোনও রিপোর্টেরই প্রয়োজন পড়ে না। গত এক দশক ধরে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের এনরোলমেন্ট ফিগারটা দেখে আর বাংলার ডেমোক্রেটিক পপুলেশনের ফিগারটা দেখলেই বোঝা যাবে। মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিকে এনরোলমেন্টের সংখ্যাটা কমছে।”

সম্প্রতি রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্ট দেখাচ্ছিল, তফসিলি জাতি ও জনজাতির ক্ষেত্রে স্কুলছুট বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তার উপরে মাধ্যমিক স্তরে রাজ্যের প্রায় সব স্কুলে কমবেশি এই চিত্র ফুটে ওঠায় চিন্তায় সরকার।