কৃষ্ণের জ্যৈষ্ঠভ্রাতা বলরাম পূর্বজন্মে রামচন্দ্রের ভাই লক্ষ্মণ ছিলেন!

বলরাম ছিলেন বিষ্ণুর শেষনাগের অবতার। তার প্রধান অস্ত্র ছিল হল্ বা লাঙল। তাই তাকে হলধরও বলা হয়। তখনকার দিনে যমুনা নদী বৃন্দাবন থেকে বেশ কিছুটা দূর দিয়ে প্রবাহিত হত।

কৃষ্ণের জ্যৈষ্ঠভ্রাতা বলরাম পূর্বজন্মে রামচন্দ্রের ভাই লক্ষ্মণ ছিলেন!
পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী বলরাম পূর্বজন্মে ছিলেন রামচন্দ্রের ভাই লক্ষণ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 18, 2021 | 11:05 AM

বলরাম হলেন হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের জ্যেষ্ঠভ্রাতা। তিনি বলদেব, বলভদ্র ও হলায়ুধ নামেও পরিচিত। বৈষ্ণবরা বলরামকে বিষ্ণুর অবতার জ্ঞানে পূজা করেন। ভাগবত পুরাণের তালিকাতেও তার নাম আছে। বৈষ্ণব ও অন্যান্য হিন্দুরা সবাই তাকে বিষ্ণুর শয্যারূপী শেষনাগের একটি রূপ বলে মনে করেন। দ্বাপর যুগের শেষে বলরামের জন্ম হয় রোহিণীর গর্ভে। রোহিণী হলেন শ্রীকৃষ্ণের পিতা বসুদেবের আর এক পত্নী ও নন্দের ভগিনী। শ্রীহরি বিষ্ণুর আদিশেষ নাগের অবতার হলেন বলরাম।

অত্যাচারী কংসের কারাগারে বন্দী বসুদেব ও দেবকীর সপ্তম গর্ভে বলরাম আসেন, কিন্তু কংসের হাত থেকে সেই শিশুকে বাঁচানোর জন্য শ্রীহরির আদেশে দেবী যোগমায়া দেবকীর সপ্তম গর্ভের ভ্রূণ সেখান থেকে নন্দগৃহে রোহিণীর গর্ভে স্থাপিত করেন । ফলে দেবকীর সপ্তম গর্ভ মৃত সন্তান জন্ম দেয় এবং রোহিণীর গর্ভে বলরামের জন্ম হয় । বল মানে শক্তি । শক্তি ও আধ্যাত্মিকতার মিলন হয়েছে বলে তার নাম বলরাম রাখা হয় ।

কৃষ্ণের থেকে বলরামের চরিত্র ছোটবেলা থেকেই ভিন্ন। শান্ত প্রকৃতির বলরাম রেগে গেলে মারাত্মক রূপ ধারণ করতেন। কৃষ্ণ যেমন মিষ্টি কথা ও মুখের হাসিতে সবার মন জয় করে নিতেন, বলরামের প্রকৃতি তা নয়। তবে দুই ভাইয়ের সদ্ভাব মহাভারতের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গঠনগত দিক থেকেই দুই ভাই ভিন্ন প্রকৃতির। কৃষ্ণ যেমন কালো, বলরাম ফর্সা। কৃষ্ণের পছন্দ হলুদ বর্ণের কাপড়়, বলরামের পরনে সব সময় নীল বস্ত্র। বলরামের অস্ত্র এক বিশাল লাঙল। তিনি এ কারণে ‘হলধারী’ নামেও পরিচিত। অস্ত্রবিদ্যায় তিনি অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। ভীম এবং দুর্যোধন তাঁর কাছে গাদচালনা শিখেছিলেন।

অনেকের মতে, বলরাম ছিলেন বিষ্ণুর শেষনাগের অবতার। তার প্রধান অস্ত্র ছিল হল্ বা লাঙল। তাই তাকে হলধরও বলা হয়। তখনকার দিনে যমুনা নদী বৃন্দাবন থেকে বেশ কিছুটা দূর দিয়ে প্রবাহিত হত। ফলে চাষিদের চাষাবাদে বেশ পরিশ্রম করতে হত। বলরাম তার লাঙল দিয়ে মাটি খুঁড়ে যমুনাকে বৃন্দাবনের অনেকটা কাছে নিয়ে এসেছিলেন। এতে বৃন্দাবন বাসীদের চাষাবাদে আমুল পরিবর্তন আসে। তিনি গদাযুদ্ধে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। ভীম ও দুর্যোধন তার কাছে গদাযুদ্ধ শিখেছিলেন। কিছু পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী বলরাম পূর্বজন্মে ছিলেন রামচন্দ্রের ভাই লক্ষণ। তিনি দাদার কাছে আবদার করেছিলেন পরবর্তী কোনো জন্মে যেন তিনি তার বড়ো ভাই রূপে জন্মগ্রহণ করতে পারেন। সে অনুরোধ রক্ষা করার জন্যই শ্রী রামচন্দ্র কৃষ্ণ রূপে এবং লক্ষণ বলরাম রূপে জন্মগ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন: মহাভারতে অর্জুনের পুত্র নাকি রূপান্তরকামী ছিলেন! কতটা যুক্তিযুক্ত